‘নিহত’ হওয়ার তথ্যটি গুজব: পুলিশ পাহারায় ১০ শিক্ষার্থীর আ,লীগ কার্যালয় পরিদর্শন

প্রকাশিত: ৯:১৭ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৪, ২০১৮

‘নিহত’ হওয়ার তথ্যটি গুজব: পুলিশ পাহারায় ১০ শিক্ষার্থীর আ,লীগ কার্যালয় পরিদর্শন

পুলিশ পাহারায় ১০ শিক্ষার্থী ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর কার্যালয় পরিদর্শন শেষে জানিয়েছে ‘শিক্ষার্থী নিহত’ তথ্যটি ভুল, এটি সম্পূর্ণ একটি গুজব।

সন্ধ্যায় তারা এসব তথ্য সাংবাদিকদের জানিয়েছে।

এর আগে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর কার্যালয়ে ‘দুজন শিক্ষার্থীর লাশ’ এমন একটি গুজব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। পরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ১০ জনের একটি প্রতিনিধিদল আওয়ামী লীগের ধানমন্ডির কার্যালয় পরিদর্শন করে।

শনিবার বিকেলে আওয়ামী লীগের ধানমন্ডি কার্যালয়ের সামনে শিক্ষার্থীদের একটি অংশের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় জিগাতলা এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ ও বিজিবির একটি দল দুই পক্ষের মধ্যে অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার একপর্যায়ে একটি গুজব ছড়িয়ে পড়ে। গুজবটি অল্প কিছু সময়ের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ছড়িয়ে যায়। ধানমন্ডিতে ‘দুজন শিক্ষার্থী নিহত’ হয়েছে, এমন একটি গুজব ছড়িয়ে পড়ে। এ তথ্যের পর সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকার শিক্ষার্থীরা জিগাতলা এলাকার দিকে অগ্রসর হয়। পরে তাদের বক্তব্য শুনে পুলিশ শিক্ষার্থীদের ১০ জনকে সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে যায়। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা শিক্ষার্থীদের দলের কার্যালয় ঘুরিয়ে দেখান। পরে শিক্ষার্থীরা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলে।

আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয় পরিদর্শন শেষে ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের একজন শিক্ষার্থী সাংবাদিকদের বলেন, তারা সকাল থেকে প্ল্যাকার্ড-ব্যানার নিয়ে সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়ে অবস্থান করছিল। বিকেলের দিকে কিছু লোক হঠাৎ করে বলেন যে, ধানমন্ডিতে আন্দোলনকারী ‘দুজন শিক্ষার্থী নিহত’ হয়েছে। পরে তারা পুলিশের সহায়তায় আওয়ামী লীগের ধানমন্ডি কার্যালয় পরিদর্শন করে ঘটনার সত্যতা পায়নি। শিক্ষার্থী ‘নিহত’ হওয়ার তথ্যটি ভুল, এটি একটি গুজব ছিল।

এদিকে রাজধানীর ধানমণ্ডিতে কয়েক ঘণ্টা সংঘর্ষের পর সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে উপস্থিত হন ছাত্রলীগের নবনির্বাচিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। তারা ছাত্রদের আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে তাদের আন্দোলন স্থগিত করার আহ্বান জানান।

শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বিজিবির প্রধান গেটের সামনে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী ছাত্রদের উদ্দেশে বলেন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের ছেলেরা স্কুল ড্রেস বানাচ্ছে। তারা ভুয়া আইডি কার্ড বানিয়ে তোমাদের মধ্যে ঢুকে গেছে। তারাই আওয়ামী লীগ অফিসে হামলা চালিয়ে কয়েক ছাত্র নিহতের গুজব ছড়িয়েছে।

গোলাম রাব্বানী বলেন, আন্দোলনকারী ছাত্রদের মধ্য থেকে কয়েকজন প্রতিনিধি সঙ্গে নিয়ে আমরা পার্টি অফিসে গিয়ে তাদের দেখিয়েছি সেখানে কাউকে আটকে রাখা হয়নি।

এ সময় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছাত্রদের কাছে জানতে চান, ‘কেউ মারা গেছে এমন কোনো প্রমাণ তোমাদের কাছে আছে? তাহলে নাম বলো।’

তখন ছাত্ররা ‘নেই’ বলে জানান।

পরে গোলাম রাব্বানী ছাত্রদের সব দাবি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেনে নিয়েছেন উল্লেখ করে এ বিষয়ে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ তুলে ধরেন।

এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়নের জন্য এক সপ্তাহ আন্দোলন স্থগিত রাখার আহ্বান জানান। এ সময় ছাত্রদের মধ্যে কিছু অংশ মেনে নেন। আর কিছু অংশ রাস্তা ছাড়বেন না বলে চিৎকার শুরু করেন।

এ অবস্থায় ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

এর আগে শনিবার দুপুরে ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ অফিসে হামলার অভিযোগ এনে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা। এতে বেশ কয়েকজন ছাত্র আহত হয়। এরপর ফেসবুকে চার ছাত্র নিহত ও মেয়েদের ধর্ষণের গুজব ছড়ানো হয়।

পরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে জানান, দুর্বৃত্তরা আওয়ামী লীগ অফিসে হামলা চালায়। এতে দলটির ১৭ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। তারা হাসপাতালে আছে। তিনিও ছাত্রদের আন্দোলনে সরকারের সমর্থনের কথা উল্লেখ করেন।

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট