করোনার ছোবলে মৃত্যুর মিছিলে ইতালির পরেই বাংলাদেশ!

প্রকাশিত: ১:১৯ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ৫, ২০২০

করোনার ছোবলে মৃত্যুর মিছিলে ইতালির পরেই বাংলাদেশ!

দেশে দেশে ভয়াবহ আগ্রাসন চালানো করোনা ভাইরাস বা কোভিড-১৯ সবচেয়ে বেশি তাণ্ডব চালিয়েছে ইতালিতে। দেশটিতে এরই মধ্যে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের ছোবলে প্রায় ১৫ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশেও থাবা বসিয়েছে এই ভাইরাস। এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসের গ্রাসে বাংলাদেশে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। সংখ্যায় কম হলেও আশঙ্কার কথা হচ্ছে, মৃত্যুর হার বিবেচনায় ইতালির পরেই বাংলাদেশের অবস্থান!

বিশ্বজুড়ে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের খুঁটিনাটি নিয়ে নিয়মিত হালনাগাদ করে যাচ্ছে ‘ওয়ার্ল্ড ওর্মিটার’ নামে একটি ওয়েবসাইট। এই ওয়েবসাইটের সর্বশেষ পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, অন্যান্য অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশে করোনায় আক্রান্তের স্বল্প সংখ্যা হলেও (৭০ জন) মৃত্যুর হার কিন্তু চরম ভয়াবহ পর্যায়ে (১১.৪৩%)।

ভয়াবহের মাত্রা কেমন তা বুঝা যায়, যখন দেখে যায় বাংলাদেশের করোনায় মৃত্যুহার এখনও বিশ্বের মধ্যে একেবারে প্রথম সারিতে। মাঝখানে খানিক বিরতি দিয়ে বাংলাদেশ এবার দ্বিতীয় স্থান লাভ করেছে, সেই সঙ্গে মৃত্যুর শতকরা হার আরও বেড়েছে।

এ দিকে, শনিবার (৪ এপ্রিল) করোনা নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত অনলাইন প্রেস ব্রিফিংয় থেকে জানা গেছে, বাংলাদেশে করোনায় এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেছেন ৮ জন। আক্রান্ত হয়েছেন ৭০ জন। এর মানে দেশে প্রতি ১০০ জন করোনা আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে প্রায় সাড়ে ১১ জন মারা যাচ্ছেন। যা ভাইরাসটির উৎপত্তি স্থল চীনের চেয়েও অনেক বেশি। ওয়ার্ল্ড ওর্মিটার বলছে, চীনে করোনায় মৃত্যুর হার ৪.০৪%। বাংলাদেশের সামনে আছে কেবল মৃত্যুপুরী বনে যাওয়া ইতালি (১২.২৫%), যদিও পার্থক্য খুবই সামান্য। আরেক মৃত্যুপুরী স্পেনের হারও বাংলাদেশের চেয়ে অনেক কম (৯.৩৯%)। করোনার নতুন আবাস আমেরিকায় অনেকে আক্রান্ত হলেও মৃত্যুহার খুবই কম (২.৬৭%)।

এশিয়ার দুই দেশ দক্ষিণ কোরিয়া এবং মালয়েশিয়াতেও মৃত্যুহার যৎসামান্য, যথাক্রমে ১.৭৪ % ও ১.৫৯%। প্রতিবেশী ভারতে (২.৭৯%) তাদের থেকে কিছুটা বেশি হলেও পাকিস্তানে (১.৪৮%) তুলনামূলকভাবে অনেক কম। অন্যদিকে দক্ষিণ এশিয়ার আরেক দেশ শ্রীলঙ্কায় মৃত্যুহার ৩.১৪%।

সুতরাং বলাই, যায় বাংলাদেশে করোনায় আক্রান্তদের মিছিল দিন দিন যেমন বাড়ছে, তেমনি মৃত্যুহারও পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে। এ জন্য নিজের এবং নিজ পরিবারের কথা চিন্তা করে সবাইকে সচেতন হতে হবে। জনসমাগম এবং শারীরিক দূরত্ব যথাসম্ভব বজায় রাখতে হবে। পাশাপাশি সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং জীবাণুমুক্ত থাকতে চেষ্টা করতে হবে।