ঐক্যফ্রন্টের নেতা মন্টুকে কাদেরের ফোন, ৩১ অক্টোবর সংলাপের সম্ভাবনা

প্রকাশিত: ১১:২০ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৯, ২০১৮

ঐক্যফ্রন্টের নেতা মন্টুকে কাদেরের ফোন, ৩১ অক্টোবর সংলাপের সম্ভাবনা

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ও গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টুকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ফোন করেছেন।

সোমবার রাতে কাদের ঐক্যফ্রন্টের নেতা মোস্তফা মহসীন মন্টুকে ফোন করেন। এসময় তারা কৌশল বিনিময় ছাড়াও সংলাপের বিষয়ে আলাপ করেন। ফোনালাপকালে কাদের জানান, ৩১ অক্টোবর গণভবনে সংলাপের সম্ভাবনা রয়েছে।

এর ফলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সংলাপের আমন্ত্রণে সাড়া দিল আওয়ামী লীগ।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা মোস্তফা মহসিন মন্টু ফোনের বিষয়ে নিশ্চিত করে বলেন, ওবায়দুল কাদের ফোন করে সংলাপের জন্য গণভবনে নৈশভোজের দাওয়াত দিয়েছেন। কিন্তু সংলাপ কবে হবে, তা ঠিক হয়নি। মঙ্গলবার বা পরশু বুধবারে সংলাপ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে মঙ্গলবার সংলাপের সময়ের বিষয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে।

মন্টু জানান, তার কাছে ফোন করে ওবায়দুল কাদের জানতে চেয়েছেন, সংলাপে ঐক্যফ্রন্ট থেকে কতজন অংশ নিতে পারে। এ বিষয়ে মন্টু তাকে জানিয়েছেন, প্রায় ১৫ সদস্যের একটি দল অংশ নিতে পারে।

রবিবার আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী এবং সাধারণ সম্পাদক বরাবর দুটি চিঠি দেয় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। সে চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সোমবার বিকেলে সাংবাদিকদের জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংলাপে বসতে রাজি আছেন। আওয়ামী লীগ থেকে প্রধানমন্ত্রী নিজেই এ সংলাপে নেতৃত্বে দেবেন।

অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রীর সাড়া দেওয়াকে স্বাগত জানিয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।

এর আগে সোমবার বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপে বসতে আওয়ামী লীগ সম্মত।

ওবায়দুল কাদের বলেন, দলের পক্ষ থেকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে জানিয়ে দিচ্ছি যে, তাদের সংলাপের প্রস্তাবের সঙ্গে আমরা একমত।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সংলাপে নেতৃত্ব দেবেন। তিনি সংলাপের দরজা বন্ধ করে দিতে চান না।

কাদের আরো বলেন, খুব শিগগিরই সংলাপের সময় ও স্থান এবং অন্যান্য আনুসাঙ্গিক বিষয় তাদের জানিয়ে দেয়া হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসিম কুমার উকিল, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট আফজাল হোসেন ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য এ এম কামাল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

যদিও একদিন আগে রবিবার সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ড. কামাল হোসেন যুদ্ধাপরাধীদের সাথে হাত মিলিয়েছেন, এজন্য তাকে কঠিন শাস্তি পেতে হবে।

রবিবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

এর আগে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এই মুহূর্তে আইন পরিবর্তন করার কোনো সুযোগ নেই। এই মুহূর্তে পরিবর্তন করতে পারব না। পরবর্তী পার্লামেন্ট পর্যন্ত তাদের অপেক্ষা করতে হবে।

একটু ধৈর্য সহকারে তারা অপেক্ষা করবেন, এর মধ্যে কোন ন্যায় সঙ্গত বিষয় থাকে তাহলে পরবর্তীতে আলোচনার মাধ্যমে বিবেচনা করা হবে। ধর্মঘট প্রত্যাহার করুন, মানুষকে কষ্ট দিয়ে কোন লাভ নেই ।

এর আগে শুক্রবার জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সাত দফার এক দফাও মানা হবে না বলে জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, তাদের দাবি করা সব দফা ভিত্তিহীন ও অযৌক্তিক।

শুক্রবার রাজধানীর উত্তরা দিয়াবাড়িতে ‘মেট্রোরেল প্রকল্প’ পরিদর্শন শেষে একথা বলেন তিনি।

সম্প্রতি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ সাত দফা দাবি পেশ করেছে। এর জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, তাদের সব দাবি অযৌক্তিক। সাত দফার এক দফাও মানা হবে না। তাই নিরপেক্ষ সরকারের দাবি উঠতে পারে না। নির্বাচনের সময় সরকার তার এজেন্ডাগুলো বাস্তবায়ন করবে। বিশ্বের অন্য দেশে যেভাবে থাকে আমাদের দেশেও একইভাবে সরকার থাকবে।

বর্তমান নির্বাচন কমিশনই নিরপেক্ষ কমিশন এবং এই কমিশনে বিএনপির লোক আছে বলে জানান তিনি।