২৫শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ২:২৭ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৯
ক্বিন ব্রিজকে ঐতিহ্যের মর্যাদা দিয়ে যথাযথভাবে সংরক্ষণ ও জালালাবাদ পার্কের উঁচু প্রাচীর ভেঙে, দৃশ্যমান নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে সিলেট নগরে নাগরিকবন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকালে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও সুরমা রিভার ওয়াটারকিপারের যৌথ উদ্যোগে ক্বিন ব্রিজের মধ্যবর্তী স্থানে এ নাগরিকবন্ধনের আয়োজন করা হয়।
নাগরিক বন্ধনে বক্তারা সিলেট শহরের প্রবেশদ্বার হিসেবে ও ঐতিহাসিক নিদর্শন হিসেবে ক্বিন ব্রিজকে সংরক্ষন করার দাবী জানান। এছাড়াও ব্রীজ সংলগ্ন জালালাবাদ পার্কের উঁচু প্রাচীর ভেঙে পার্কে আগত মানুষজনের দৃশ্যমান নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান।
নাগরিকবন্ধনের শুরুতেই কর্মসুচির প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেট শাখার সাধারন সম্পাদক ও সুরমা রিভার ওয়াটারকিপার আব্দুল করিম কিম। তিনি বলেন, ১৯৮৪ সালে শাহজালাল সেতু উদ্বোধনের পূর্ব পর্যন্ত দেশের অন্যপ্রান্ত থেকে সিলেট নগরীতে প্রবেশের সমস্ত ধ্বকল ক্বীন ব্রিজকে একা সহ্য করতে হয়েছে। বিগত ৩৫ বছরে সুরমা নদীতে ভিন্ন আরো চারটি ব্রিজ তৈরি হয়েছে। এখন ব্রিজটিকে ঐতিহ্য হিসাবে যথাযথ প্রক্রিয়ায় সংরক্ষণ করা উচিৎ।
পদচারী সেতু হিসাবে এই ব্রিজের ব্যবহার শুরু করায় বাপার পক্ষ থেকে তিনি সিলেট সিটি করপোরেশনকে ধন্যবাদ জানান। একই সাথে তিনি ক্বিন ব্রিজের পুর্বপ্রান্তে সিলেট সিটি করপোরেশনের মালিকানাধীন জালালাবাদ পার্কের অপরিকল্পিত উঁচু বেষ্টনী নির্মান করায় সিটি করপোরেশনের সমালোচনা করেন।
তিনি বলেন, সিলেট শহরের একমাত্র পার্কটিকে উঁচু বেষ্টনী দিয়ে কারাগার বানিয়ে রাখা হয়েছে। যে কারনে ভ্রমনার্থিদের পার্কের ভেতরে প্রবেশ করতে অনিহা। ভেতরে অসামাজিক কার্যকলাপ হওয়ার অভিযোগ করে তিনি বলেন, অবিলম্বে জালালাবাদ পার্কের উঁচু প্রাচীর ভেঙে পার্কটিতে দৃশ্যমান নতুন বেষ্টনী দিতে হবে।
বাপার এই দাবির সাথে সংহতি প্রকাশ করে সভাপতির বক্তব্যে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এই ক্বিন ব্রিজ আমাদের সিলেটের ঐতিহ্য। তাই এই ব্রিজ রক্ষা করা সকলের দায়িত্ব। এখন পায়ে চলাচলের জন্য এই ব্রিজ উন্মোক্ত আছে। কিন্তু রাতে ব্রিজের নিচে মাদক সেবিদের আড্ডা থাকে। তাদের কারণে পথচারীরা ছিনতাইসহ বিভিন্ন সমস্যার সম্মুক্ষিন হতে পারেন। তাই কিছু বিষয়ে মেয়রসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে খেয়াল রাখতে হবে। ব্রিজ ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
জালালাবাদ পার্ক সম্পর্কে তিনি বলেন, এত সুন্দর একটি পার্ক অথচ এখানে কোনো মানুষ ভয়ে প্রবেশ করে না। এর মূল কারণ এই পার্কের উঁচু দেয়াল। এই দেয়ালের কারণে এই পার্ককে জেলের মত মনে হয়। তাই এই পার্কটিকে সচ্চল করতে পার্কের টাইম শিডিউল ঠিক করা ও উঁচু দেয়াল ভেঙে পার্কের সাথে সামঞ্জস্যপূণ্য বেস্টনি তৈরি করতে হবে।
এই দাবির সাথে সংহতি জানিয়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পলিটিকাল স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ও বাপার আজীবন সদস্য ড. জহিরুল হক শাকিল। তিনি বলেন, লন্ডনের টেমস নদীর বুকে টাওয়ার ব্রিজ, লন্ডন ব্রিজ, ওয়েস্টমিনিস্টার ব্রিজ, ওয়াটারলু ব্রিজ একদিকে যেমন বৃটিশদের ঐতিহ্যের সাক্ষী অপরদিকে এসব ব্রিজের সৌন্দর্য উপভোগ করতে সারা বিশ্ব থেকে প্রতিবছর কয়েক মিলিয়ন পর্যটক যান। ফলে এ ব্রিজগুলোকে কেন্দ্র করে পর্যটন শিল্প যেমন বিকশিত হয়েছে তেমনি এখানে স¤প্রসারিত হয়েছে ব্যবসা বানিজ্য। যেখানে বৃটিশ সরকার বিলিয়ন পাউন্ড আয় করে থাকে। এ অভিজ্ঞতা থেকে বলা যায় সিলেটের ক্বিন ব্রিজ শুধু সিলেটের ঐতিহ্যের সাক্ষী না এটা সিলেটের পর্যটন শিল্পের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ব্যবসা বানিজ্য স¤প্রসারনের অংশ।
তিনি বলেন, এখন গাড়ি না চলাচলের জন্য ব্রিজের সামনে স্টিলের গ্রিল দেওয়া হয়েছে। একটা সময় আসবে যখন গাড়ি আটকাতে গ্রিল লাগবে না এখানে। মানুষজন বুঝে যাবেন এটা পদচারী সেতু।
শাহ জালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তানভীর হাসান বলেন, ক্বিন ব্রিজ সিলেটের প্রাইড। এই ব্রীজকে হেরিটেজ হিসাবে যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা উচিৎ।
নাগরিকবন্ধনে আরও বক্তব্য দেন সাংবাদিক নেতা শাহ মুজিবুর রহমান জকন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সাধারন সম্পাদক এনামুল মুনির, সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেটের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শামসুল বাসিত শেরো, গণজাগরণ মঞ্চ-সিলেট এর মুখপাত্র দেবাশীষ দেবু, উদীচী মৌলভীবাজার জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাফিজ চৌধুরী ইমু, বাপা সিলেটের যুগ্ম সম্পাদক ছামির মাহমুদ, সেইভ হেরিটেজ এন্ড এনভায়রমেন্ট-এর সমন্বয়ক আব্দুল হাই আল হাদী, ব্রতচারী সংগঠক বিমান তালুকদা, পরিবহন নেতা আব্দুস সাত্তার মামুন, জেলা মোটর মালিক সমিতির সদস্য সোহেদুল হক দারা।
আরো উপস্থিত ছিলেন, শ্রমিক নেতা আব্দুল আহাদ, নূর ইসলাম, মুরাদ আহমদ, খোকন আহমদ, চান মিয়া, রফিক মিয়া, ফরহাদ হাসান প্রমুখ।
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
Office : Central Market (1st floor),
Bandar Bazar (Court Point),
Sylhet – 3100, Bangladesh.
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D