২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৩:১৬ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ৩০, ২০১৯
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবাদিকদের উদ্দেশে বলেছেন, দেশে এতোগুলো সংবাদপত্র ও টেলিভিশন চ্যানেল থাকলেও কেন তারা ক্যাসিনো ব্যবসার তথ্য সংগ্রহ করে একটি সংবাদও প্রকাশ করতে পারলো না। আমিই এসব খুঁজে বের করেছি। ক্যাসিনোকান্ডের বিষয়ে তিনি পাল্টা প্রশ্ন রেখে বলেন, সাংবাদিকরা এত খবর রাখেন অথচ ক্যাসিনো জানেন না কেন। এতদিন ধরে কোনো একটা গণমাধ্যম এমন নিউজ দিতে পারল না। এ জবাব কি সাংবাদিকরা জাতির কাছে দিতে পারবেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমারও প্রশ্ন এ রকম ঘটনা ঘটে যাচ্ছে কেউ জানে না। মানুষ যখন অপরাধের সঙ্গে জড়ায় হয়তো প্রথম কেউ জানে না। কিন্তু এক পর্যায়ে তাকে ধরা পড়তেই হবে। কেননা, কখন কে কোন্ অপরাধে ধরা পড়ে তার কোনো ঠিক নেই। আর অপরাধ করলে ধরা তাকে পড়তেই হবে। গতকাল মঙ্গলবার বিকালে গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ সব কথা বলেন। ন্যাম শীর্ষ সম্মেলনের অভিজ্ঞতা জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী এবারের ন্যাম সম্মেলনে তার অভিজ্ঞতার কথা সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন।
ভয় শব্দটি আমার ডিকশনারিতে নেই বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ভয় পেলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান হতো না। আমার সঙ্গে সব সময় বৈরী আচরণ করা হয়েছে। আমি উজানে নাও ঠেলে ঠেলে রাজনীতি করেছি, সরকারে এসেছি। তিনি বলেন, আমি যখন বাংলার মাটিতে পা রেখেছি তখন থেকেই আমি জানি যে, আমাকে রাজনৈতিকভাবে হত্যা করা হতে পারে। কারণ পঁচাত্তরে আমার বাবা-মা, ভাইকে হত্যা করেছে যারা- সেই ষড়যন্ত্রকারীরাই আমাকে রাজনৈতিকভাবে হত্যা করতে পারে।
ফেনীর সোনাগাজীতে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির হত্যার বিস্তারিত তথ্য বের করে আনায় সাংবাদিকদের ধন্যবাদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, মৃত্যুর আগে নুসরাত নিজের জবানবন্দি দিতে পারায় বিচারে সুবিধা হয়েছে। তিনি বলেন, নুসরাত হত্যার বিস্তারিত তথ্য বের করে আনতে সাংবাদিকদের যথেষ্ট ভূমিকা ছিল। নুসরাত জীবন দিয়ে গেছে। কিন্তু সে একটা সাহসী ভূমিকা রেখে গেছে। দুর্নীতির জন্য গ্রেফতারদের কোনো বিশেষ ট্রাইব্যুনাল আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা কারাগারে আছে, সেটা কি বিচার হয়নি?
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মৃত্যুর আগে নুসরাত নিজের জবানবন্দি দিতে পারায় বিচারে সুবিধা হয়েছে। তার জবানবন্দি ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া তার হত্যার বিচারে ব্যাপক জনমতও তৈরি হয়েছিল।
আইসিসি সাকিব আল-হাসানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে বেশি কিছু করার থাকবে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড তার পাশেই থাকবে। ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পাওয়ার পর তা গোপন করার অভিযোগে সাকিবের নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকিতে থাকার একটি খবর একটি দৈনিকে প্রকাশ করা হয়েছে। ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা আইসিসির প থেকে সাকিবের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা এখনও আসেনি।
সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চাওয়া হয়, সরকার এ বিষয়ে সাকিবের পাশে থাকবে কি না। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিসিবি যে সাকিবের পাশে থাকবে সে কথা ওই প্রতিবেদনেই এসেছে। আইসিসির নিয়ম তুলে ধরে তিনি বলেন, কোনো অনৈতিক প্রস্তাব দেয়া হলে খেলোয়াড়দের তা আইসিসিকে সঙ্গে সঙ্গে জানানোর কথা।
তিনি বলেন, ওর (সাকিব) সঙ্গে যখন যোগাযোগ করেছিল ও গুরুত্ব দেয়নি, আইসিসিকে জানায়নি। নিয়ম হল সঙ্গে সঙ্গে জানানো। এখন আইসিসি যদি ব্যবস্থা নেয়, খুব বেশি কিছু তো আমাদের করার থাকে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা ভুল সে করেছে এটা ঠিক, এটা সে বুঝতেও পেরেছে। বিসিবি বলেছে তার পাশে তারা থাকবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুললে ১৪ দলীয় জোটের ওই নেতাও বিতর্কিত হয়ে পড়েন।
তিনি বলেন, আমাদের জোটের নেতা প্রশ্ন তুলেছেন, তার মনে তো কষ্ট থাকতেই পারে। তিনি নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুললে তিনিও তো বিতর্কিত হয়ে যান। নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুললে তার জয়ও প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যায়।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, এ বিষয়ে জোটের মুখপাত্র নাসিম সাহেব আমার সঙ্গে কথা বলেছেন। তবে আমি বলেছি, এ বিষয়ে আমার কোনও বক্তব্য নেই। এই মন্তব্যের পর রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোড়ন শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, জনগণ যদি ভোট না দিত, আমাদের পে না থাকতো, তাহলে আমাদের সমর্থন থাকতো না।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ছাত্র আন্দোলন থেকে তিনি (রাশেদ খান মেনন) এমন আচরণ করছেন। স্বাধীনতার আগে বলেছেন ভোটের বাক্সে লাথি মারো বাংলাদেশ স্বাধীন করো, পরে ইন্দিরা-মুজিব আমলে স্থল সীমানা চুক্তির সময় বলেছেন বেরুবাড়ি বেচে দিলো, এমন কথা তিনি অনেক বলেছেন। এসবের পরিপ্রেেিত ১৪ দল বসেছে, তিনি দুঃখ প্রকাশ করেছেন। এমন বক্তব্য তিনি হয়তো আরও দেবেন, এতে আমার কোনও মন্তব্য নেই।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা পেঁয়াজ মজুত করতেছে তারা কত দিন ধরে তা রাখতে পারে, পেঁয়াজ কিন্তু পচেও যায়। বেশি রাখতে গিয়ে, সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে গিয়ে তাদের লোকসান হবে। লাভ হবে না। এটাও বাস্তবতা।
তিনি বলেন, পেঁয়াজের দরজা খুলে দেয়া হলো। সমস্যা থাকবে না, হয়তো সাময়িক। ইতিমধ্যে ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ চলে আসছে। ১০ হাজার টন মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই চলে আসবে। পেঁয়াজ কিন্তু অলরেডি আছে।
তিনি বলেন, আপনারা পত্রিকায়ই তো বের করেছেন অনেক জায়গায় পেঁয়াজ রয়ে গেছে। কিন্তু কেন তারা বাজারে ছাড়ছে না, সেটা বড় ব্যাপার। আর কিছু না পেয়ে পেঁয়াজ নিয়ে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পেঁয়াজ ছাড়াও কিন্তু রান্না হয়। আমি করি তো, আমাদের বাসায় করে। আমরা কিন্তু পেঁয়াজ ছাড়া রান্না করি। এই পেঁয়াজ নিয়ে এত অস্থির হয়ে পড়ার কী আছে, আমি তো জানি না। হয়তো বেশির জায়গায় একটু কম দিয়ে খেতে হতে পারে এই তো।
তিনি বলেন, বাইরে কিন্তু পেঁয়াজের দাম অনেক বেশি। এই সমস্যা থাকবে না। পেঁয়াজ চলে আসতেছে। কয়েক দিনের মধ্যেই ১০ হাজার টন চলে আসবে, তারপর ৫০ হাজার টন চলে আসবে।
উল্লেখ্য, গত ২৫ থেকে ২৬ অক্টোবর উন্নযনশীল দেশগুলোর জোট- ন্যামের শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেন শেখ হাসিনা। শুক্রবার সকালে বাকু কংগ্রেস সেন্টারে এ সম্মেলনের উদ্বোধন হয়। স্নায়ুযুদ্ধের প্রোপটে গড়ে ওঠা ৫৮ বছরের পুরনো এ জোটের অষ্টাদশ শীর্ষ সম্মেলনে ৪০টি দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানরা অংশ নেন। এ ছাড়া পর্যবেক ১৭টি দেশ ও ১০ আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরাও সম্মেলনে ছিলেন। তার সফরকালে বাংলাদেশ ও আজারবাইজানের মধ্যে একটি সাংস্কৃতিক বিনিময় চুক্তি স্বার হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আজারবাইজান প্রেসিডেন্ট ইলহাম এলিয়েভের উপস্থিতিতে চুক্তিটি স্বার হয়।
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
Office : Central Market (1st floor),
Bandar Bazar (Court Point),
Sylhet – 3100, Bangladesh.
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D