২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১২:৪১ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ১০, ২০১৯
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মেডিকেল রিপোর্ট প্রস্তুত হলেও সেদিন তা আদালতে দাখিল করেননি অ্যাটর্নি জেনারেল। এই সমাবেশ ও মানববন্ধন বিচার বিভাগের বিরুদ্ধে নয়। এটা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে। আমরা ন্যায়বিচার চাই। গতকাল সোমবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের সামনে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় ফোরামের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন একথা বলেন। এছাড়া বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যগত মেডিকেল বোর্ডের রিপোর্ট নিয়ে সরকার ষড়যন্ত্র করছে বলেও অভিযোগ তোলেন বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান মাহবুব হোসেন।
তিনি বলেন, আজকের এই সমাবেশ বিচার বিভাগের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সভা না। আমাদের প্রতিবাদ বর্তমান বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেলের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ন্যায় বিচার না পেলে আইনজীবীরা রাজপথে নামবে। বিচার বিভাগ থেকে আমাদের যে বিচার পাওয়ার কথা ছিল তা অ্যাটর্নি জেনারেলের কারসাজিতে পাচ্ছি না। সর্বোচ্চ আদালত মেডিকেল রিপোর্ট চেয়েছে। যথাসময়ে সেই রিপোর্টও এসেছে। কিন্তু অ্যাটর্নি জেনারেল অত্যন্ত জঘন্যভাবে আদালতে সেটা উপস্থাপন না করে বলেছেন রিপোর্ট আসে নাই। আমি মনে করি, তিনি সর্বোচ্চ আদালতের প্রতি অবমাননা করেছেন।
খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, আমরা এখনও বিশ্বাস করি, আমাদের বিচার বিভাগ বিশেষ করে সুপ্রিমকোর্ট ন্যায় বিচার করবেন, আইনের শাসন কায়েম থাকবে। সেজন্যই আজকের এই সমাবেশ।
তিনি বলেন, এই সমাবেশ আদালতের ওপর চাপ সৃষ্টির কোনো সমাবেশ না। এই সমাবেশ খালেদা জিয়ার মুক্তির সমাবেশও না। আমরা চাই ন্যায় বিচার। এ সময় তিনি পাকিস্তানের উদাহরণ দিয়ে বলেন, আমরা আশ পাশের দেশের দিকে তাকাই, তখন দেখি সাজাপ্রাপ্ত অবস্থায়ও নওয়াজ শরীফকে হেলিকপ্টরে করে বিদেশে পাঠানো হয়েছে। লালু প্রসাদকেও সুপ্রিমকোর্ট থেকে জামিন দেয়া হয়েছে। সেখানে যারা আইন উপদেষ্টা ছিলেন তারা বিচার বিভাগকে বিভ্রান্ত করেন নাই। আমি এখনও মনে করি আমাদের অ্যাটর্নি জেনারেল সর্বোচ্চ আদালতকে বিভ্রান্ত করেছেন। সেদিন যদি তিনি সঠিক ব্যবস্থা নিতেন তাহলে আজকের এই অবস্থার সৃষ্টি হতো না। বাংলাদেশের সর্বস্তরে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করার জন্য আইনজীবী সমাজ অতীতেও ছিল, আজও সেই অবস্থানে আছে।
এদিকে অ্যাজলাসে হট্টগোলের জেরে এবার সিসি ক্যামেরা বসছে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে। সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন জানিয়েছে, বেগম খালেদা জিয়ার জামিন শুনানি ঘিরে যে হট্টগোল হয়েছে, আবারও এমন ঘটনা ঠেকাতে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা বলেন, সরকার জোর করে কারাগারে বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দি করে রেখেছে।
তারা আরও বলেন, গত ৫ তারিখে আদালতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। এজন্য তারা সরকার দলীয় আইনজীবীদের আচরণকে দায়ী করেন। জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেনের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন ফোরামের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন, অ্যাডভোকেট গিয়াস উদ্দিন আহমদ, অ্যাডভোকেট আবেদ রাজা, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস কাজল প্রমুখ।
খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে হবিগঞ্জে আইনজীবীদের বিক্ষোভ : বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে হবিগঞ্জে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম হবিগঞ্জ জেলা শাখা। গতকাল সোমবার সকাল ১০টায় ডিসি অফিসের সামনে থেকে শুরু হয়ে জজকোর্ট এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। পরে বার লাইব্রেরির সামনে সমাবেশ করেন আইনজীবীরা। জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম হবিগঞ্জ জেলা আহ্বায়ক শামসু মিয়ার নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট আ. শহীদ, অ্যাডভোকেট মঞ্জুর উদ্দিন আহমদ শাহীন, অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম তালুকদার, কামাল উদ্দিন সেলিম, আবুল ফজল, অ্যাডভোকেট আইয়ুব আল আনসারী, অ্যাডভোকেট আব্দুল কাদের, অ্যাডভোকেট ফয়সল আহমেদ, অ্যাডভোকেট গুলজার আহমেদ, অ্যাডভোকেট মোজাম্মেল হক, অ্যাডভোকেট হেলাল উদ্দিন ও অ্যাডভোকেট মোদ্দত আলী। সমাবেশে তারা কারাবন্দি বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করেন।
এর আগে গত ৫ ডিসেম্বর বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রতিবেদন জমা না দেয়ায় তাঁর জামিন আবেদন পিছিয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ১২ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) স্বাস্থ্য পরীক্ষার সর্বশেষ অবস্থা নিয়ে প্রতিবেদন জমা দিতে আদেশ দেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের ছয় সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ। বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা ৭ ডিসেম্বর রবিবার স্বাস্থ্যগত প্রতিবেদন জমা এবং এদিনই জামিন শুনানির জন্য দিন ধার্য করার অনুরোধ করেন। তবে আদালত মেডিকেল বোর্ডের প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ১২ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেন। এদিন স্বাস্থ্যগত প্রতিবেদন জমা দেয়ার পর কারান্তরীণ বেগম খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের ওপরও শুনানি হবে।
মেডিকেল রিপোর্ট পরিবর্তন করতে চাচ্ছে সরকার : খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সবশেষ স্বাস্থ্য অবস্থা নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের (বিএসএমএমইউ) মেডিকেল বোর্ড যে রিপোর্ট তৈরি করেছে, তাতে পরিবর্তন করতে চাইছে সরকার এমন অভিযোগ করেছেন তাঁর আইনজীবীরা। এ কারণেই আদালতের আদেশ থাকা সত্ত্বেও মেডিকেল রিপোর্ট আদালতে উপস্থাপন করা হয়নি বলে মনে করছেন বিএনপির আইনজীবীরা। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন আইনজীবীরা। অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, মেডিকেল বোর্ডের রিপোর্ট তৈরি। সেই রিপোর্টে পরিবর্তন আনতে চাইছে সরকার। এ কারণেই গতকাল বেগম খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের শুনানিতে মেডিকেল বোর্ডের প্রতিবেদন দাখিল করেননি অ্যাটর্নি জেনারেল। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া জামিনের হকদার। তাঁর জামিন আটকাতে সরকারি ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এই ষড়যন্ত্র জনগণ মেনে নেবে না।
জয়নুল আবেদীন বলেন, আদালত গতকাল আমাদের আর্জি আমলে নেননি, অ্যাটর্নি জেনারেলের কথা শুনেছেন।
তিনি বলেন, আমরা বেগম খালেদা জিয়ার জামিনের বিষয়ে আশাবাদী। আদালত প্রাঙ্গণে বিশৃঙ্খলা নিয়ে খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, এর জন্য অ্যাটর্নি জেনারেল দায়ী। তার কথা শুনে আদালতের একতরফা সিদ্ধান্তে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল, আমরা সিনিয়র আইনজীবীরা তা সামাল না দিলে পরিস্থিতি কোন দিকে যেত তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে।
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
Office : Central Market (1st floor),
Bandar Bazar (Court Point),
Sylhet – 3100, Bangladesh.
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D