ধর্ষণের অভিযোগ করে জকিগঞ্জ থানায় স্কুল ছাত্রীর মামলা

প্রকাশিত: ১১:৩০ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ৯, ২০২১

ধর্ষণের অভিযোগ করে জকিগঞ্জ থানায় স্কুল ছাত্রীর মামলা

পাশবিক নির্যাতনের অভিযোগে জকিগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছেন দশম শ্রেণীর এক ছাত্রী। জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কাসেম মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, বুধবার রাতে ধর্ষিতা থানায় হাজির হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। এ বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানান ওসি।
ধর্ষিতার পরিবারের লোকজন জানান, গত সোমবার রাতে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে স্থানীয় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণিতে পড়–য়া ওই ছাত্রী ঘরের বাইরে বের হয়। এ সময় রারাই গ্রামের মৃত আকতার আলীর ছেলে সালমান আহমদ (১৮) সহযোগীদের সহায়তায় বাড়ি থেকে তাকে ধরে নিয়ে যায়। পরদিন সকালে অচেতন অবস্থায় সালমানের বাড়ির লোকজন মেয়েটিকে এনে দেন। এ ঘটনার পরপরই বিষয়টি গোপন রাখতে গ্রামের ইউপি সদস্যসহ কয়েকজন প্রভাবশালী চাপ সৃষ্টি করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তারা নির্যাতিতার পরিবারকে আইনের আশ্রয় নিতে বাঁধা দিয়ে ঘটনা ধামাচাপার চেষ্টা চালান। এ নিয়ে ঐ প্রভাবশালীরা একাধিকবার নির্যাতিতার পরিবারকে ডেকে নিয়ে বিচারের নামে উল্টো ঐ নির্যাতিতার বোনের জামাইকে মারধর ও হয়রানি করেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
নির্যাতিতার চাচাতো ভাই আব্দুস শহীদ জানান, ঘটনার পর সেনাপতিরচক গ্রামের কতিপয় ব্যক্তি ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে চান। প্রভাবশালীদের ভয়ে তাৎক্ষণিক তারা মুখ খুলেননি। কিন্তু মেয়েটির অধিক রক্তক্ষরণের কারণে পরে সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার (ওসিসি)-এ তাকে ভর্তি করা হয়। এতে প্রভাবশালীরা ক্ষেপে গিয়ে নির্যাতিতার বোনের জামাইকে স্থানীয় ওয়ার্ড সদস্যের বাড়িতে ডেকে নিয়ে মারধর করেন। ধর্ষকের পরিবার তাদের বিরুদ্ধে উল্টো মামলা দায়েরের হুমকি দেয় বলে জানান তিনি।
জকিগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সামসুল হক জানান, তিনি ঘটনা ধামাচাপা দিতে চাননি। মূলত ধর্ষণ এবং ধর্ষণকারীর বাড়ি ভাংচুরের ঘটনা নিষ্পত্তির প্রচেষ্টা হয়েছিল। মেয়েটি অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় তিনি তাকে আইনের আশ্রয় নেয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। আর বাড়ি ভাংচুরের বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে চেয়েছিলেন। এ নিয়ে তার বাড়িতে বৈঠক হয়েছে। কিন্তু, নির্যাতিতার পিতার স্থলে মাতা আসায় বিষয়টি শেষ হয়নি। ধর্ষিতার বাড়ির লোকজন সালমানের বাড়ি ভাংচুর করেছে বলে তিনি স্বীকার করেন।
বৈঠকে নির্যাতিতার পরিবারকে মারধর করা হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, নির্যাতিতাকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর বিষয় নিয়ে কথাকাটাকাটি হয়েছে মাত্র।
এ প্রসঙ্গে জকিগঞ্জ থানার ওসি জানান, নির্যাতনের পরিবারকে হয়রানির বিষয়টি তার জানা নেই। এমনকি থানায় ধর্ষকের পরিবার নির্যাতিতার পরিবারের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ দেয়ার বিষয়েও তিনি অবহিত হন। যারা ঘটনাটি ধামাচাপার চেষ্টা ও নির্যাতিতার পরিবারকে উল্টো হয়রানি করছে তাদের কাউকেও ছাড় দেয়া হবে না বলেও জানান ওসি।


সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট