সুরমায় অবৈধ বালু উত্তোলনে হুমকিতে জনপদ

প্রকাশিত: ১০:২৯ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৯

সুরমায় অবৈধ বালু উত্তোলনে হুমকিতে জনপদ

সিলেটের কানাইঘাট ও গোলাপগঞ্জে সুরমা তীরে ভয়াবহ ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়েছে। নদী থেকে অবৈধ ও বে-আইনী বালু-মাটি উত্তোলন ও বিক্রির ফলে ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করেছে। ফলে হুমকির মূখে সুরমা তীর এলাকার হাটবাজার, স্কুল কলেজ মাদ্রাসা, মসজি-মন্দির-সহ সরকারী ও বেসরকারী বিভিন্ন স্থাপনা, সুরমাডাইক, বাড়িঘর ও কৃষি জমি। অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে বিভিন্ন সময় আবেদন-নিবেদন করা হলেও কার্যকরী কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় সুরমাপারের মানুষজন গভীর উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে দিনযাপন করছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সুরমা নদীতে ইজারাযোগ্য কয়েকটি বালুমহাল রয়েছে, যেগুলো প্রতিবছরই সরকারীভাবে ইজারা দেয়া হয়ে থাকে এবং ইজারাদাররা শর্তানুসারে ইজারাকৃত মহাল থেকে বালুমাটি উত্তোলন ও বিক্রি করে থাকেন। এতে করে নদীর নাব্যতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব আয় হয় কোটি-কোটি টাকা। আবার ইজারাযোগ্য মহালগুলোর বাইরে কিছু এলাকা আছে যেগুলো স্পর্শকাতর এবং সম্পূর্ণরূপে ইজারা অযোগ্য । এ সব এলাকা কখনো লীজ দেয়া হয় না বা খাস কালেকশনও করা হয় না। নদী তীর এলাকায় স্পর্শকাতর স্থাপনা বা এলাকা হওয়ায় এবং নদী তীরে ভাঙ্গনের আশংকায় এসব এলাকাকে সরকারীভাবে ইজারা অযোগ্য করে রাখা হয়েছে। কিন্তু কোন কোন ইজারাদার এসব স্পর্শকাতর এলাকা থেকে ইজারাবহির্ভুত ও বে-আইনীভাবে বালু-মাটি উত্তোলন করায় ভয়াবহ ভাঙ্গনের মূখে পড়েছে সুরমা নদীর তীর। ক্ষতিগ্রস্থ ও বিলীন হয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন স্থাপনা বাড়িঘর ও ক্ষেতের জামি।

সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার সুরমার তীরবর্তী এলাকায় রয়েছে দেশের বৃহত্তর গ্যাসফিল্ড, রয়েছে রানাপিং ও চকরিয়া এলাকায় নদীতীর সংলগ্ন স্কুল-মাদ্রসা ও সরকারী-বেসরকারী বিভিন্ন স্থাপনা। এছাড়াও কানাইঘাট উপজেলার রাজাগঞ্জ ইউনিয়নের ফতেহগঞ্জ ও লালারচক এলাকায় রয়েছে পাউবো’র ঝুকিপূর্ণ বাঁধ (ডাইক) ও হাট-বাজার। তাই নদীভাঙ্গন থেকে রক্ষায় এসব এলাকায় সুরমা নদী সরকারীভাবে ‘ইজারা অযোগ্য’ করে রাখা হয়েছে। কিন্তু সুরমা নদীর বালুমহালের একশ্রেণীর ইজারাদার তাদের ইজারাকৃত মহালের সীমানার বাইরে গিয়ে স্পর্শকাতর এ সব এলাকা থেকে অবাঁধে মাটি ও বালু উত্তোলন করছেন। ফলে হুমকীর মূখে পড়েছে ওই সব এলাকার বসতবাড়ি, ক্ষেতের জমি, বন্যানিয়ন্ত্রন বাঁধ-সহ সরকারী-বেসরকারী বিভিন্ন স্থাপনা ও প্রতিঠান।

অভিযোগ পাওয়া গেছে, স্থানীয় ভূ-প্রশাসনকে ম্যানেজ করে ইজারাদার জনৈক আফতাব মিয়া উল্লেখিত ‘ইজারা অযোগ্য’ এলাকায় ৮-১০টি হাইড্রলিক ড্রেজার দিয়ে নদীতীর ঘেষে অবাধে বালু ও মাটি উত্তোলন করে চলেছেন। এলাকাসীর অভিযোগ ড্রেজার আফতাব সুরমা তীর খাবলে খাবলে খাচ্ছেন, কিন্তু স্থানীয় ভূ-প্রশাসন তা দেখেও অজ্ঞাতকারণে না দেখার ভান করে চলেছে। এলাকাবাসীর পক্ষে এ মর্মে বুধবার ও বৃহস্পতিবার সিলেটের জেলা প্রশাসক বরাবরে পৃথক অভিযোগ দেয়া হয়েছে। অভিযোগের ছায়ালিপি বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়-সরকার ও প্রশাসনের বিভিন্ন দায়িত্বশীল মহলেও পেরণ করা হয়েছে। এলাকাবাসী তাদের ভিটবাড়ি কৃষিজমি, সরকারী ও বেসরকারী স্থাপনা রক্ষায় সুরমার স্পর্শকাতর এসব এরাকায় অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে সরকার ও প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

সিলেটের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখা এ সংক্রান্ত অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করেছে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট