নৌবাহিনী কর্মকর্তাকে মারধর : হাজী সেলিমের বাড়িতে র‍্যাবের অভিযান চলছে

প্রকাশিত: ৩:১৩ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৬, ২০২০

নৌবাহিনী কর্মকর্তাকে মারধর : হাজী সেলিমের বাড়িতে র‍্যাবের অভিযান চলছে

নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট মোঃ ওয়াসিফ আহমেদ খানকে মারধর ও হত্যার হুমকির ঘটনায় মামলা হওয়ার পর সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের একটি বাড়ি ঘেরাও করে অভিযান চালাচ্ছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। পুরান ঢাকার চকবাজারের ৩০ নম্বর দেবিদাস ঘাট লেনের ওই বাড়িতে দুপুরের পর অভিযান শুরু হয়।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেন, ‘সোয়ারি ঘাট এলাকায় হাজী সেলিমের একটি বাড়ি আছে, সেটা ঘেরাও করে র‌্যাব সদস্যরা অভিযান চালাচ্ছে।

চকবাজার থানার ওসি মওদুদ হাওলাদার বলেন, হাজী সেলিমের বাসায় র‌্যাব ও ডিবির যৌথ অভিযান চলছে। র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সরওয়ার আলম আসার পর তল্লাশি করা হবে। এরপর এরফান সেলিমকে গ্রেফতার করা হবে কিনা সিদ্ধান্ত হবে।

ঢাকায় নৌবাহিনীর এক কর্মকর্তাকে মারধরের অভিযোগে একজন ওয়ার্ড কাউন্সিলর-সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার পর র‍্যাব বলছে, অভিযুক্তদের ধরতে তারা ঢাকার একজন সংসদ সদস্যের বাড়ি ঘিরে রেখেছে।

রোববার রাতে রাজধানীর ধানমন্ডির কলাবাগান মোড়ে হাজী সেলিমের গাড়ি থেকে নেমে নৌবাহিনীর কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট মোঃ ওয়াসিফ আহমেদকে মারধর করা হয়। ঘটনার পর পর গাড়িটি ফেলে এর নম্বরপ্লেট ভেঙ্গে চলে যান হাজী সেলিমের ছেলে ও তার বডিগার্ডরা।

রাতে এ ঘটনায় জিডি হলেও আজ ভোরে হাজী সেলিমের ছেলেসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন ভুক্তভোগী ওই নৌবাহিনীর কর্মকর্তা। মামলায় হাজী সেলিমের ছেলে এরফান সেলিম (৩৭), তার বডিগার্ড মোহাম্মদ জাহিদ (৩৫), হাজি সেলিমের মদীনা গ্রুপের প্রটোকল অফিসার এবি সিদ্দিক দিপু (৪৫), গাড়িচালক মিজানুর রহমানসহ (৩০) অজ্ঞাতপরিচয়ের দু-তিনজনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, এরফানের গাড়ি ওয়াসিফকে ধাক্কা মারার পর তিনি সড়কের পাশে মোটরসাইকেলটি থামিয়ে গাড়ির সামনে দাঁড়ান এবং নিজের পরিচয় দেন। তখন গাড়ি থেকে আসামিরা একসাথে বলতে থাকেন, ‘তোর নৌবাহিনী/সেনাবাহিনী বের করতেছি, তোর লেফটেন্যান্ট/ক্যাপ্টেন বের করতেছি। তোকে এখনি মেরে ফেলব’ বলে কিল-ঘুষি মারেন এবং আমার স্ত্রীকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন।’

‘তারা আমাকে মারধর করে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে যায়। পরে আমার স্ত্রী, স্থানীয় জনতা এবং পাশে ডিউটিরত ধানমন্ডি থানার ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা আমাকে উদ্ধার করে আনোয়ার খান মডেল হাসপাতালে নিয়ে যায়।’

মামলায় মোট পাঁচটি ফৌজদারি অপরাধের ধারার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। অপরাধগুলো হলো- দণ্ডবিধি ১৪৩ অনুযায়ী বেআইনি সমাবেশের সদস্য হয়ে কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে অপরাধমূলকভাবে বল প্রয়োগ করা, ৩৪১ অনুযায়ী কোনো ব্যক্তকে অবৈধভাবে নিয়ন্ত্রণ করা, ৩৩২ ধারা অনুযায়ী সরকারি কর্মকর্তার কাজে বাধাদানের উদ্দেশ্যে আহত করা, ৩৫৩ ধারা অনুযায়ী সরকারি কর্মকর্তার ওপর বল প্রয়োগ করা এবং ৫০৬ ধারায় প্রাণনাশের হুমকি দেয়ার।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে এরইমধ্যে একটি ভিডিও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে যেখানে দেখা যাচ্ছে, এক ব্যক্তি তার উপর হওয়া হামলার বর্ণনা দিচ্ছেন।

তিনি বলছেন, তাকে বিনা কারণে একতরফাভাবে আঘাতের পর আঘাত করা হয়। এতে তার একটি দাঁতও ভেঙ্গে যায়। তার স্ত্রীর গায়েও হাত তোলা হয়েছে বলে ভিডিওতে তিনি দাবি করেন।


সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট