২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৫:৪৫ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১২, ২০১৯
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন সর্বসম্মতিক্রমে খারিজ করে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চ। খালেদার জামিন প্রশ্নে বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে শুনানি শেষ হয়। পরে এজলাস ছেড়ে উঠে যান বিচারপতিরা। ৬ বিচারপতি মিলে ভেতরে ১৫ মিনিট পরামর্শ করার পর এই আদেশ দেন আপিল বিভাগ। এ সময় পিন পতন নীরবতা ছিল এজলাস কক্ষ।
বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন খারিজ করে দেন।
এদিকে এজলাস থেকে বেরিয়ে বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদের নেতা এড. কামরুল ইসলাম জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসের আইনজীবীরা অহেতুক সময় নষ্ট করছেন। তিনি এতিমের টাকা আত্মসাত করেছেন। সেই জন্য তিনি সাজা খাটছেন। বিএনপির আইনজীবীদের আমি একটি পরামর্শ দিতে চাই, তাহলো তাঁর আইনজীবীদের উচিত রাষ্ট্রপতির কাছে নিঃর্শত ক্ষমা চাওয়া।
তার এমন বক্তব্যের পর সাংবাদিকরা জানতে চান তাহলে কি তার আইনি সব প্রক্রিয়া শেষ। উত্তরে এড. কামরুল ইসলাম বলেন, না তা কেন হবে। আইন সুযোগ তো থাকছেই। তাকে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চেয়ে তিনি যদি ইচ্ছা করেন তাহলে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতেও পারে। এসময় সম্পূর্ণ রাষ্ট্রপতির এখতিয়ারের বিষয়।
অপরদিকে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা বলেন, এই মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন পাওয়ার আর কার্যত কোনো সুযোগ থাকল না। খালেদা জিয়া কেবল আপিলের রায় রিভিউ করতে পারবেন। আইনজীবীরা বলছেন, রিভিউয়ে আপিলের রায়ে কোনো পরিবর্তন আনার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। এদিন সকাল ১০টার দিকে খালেদা জিয়ার সর্বশেষ স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রতিবেদন দাখিলের মাধ্যমে শুরু হয় শুনানি কার্যক্রম। রেজিস্ট্রার জেনারেল আলী আকবর আদালতে এই প্রতিবেদন দাখিল করেন।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, খালেদা জিয়ার ব্লাড প্রেশার ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকলেও তিনি শারীরিকভাবে দুর্বল। খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড মনে করছে, খালেদা জিয়া রাজি না হওয়ার কারণেই তাকে উন্নত চিকিৎসা দেওয়া যায়নি।
শুনানিতে জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘খালেদা জিয়ার প্রপার চিকিৎসা হচ্ছে না। তার উন্নত চিকিৎসা দরকার। তিনি দিন দিন পঙ্গু হয়ে যাচ্ছেন। তার স্বাস্থ্য খারাপ হয়ে যাচ্ছে। ভালো মানুষ কারাগারে গিয়েই তিনি পঙ্গু হয়ে যাচ্ছেন। আর ছয় মাস গেলে তিনি লাশ হয়ে ফিরবেন।’
খালেদা জিয়ার এই আইনজীবী বলেন, মানবিক কারণে আমরা জামিনের আবেদন করেছি। আমরা তো আপনাদের কাছেই আসব। আপনারা সর্বোচ্চ আদালত। আপনাদের পরে আর কেউ নেই আল্লাহ ছাড়া। তাছাড়া নারী, বয়স্ক, অসুস্থ— এসব বিবেচনায় জামিনের বিষয়ে আপনাদের সিদ্ধান্ত রয়েছে। এসব বিষয় বিবেচনা করে আপনারা জামিন দেবেন। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো দরকার। তার উন্নত চিকিৎসা রাষ্ট্রেরও দায়িত্ব। তিনি জামিন পেলে তো পালিয়ে যাবেন না।
গত বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার রায় ঘোষণা করেন পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক ড. মো. আকতারুজ্জামান। রায়ে খালেদা জিয়া ছাড়া অপর তিন আসামিকেও সাত বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। প্রত্যেককে ১০ লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। এই রায়ের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়া আপিল করলে ৩০ এপ্রিল তা শুনানির জন্য গ্রহণ করে অর্থদণ্ড স্থগিত করেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি খালেদা জিয়ার আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে বিচারিক আদালতের রায়ের নথি দুই মাসের মধ্যে হাইকোর্টে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
গত ৩১ জুলাই জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন খারিজ করে দেন বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ। এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিলে আবেদন করেন খালেদা জিয়া। গত ৫ ডিসেম্বর খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের আপিলের রায় ঘোষণার কথা ছিল। তবে এর আগে আদালত খালেদা জিয়ার সর্বশেষ স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রতিবেদন চাইলে তা ওই তারিখের আগে দাখিল করতে পারেনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) কর্তৃপক্ষ। ফলে আদালত জামিন বিষয়ে আদেশ একসপ্তাহ পিছিয়ে দিতে চাইলে আপিল বিভাগে ব্যাপক হট্টগোল করেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা। হট্টগোলের কারণে বন্ধ ছিল বিচার কাজ। এ ঘটনাকে বিচার বিভাগের ইতিহাসে নজিরবিহীন বলে উল্লেখ করেছেন স্বয়ং প্রধান বিচারপতি।
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
Office : Central Market (1st floor),
Bandar Bazar (Court Point),
Sylhet – 3100, Bangladesh.
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D