১৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১০:৫৮ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২১, ২০২১
দরকার ছিল মাত্র ৩ রানের জয়। কিন্তু জয় আসলো ৮৪ রানের। পাপুয়া নিউ গিনিকে রীতিমতো উড়িয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে নাম লিখিয়েছে বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার আল আমেরাত স্টেডিয়ামে বি গ্রুপের বাছাই পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে পাপুয়া নিউ গিনিকে ৮৪ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। রানের দিক থেকে টি টোয়েন্টিতে এটাই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জয়ের রেকর্ড। আগেরটি ছিল ৭১ রানে, আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে।
টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ করে ৭ উইকেটে ১৮১ রান। জবাবে পাপুয়া নিউ গিনি বাংলাদেশের বোলারদের তোপে পড়ে ছিল দিশেহারা। দলটি সংগ্রহ করতে পারে ১৯.৩ ওভারে ৯৭ রান। টানা তিন হারে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিল পাপুয়া বাহিনী। অন্যদিকে প্রথম ম্যাচে হারলেও টানা দুই জয়ে বিশ^কাপের চূড়ান্ত পর্বে উঠে গেল মাহমুদউল্লাহ শিবির।
১৮২ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে শুরু থেকেই হাসফাস অবস্থা ছিল পাপুয়া নিউ গিনির। সাকিব, সাইফউদ্দিন, তাসকিনদের তোপে ধারাবাহিক উইকেট হারাতে থাকে দলটি। ২৯ রানেই সাত উইকেট হারায় পিএনজি। ম্যাচ তখনই যেন শেষ হয়ে যায়। শেষের দিকে কিপলিন দরিগা ও চাদ সোপরের ব্যাটে পঞ্চাশ পার করে পাপুয়া নিউ গিনি। এই দুজন ছাড়া দলটির কেউ স্পর্শ করতে পারেনি দ্ইু অঙ্কের রান। ৩৪ বলে ৪৬ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন দরিগা। তার ইনিংসে ছিল দুটি করে চার ও ছক্কার মার। ১২ বলে ১১ রান করেন চাদ সোপার।
৪ ওভারে ৯ রানে চারটি উইকেট নেন সাকিব আল হাসান। ব্যাট হাতে করেন ৪৬। সব মিলিয়ে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতেছেন তিনিই। সাইফউদ্দিন পান দুটি উইকেট। ৪ ওভারে ২০ রানে এক উইকেট পান মেহেদী হাসান। এমন দিনে মুস্তাফিজুর রহমান ছিলেন একটু উল্টো পথে। ৪ ওভারে তিনি দেন ৩৪ রান। পাননি উইকেটের দেখা। ৩.৩ ওভারে এক মেডেনে ১২ রানে দুটি উইকেট নেন তাসকিন আহমেদ।
টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারেই বিদায় নেন আগের ম্যাচে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক মোহাম্মদ নাঈম শেখ। ইনিংসের প্রথম বলেই হতে পারত ক্যাচ। কিন্তু হয়নি। ব্যাটের কানা ছুঁয়ে পড়ল উইকেটরক্ষকের একটু সামনে। পরের বলেই ক্যাচ গেল ফিল্ডারের হাতে। ম্যাচের দ্বিতীয় বলেই উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
কাবুয়া মোরেয়ার লেগ স্টাম্পের বাইরের হাফ ভলি অনায়াসেই হতে পারতো ছক্কা। বাঁহাতি ওপেনার নাঈমের ফ্লিক খুঁজে পেল ডিপ স্কয়ার লেগে থাকা সেসে বাসকে। বেশ কিছুটা দৌড়ে ঝাঁপিয়ে ক্যাচ মুঠোয় জমান তিনি। রানের খাতা খুলার আগেই সাজঘরে নাঈম।
আগের ম্যাচের তুলনায় এই ম্যাচে পাওয়ার প্লেতে ৩০ এর বেশি রান তুলতে পেরেছে বাংলাদেশ। যা টি টোয়েন্টি বিশ^কাপে প্রথমবারের মতো। ৬ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ১ উইকেটে ৪৫। যদিও পাওয়ার প্লেতে এসেছে দুই ছক্কা ও একটি চার। আশার কথা, ডট বল হয়েছে কম আগের তুলানায়।
দলীয় ৫০ রান যখন, তখন বিদায় নেন লিটন দাস। আগের তুলনায় এবার রানের দেখা পেয়ছেন তিনি। যদিও থিতু হতে পেরেছিলেন। কিন্তু ইনিংস বড় হয়নি। স্লগ সুইপে ছক্কার চেষ্টায় ফিরে যান এই ডান হাতি ওপেনার।
পাপুয়া অধিনায়ক আসাদ ভালার প্রথম বলটি ছিল অফ স্টাম্পের একটু বাইরে। শাফল করে স্লগ সুইপ করেন লিটন। ঠিক মতো টাইমিং করতে পারেননি তিনি। ২০ গজ দৌড়ে এসে চমৎকার স্লাইডিং ক্যাচ মুঠোয় জমান সেসে বাউ। ভাঙে ৪১ বল স্থায়ী ৫০ রানের জুটি। ২৩ বলে একটি করে ছক্কা ও চারে ২৯ রান করেন লিটন।
ক্রিজে সাকিবের সঙ্গে তখন যোগ দেন অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহীম। এবারো ব্যর্থ এই পকেট ডায়নামো। হাটলেন পিছন পথে। মন্থর শর্ট বল, লেগ সাইটে পাঠানো সম্ভব যে কোনো জায়গায়। হাতে সময় ছিল অঢেল। মুশফিকুর রহিম তুলে দিলেন ডিপ স্কয়ার লেগ ফিল্ডারের হাতে! দ্বিতীয় চেষ্টায় ক্যাচ মুঠোয় জমান হিরি হিরি। ৮ বলে ৫ রান সম্বল মুশফিকের। ১১ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর তখন ৩ উইকেটে ৭৭। ক্রিজে সাকিব আল হাসানের সঙ্গী অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ।
আগের ম্যাচের মতোই এবারও ফিফটির পথে হাটছিলেন সাকিব। কিন্তু অপূর্ণতা থেকে যায়। দেখা মেলেনি পঞ্চাশের। একটি ছক্কা হাকানোর পরই ধরা পড়লেন তিনি। লং অনে একটু এগিয়ে সামনের দিকে ঝাঁপিয়ে দুর্দান্ত ক্যাচ মুঠোয় জমান চার্লস আমিনি। ব্যক্তিগত ৪৬ রানে থামেন সাকিব। ৩৭ বলের ইনিংসে তিনি হাকাতে পারেননি কোন চার। তবে তার ইনিংসে ছিল তিনটি ছক্কার মার।
সাকিব না পারলেও পেরেছেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। সবাই যেখানে খেলেছেন ওযানডে কিংবা টেস্ট স্টাইলে তিনি ছিলেন সত্যিকারের টি টোয়েন্টি ফেরিওয়ালা। ভেতরের ক্ষোভ যেন তিনি ঝেড়ে ফেলেছেন ব্যাটে। খেলেছেন মনমুগ্ধকর ঝড়ো ইনিংস। বরাবর ৫০ রান করে তিনি ফেরেন সাজঘরে। বল খরচ করেছেন মাত্র ২৮টি। তিনটি করে সমান চার ও ছক্কা ছিল তার ইনিংসে। টি টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে মাহমুদউল্লাহর এটি ষষ্ঠ ফিফটি।
তার এই ইনিংসের সুবাদেই বলতে গেলে বড় স্কোর গড়তে পারে বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত রভুর বলে সোপারের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন টাইগার ক্যাপ্টেন। বাংলাদেশের স্কোর তখন ১৭.২ ওভারে ১৪৪ রান।
শেষের দিকে আফিফের ব্যাটে ছিল ছোট্ট ঝড়। ১৪ বলে তিনি করেন ২১ রান। তার ইনিংসে ছিল তিনটি চারের মার। তবে নুরুল হোসেন সোহান মারেন গোল্ডেন ডাক। শেষের দিকে সাইফউদ্দিন ছিলেন আরও মারমুখি। মাত্র ৬ বলে তিনি খেলেন ১৯ রানের মারকাটারি ইনিংস। হাকান একটি চার ও দুটি ছক্কা। ৩ বলে দুই রানে অপরাজিত থাকেন মেহেদী হাসান।
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
Office : Central Market (1st floor),
Bandar Bazar (Court Point),
Sylhet – 3100, Bangladesh.
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D