বইমেলায় এবার আড্ডা বেশি, কেনাকাটা কম

প্রকাশিত: ৭:০০ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ১৬, ২০২২

বইমেলায় এবার আড্ডা বেশি, কেনাকাটা কম

 |√| মোহাম্মদ অলিদ সিদ্দিকী তালুকদার |√|

প্রাণের বইমেলা ২০২২-! পাঠক মেলা ধারাবাহিক মুক্ত আলোচনা পর্ব (( ২৬ / ছাব্বিশ -))

২০২০ সালের বইমেলা লেখক-প্রকাশকদের কেটেছে হতাশায়। পরের বছরও মহামারিতে টালমাটাল ছিল মেলা। এবারের মেলা যথাসময়ে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ফেব্রুয়ারির শুরুতে করোনার প্রকোপ বাড়ায় মেলা নিয়ে দেখা দেয় শঙ্কা। তবে ১৫ ফেব্রুয়ারি শুরুর দিন থেকেই জমে উঠতে শুরু করে বইমেলা। প্রায় পুরো সময়টা জুড়ে ছিল দর্শনার্থী, পাঠকদের ভিড়। প্রকাশকরা স্বপ্ন দেখতে থাকেন দুই বছরের লোকসান পুষিয়ে নেওয়ার। কিন্তু এবারের মেলায় ছিল আড্ডা বেশি, বিক্রি কম। প্রকাশক বিক্রয়কর্মীরা জানান, আগত দর্শনার্থীদের সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ বই কিনতে এসেছেন।

প্রান্তিক প্রকাশনীগুলো জানাচ্ছে তাদের ক্রেতার পরিমাণ ১০-১৫ শতাংশ। বেশিরভাগই আসছেন ঘুরতে, ছবি তুলতে, ভিডিও করতে। নামকরা প্রকাশনীগুলো অবশ্য বলছে, গত দুই বছরের তুলনায় ভালোই সাড়া পেয়েছেন তারা।

মেলার ২৯তম দিন মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) মেলায় ঘুরে দেখায় যায়, দর্শকদের অধিকাংশই লেকের পাড়ে বা খাবার স্টলগুলোতে বসে আড্ডায় মেতেছেন। কেউ কেউ দল বেঁধে ছবি তুলছেন।

জোনাকি প্রকাশের স্টল ম্যানেজার মোখলেসুর রহমান বলেন, প্রথমদিকে বিক্রি কিছুটা কম ছিল। মাঝামাঝিতে কিছুটা বাড়ে। শেষ দিকে বিক্রি নেই বললেই চলে। এবারের মেলাও পুরোপুরি জমেনি। কারও কারও হয়তো ভালো হয়েছে।’

সাহিত্য প্রকাশের বিক্রয়কর্মী রোথিন দাশ বলেন, ‘এবারের বইমেলায় বিক্রি ওভাবে হয়নি। যেমন লোক সমাগম, তার ১৫ শতাংশও কিনেছে বলে মনে হয় না।’

অনন্যা প্রকাশের স্টল ম্যানেজার ফারুক আহমেদ বলেন, ‘গত বছর করোনায় মেলাই করতে পারিনি। তবে এবারের মেলাটা ভালো হয়েছে। মোটামুটি ভালো সাড়া পেয়েছি। আমার মতে, ৩০ শতাংশ এসেছিলেন বই কিনতে।’

শিখা প্রকাশনীর রাজন আহমেদ বললেন, বইমেলায় সবাই বই কিনতে আসবে না এটাই স্বাভাবিক। তবে গত দুই বছরের তুলনায় অনেক ভালো হয়েছে বলা চলে। তাছাড়া দ্রব্যমূল্যের যে অবস্থা তাতে মানুষ যে বই কিনছে সেটাই অনেক বেশি।’

রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন, ‘মহাসমুদ্রের শত বত্সরের কল্লোল কেহ যদি এমন করিয়া বাঁধিয়া রাখিতে পারি যে, সে ঘুমাইয়া-পড়া শিশুটির মতো চুপ করিয়া থাকিত, তবে সেই নীরব মহাশব্দের সহিত এই লাইব্রেরির তুলনা হইত। এখানে ভাষা চুপ করিয়া আছে, প্রবাহ স্হির হইয়া আছে, মানবাত্মার অমর আলোক কালো অক্ষরের শৃঙ্খলে কাগজের কারাগারে বাঁধা পড়িয়া আছে। ইহারা সহসা যদি বিদ্রোহী হইয়া উঠে, নিস্তব্ধতা ভাঙিয়া ফেলে, অক্ষরের বেড়া দগ্ধ করিয়া একেবারে বাহির হইয়া আসে! হিমালয়ের মাথার উপরে কঠিন বরফের মধ্যে যেমন কত কত বন্যা বাঁধা আছে, তেমনি এই লাইব্রেরির মধ্যে মানব-হূদয়ের বন্যা কে বাঁধিয়া রাখিয়াছে!’

জীবনানন্দ দাশ বলেছিলেন, ‘সকলেই কবি নয়। কেউ কেউ কবি; কবি-কেননা তাদের হূদয়ে কল্পনার এবং কল্পনার ভেতরে চিন্তা ও অভিজ্ঞতার সারবত্তা রয়েছে এবং তাদের পশ্চাতে অনেক বিগত শতাব্দী ধরে এবং তাদের সঙ্গে সঙ্গে আধুনিক জগতের নব নব কাব্যবিকীরণ তাদের সাহাঘ্য করেছে।’

মানে বলতে চাইছি, শত বছরের মনীষার শ্রেষ্ঠ নিদর্শন ধরা আছে বইয়ে। কাজেই বই কিনব। বই পড়ব। বইমেলায় যাব। এতে সকল শুভাকাঙ্ক্ষী পাঠক দর্শক শ্রোতাদের নিকট আমার এই প্রত্যাশা আসুন আমরা সবাই মেলার শেষ পড়ন্ত বেলায় কমচেকম জনপ্রতি দুই/ তিনটি বই সংগ্রহ করে নেই । সেই উদাক্ত আহ্বান জানাচ্ছি ।


সম্পাদনায়:-: লেখক:- বাংলাদেশ জ্ঞান সৃজনশীল প্রকাশক |•| ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক:- বাংলা পোস্ট |•| __ও বিশেষ প্রতিবেদক দৈনিক নয়াদেশ |•|