ক্ষমতায় গেলে কী করবে বিএনপি?

প্রকাশিত: ১:৫১ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১, ২০১৮

ক্ষমতায় গেলে কী করবে বিএনপি?

প্রধান বিরোধী দল বিএনপি আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে তাদের কিছু দাবি দাওয়া ও শর্ত তুলে ধরেছে। একই সাথে ক্ষমতায় গেলে তারা কীভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করবেন তার কিছু অঙ্গীকারও করেছেন দলের নেতারা।

ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে রবিবার আয়োজিত এক সমাবেশে দলের নেতারা বলেছেন, নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে, ভেঙে দিতে হবে বর্তমান সংসদ, এবং তাদের নেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্তি ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।

শেষ দুটো দাবিই ছিল নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তাদের সাত দফার দাবির প্রথম দুটো দাবি। প্রায় এক বছর পর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই সমাবেশ করলো বিএনপি। গত বছরের ওই সভায় দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া বক্তব্য রেখেছিলেন। তিনি এখন দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে আটক রয়েছেন।

রবিবারের সমাবেশেও খালেদা জিয়াকে প্রধান অতিথি করা হয়েছিল এবং তার জন্যে মঞ্চের উপর রাখা হয়েছিল একটি খালি চেয়ারও।

বিএনপির সাত দফা দাবির মধ্যে আরো ছিল নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, ভোটের দিন বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে সেনাবাহিনী মোতায়েন এবং ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএম চালু না করা।

নির্বাচনকে সামনে রেখে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ও বিরোধী বিএনপি মধ্যে উত্তেজনা যখন বাড়ছে এবং ছোট ছোট বিভিন্ন দল ও জোটকে সাথে নিয়ে সরকারবিরোধী বৃহত্তর জোট গঠনের প্রক্রিয়ার মধ্যেই বিএনপির এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হলো।

জাতীয় ঐক্য
সমাবেশে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, খালেদা জিয়া জেলে যাওয়ার আগে বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলার কথা বলে গিয়েছিলেন। এখন সরকারের পতন ঘটাতে সেরকমই একটি ঐক্য গঠনের প্রক্রিয়া চলছে।

‘বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বিএনপির দাবির সাথে একমত হয়ে তারাও এখন সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্য গড়ে তোলার কথা বলছেন,’ বলেন ইসলাম। সমাবেশে দলের যেসব নেতারা বক্তব্য দিয়েছেন তাতে মূল সূর ছিল আগামী নির্বাচন।

এর আগে বিভিন্ন সময়ে দলের নেতারা যেভাবে ‘নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না’, বা ‘প্রতিহত করা হবে’ বলে জোরালো বক্তব্য দিয়েছেন, রবিবারের সমাবেশে তাদের মুখ থেকে সেরকম কথা শোনা যায় নি।

তবে দলের মধ্যম সারির নেতারা এবিষয়ে সোচ্চার ছিলেন। তারা তাদের বক্তব্যে বলেছেন, তাদের নেত্রী খালেদা জিয়াকে জেলে রেখে পাঁচই জানুয়ারির মতো আরো একটি নির্বাচন তারা প্রতিহত করবেন।

তারা নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা যেমন বলেছেন, তেমনি নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ক্ষমতায় এলে তাদের সরকার কেমন হবে, কিভাবে তারা রাষ্ট্র পরিচালনা করবেন তার একটি রূপরেখাও তুলে ধরেছেন।

ক্ষমতায় গেলে
বিএনপির নেতারা বলেছেন, নির্বাচনে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় এলে তারা রাষ্ট্র পরিচালনায় ভারসাম্য তৈরি করবেন।

এবিষয়ে দলের পক্ষ থেকে ১২ দফা অঙ্গীকার করা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে: প্রতিহিংসার রাজনীতি পরিহার করা, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদকে প্রশ্রয় না দেওয়া, নির্বাচন কমিশনের মতো সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করা এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা।

বিএনপির এই ১২দফা দাবিকে অনেকটা নির্বাচনী ইশতেহারের মতোই মনে হয়েছে। রবিবারের এই সমাবেশ থেকে আগামী ৩রা ও ৪ঠা অক্টোবর বিক্ষোভের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।