কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা বীভৎসতার প্রকাশ : ফখরুল

প্রকাশিত: ৫:৩৬ অপরাহ্ণ, জুলাই ২, ২০১৮

কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা বীভৎসতার প্রকাশ : ফখরুল

‘বর্তমান আওয়ামী শাসকগোষ্ঠীর গণবিরোধী কার্যকলাপ এখন বীভৎসরূপে আত্মপ্রকাশ করেছে। সে জন্য সরকার জনগণের ভেতরের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের পক্ষ থেকে কোনো দাবির আওয়াজকে নিষ্ঠুরভাবে দমন করতে দ্বিধা করে না। শিক্ষার্থীদের ন্যায়সংগত ও যৌক্তিক দাবিকে অগ্রাহ্য করতেও পিছপা হয় না’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের কর্মসূচিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন। তিনি আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।

বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘চাকরিতে কোটা সংস্কার নিয়ে আগে জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা তো দূরের কথা। বরং ঢাকা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নতুন করে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠনকে লেলিয়ে দিয়ে হামলার মাধ্যমে গুরুতর আহত করা হচ্ছে আন্দেোলনকারীদের। এ ছাড়া পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করানো কখনই সুস্থ মানসিকতার পরিচয় বহন করে না।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘দেশের কোনো বিবেকবান মানুষ সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করার এ ধরনের বিবেকবর্জিত নিষ্ঠুরতা প্রদর্শন কোনোভাবেই মেনে নিতে পারে না। কোটা সংস্কার নিয়ে আন্দোলনকারী ছাত্রছাত্রীরা আমাদের সন্তানতুল্য, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কিংবা সরকারদলীয় সংগঠনকে ব্যবহার করে তাদের প্রতি অমানবিক নির্দয় আচরণ অত্যন্ত লজ্জাজনক।’

আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের দাবিকে তোয়াক্কা না করে তাদের ওপর সরকারের এই অন্যায় পাশবিক আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান বিএনপির এই নেতা।

অবিলম্বে চাকরিতে কোটা সংস্কার বিষয়ে আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ সমাধান এবং অবিলম্বে কোটা সংস্কার আন্দোলনে গ্রেপ্তারকৃতদের নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি জানান বিএনপির মহাসচিব। তিনি আন্দোলনকারীদের হামলা, নির্যাতন, গ্রেপ্তার না করে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের দাবি জানান।

গত শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের পূর্বঘোষিত সংবাদ সম্মেলনে বাধা দিয়ে ব্যাপক মারধর করা হয়। এতে ১০ জনের মতো আহত হন। আহতরা অভিযোগ করেছেন, হামলাকারীরা ছাত্রলীগের নেতাকর্মী।

এর পরই কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ অধিকার ছাত্র সংরক্ষণ পরিষদের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে বাধা ও হামলার প্রতিবাদে রোববার থেকে সব বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন ও সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।

এরই অংশ হিসেবে গতকাল রোববার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারীদের মানববন্ধনের কর্মসূচি চলাকালে হামলার ঘটনা ঘটে। কিন্তু গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস থাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে কোনো কর্মসূচি পালিত হয়নি।

সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতাকর্মীরা মানববন্ধনের জন্য দাঁড়ানোর প্রস্তুতি নেওয়ার সময় ফের হামলা ও মারধরের ঘটনা ঘটে। আন্দোলনকারীরা হামলার জন্য ছাত্রলীগকে দায়ী করেছে।

তবে ঘটনাস্থলে থাকা ছাত্রলীগের নেতারা গণমাধ্যমের কাছে দাবি করেছেন, তারা কোনো হামলা বা মারধর করেননি। ছাত্রলীগ দেশের আইন মেনে চলে। তারা আইন নিজের হাতে তুলে নেন না।

এ বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ৯ এপ্রিল সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে ৭ মে পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত করেন আন্দোলনকারীরা। পরে প্রধানমন্ত্রী সংসদে কোটা বাতিলের ঘোষণা দেন। আন্দোলনকারীরা এ জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে আনন্দ মিছিলও করে। কিন্তু সেই প্রজ্ঞাপন এখনো প্রজ্ঞাপন জারি হয়নি।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট