তিন দশকে কামরানের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন

প্রকাশিত: ৩:০২ অপরাহ্ণ, জুন ১৬, ২০২০

তিন দশকে কামরানের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন

সিলেট পাইলট স্কুলে ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন বদর উদ্দিন আহমদ কামরান। ছাত্র অবস্থায় ১৯৬৯- এর গণঅভ্যুত্থানে রাজপথ মাতিয়েছেন। এরপর সত্তরের নির্বাচনের সময় ছাত্র অবস্থায় মাঠ কাঁপিয়েছেন। এরপর আর রাজনীতি ছাড়েননি। বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে দীর্ঘ তিন দশক সিলেটের রাজনীতিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন বদর উদ্দিন আহমদ কামরান।

সিলেট আওয়ামী লীগের সঙ্গে উদ্দিন আহমদ কামরানের নাম যেন যুক্ত হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগের জন্য কাজ করে কর্মী থেকে প্রশংসিত হয়ে ক্রমে শীর্ষে পৌঁছান তিনি। ছাত্ররাজনীতি থেকে শহর, নগর থেকে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে পৌঁছেছেন।

সিলেট সিটি করপোরেশন গঠনের পর পৌর চেয়ারম্যান থেকে ভারপ্রাপ্ত মেয়র, এরপর নির্বাচিত মেয়র হিসেবে তাঁর নাম উঠে আসে।

১৯৮৯ সালে শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সিলেটের আওয়ামী রাজনীতির শীর্ষ নেতৃত্বে আসেন কামরান। ১৯৯২ সালে এবং ১৯৯৭ সালে পুনরায় সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০০২ সালে প্রথমবারের মত সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন তিনি। ২০০৫ এ সম্মেলনের মাধ্যমে এবং ২০১১ সালে গঠিত কমিটিতে মহানগর আওয়ামী লীগের পুনরায় সভাপতির দায়িত্ব পান।

গত বছরের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলনে সভাপতির পদ হারান কামরান। প্রায় তিন দশক কামরানবিহীন পথচলা শুরু হয় সিলেট আওয়ামী লীগের। তবে পরবর্তী কেন্দ্রীয় কমিটির সম্মেলনে নির্বাহী সদস্য করা হয় কামরানকে।

এদিকে, রাজনীতিতে যেমনটি দলের নেতাকর্মীর কাছে জনপ্রিয় ছিলেন কামরান, তেমনী জনপ্রতিনিধি হিসেবে সাধারণ মানুষের মনে ঠাঁই করে নিয়েছিলেন। ১৯৭২ সালে উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্র থাকা অবস্থায় সিলেট পৌরসভার সর্বকনিষ্ঠ কমিশনার হয়ে চমক দেখান জনতার কামরান। সেই থেকে সিলেট পৌরসভার অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে পড়েন তিনি।

আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। টানা ১৫ বছর ছিলেন পৌরসভার কমিশনার। মাঝপথে খানিকটা বিরতি ছিল প্রবাসে যাওয়ায়। সেবার নির্বাচন থেকে বিরত ছিলেন। প্রবাস থেকে ফিরে ১৯৯৫ সালে পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

২০০২ সালে দু’টি পাতার একটি কুঁড়ির দেশ সিলেট সিটি করপোরেশনে উন্নীত হলে তিনি হন ভারপ্রাপ্ত মেয়র। ২০০৩ সালে প্রথম সিটি নির্বাচনে তিনি বিএনপির প্রার্থীকে হারিয়ে বিপুল ভোটে বিজয়ী হন। সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রথম মেয়র নির্বাচিত হয়ে ইতিহাসে নাম লেখান তিনি।

১/১১’র সময়ে দুইবার কারাবরণ করেন কামরান। ২০০৮ সালে কারাগার থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিপুল ভোটে মেয়র নির্বাচিত হন তিনি।

সর্বশেষ দুটি সিটি নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীর কাছে পরাজিত হন কামরান।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।


সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট