ছাত্রদলের সংকট সমাধান, ঈদের পর কাউন্সিল

প্রকাশিত: ২:২৯ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৬, ২০১৯

ছাত্রদলের সংকট সমাধান, ঈদের পর কাউন্সিল

আসন্ন ছাত্রদলের কাউন্সিল ও নতুন নেতৃত্বের বিভিন্ন শর্ত সৃষ্ঠ নানা বিতর্কের সমাধান দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। দিনভর স্কাইপিতে নানা বিষয়ে আলোচনার পরে নতুন সমাধানে আসতে পেরেছে উভয় পক্ষ। এতে করে একদিকে ১২ বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হচ্ছে। অন্যদিকে ঈদের পরে নতুন করে কাউন্সিল করা হবে।

সোমবার (৫ আগস্ট) রা‌তে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিক্ষুব্ধ ছাত্রদল নেতাদের সঙ্গে বিএন‌পির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তা‌রেক রহমা‌নের দীর্ঘ বৈঠক হয়। লন্ডন থেকে স্কাইপির মাধ্যমে বৈঠ‌কে যুক্ত ছিলেন তা‌রেক রহমান। এই বৈঠ‌কের মধ্য দি‌‌য়েই মূলত ছাত্রদ‌লের সংকট সমাধান হ‌লো। বৈঠ‌কে তা‌রেক রহমা‌নের যে কোনো সিদ্ধান্ত মানার অঙ্গীকার করেছেন বিলুপ্ত কমিটির ছাত্রনেতারা।

ছাত্রদলের সমস্যা সমাধানে দায়িত্ব দেয়া হয়ে‌ছি‌লো বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এবং যুগ্ম মহাস‌চিব সৈয়দ মোয়া‌জ্জেম হো‌সেন আলাল‌কে। মূলত তারাই দফায় দফায় ক্ষুব্ধ নেতা‌দের স‌ঙ্গে কথা বলে সংকট সমাধা‌নের নেপ‌থ্যে কাজ ক‌রেন। দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেন সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, আমিরুল ইসলাম খান আলীম, হাবিবুর রশিদ হাবিব, তাইফুল ইসলাম টিপু, বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ, নিপুণ রায় চৌধুরী, আব্দুল মতিন। বিদ্রোহীদের মধ্যে ইখতিয়ার রহমান কবির ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি।

জানতে চাইলে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, সন্তান ভুল করলে তাৎক্ষণিক শাসনও বাবা করে, পরোক্ষণেই ক্ষমাও করেন বাবা। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে আলোচনা করার মাধ্য দিয়ে ছাত্রদলের সমস্যা সমাধান হয়ে গেছে।

ছাত্রদ‌লের সা‌বেক সহ সভাপ‌তি ইখতিয়ার রহমান কবির বলেন, আমাদের আর কোনো ক্ষোভ নেই। রাজনৈতিকভাবে ভাইয়া (তা‌রেক রহমান) আমাদের দায়িত্ব নিয়েছেন। তি‌নি আমাদের ছাত্রদলের কাউন্সিলে সহযোগিতা করতে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি যেভাবে চাইবেন সেভাবে আমরা সহযোগিতা করবো। তার নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করবো যা তাকে কথা দিয়েছি।

গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনু‌ষ্ঠিত বৈঠকে ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকুসহ ক্ষুব্ধ নেতা‌দের ম‌ধ্যে ইখতিয়ার রহমান কবির, মামুন বিল্লাহ, জহিরউদ্দিন তুহিন, জয়দেব জয়, বায়েজিদ আরেফিন, দবিরউদ্দিন তুষার, আজিজ পাটোয়ারিসহ আরো ৪০জনের মতো ছাত্রনেতা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক সূত্র জানায়, ছাত্রদলের সাবেক নেতারা তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে বক্তব্য দেন। তাদের দাবির যৌক্তিকতা তুলে ধরেন। বিগত দিনে ছাত্রদল নিয়ন্ত্রণকারী কথিত সিন্ডিকেট নিয়ে নিজেদের তিক্ততার কথাও তুলে ধরেন।

প্রায় ২০ জনের মতো নেতা তা‌দের বক্তব্যে স্বল্পকালীন সময়ের জন্য আহ্বায়ক কমিটি গঠনের দাবি করেন। তারা বলেন, দলের সিদ্ধান্ত মেনে ছাত্রদলের কাউন্সিল পর্যন্ত এ কমিটি চান। তাদের নেতৃত্বে কাউন্সিল শেষে এ সংগঠন থেকে আনুষ্ঠানিক বিদায় নেয়ার কথাও ব‌লেন ক্ষুব্ধ নেতারা।

এসময় তারেক রহমান ক্ষুব্ধ নেতা‌দের সবার কথা শুনেন। সবশেষে ছাত্রনেতাদের উদ্দেশ্যে বিএন‌পির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠনের জন্য দ্রুত কাউন্সিল করতে চান। এজন্য তোমাদের সহযোগিতা প্র‌য়োজন। জবাবে ছাত্র‌নেতারা কাউন্সিল করতে সর্বাত্বক সহযোগিতা করার কথা দেন। প‌রে ক্ষুব্ধ নেতা‌দের দা‌বির বিষ‌য়ে‌ দ্রুত সময়ের মধ্যে তার সিদ্ধান্ত জানানোর কথা বলেন। তবে যে সিদ্ধান্তই তিনি দিবেন তা মেনে নিয়ে রাজনীতি করার আহ্বান জানান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। এসময় সব ছাত্রনেতারা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যা‌নের যে কোনো সিদ্ধান্ত মেনে নেয়ার অঙ্গীকার করেন।

ছাত্রদলের সা‌বেক একজন সহ সভাপতি বলেন, বৈঠকে বিগত এক যুগের নির্যাতনের কথা তুলে ধরে ছাত্রনেতারা বলে‌ছেন, তারা এ দলের হয়ে কাজ করতে চান। এসময়ে তারা সাময়িক সময়ে নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির জন্য তারেক রহমানের কাছে ক্ষমা চান। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানও তাদের ক্ষমা করে দেয়ার কথা ব‌লেছেন বলেও জানান তিনি।