বিএনপি ক্ষমতায় গেলে শুরু হয় সন্ত্রাস, খুন এবং লুটপাট : প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ৯:২৪ অপরাহ্ণ, জুন ৩০, ২০১৮

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে শুরু হয় সন্ত্রাস, খুন এবং লুটপাট : প্রধানমন্ত্রী

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেলে জনগণের উন্নয়ন হয় আর বিএনপি ক্ষমতায় গেলে শুরু হয় সন্ত্রাস, খুন এবং লুটপাট’ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শনিবার গণভবনে ইউনিয়ন সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, নির্বাচিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং চেয়ারম্যানদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কার্যনিবার্হী সংসদ ও উপদেষ্টা পরিষদের একটি বিশেষ বর্ধিত সভা হয়। চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বরিশাল এবং সিলেট বিভাগের তৃণমূলের নেতাদের নিয়ে এই বিশেষ বর্ধিত সভায় শেখ হাসিনা এ নির্দেশ দেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে আরো সুসংগঠিত করতে হবে। আওয়ামী লীগ একমাত্র এ দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারে। এই সংগঠনকে আরো শক্তিশালী করতে হবে। এই সংগঠনের জনসমর্থন বাড়াতে হবে। আমরা এখন আমাদের প্রত্যেকটা ইউনিয়ন থেকে শুরু করে, সমস্ত কমিটিগুলি আমরা কম্পিউটারে ডাটাবেস করে রাখব। কাজেই এলাকায় এলাকায় যেসব উন্নতি হচ্ছে, সেসব উন্নতির চিত্রগুলি তুলে ধরেন, সেটা আমি চাই। আমরা দেশের উন্নয়নে, জনগণের উন্নয়নে, জনগণের কল্যাণে যে সমস্ত কর্মসূচিগুলি নিয়েছি, আপনারা সেই কর্মসূচিগুলি মানুষের কাছে তুলে ধরবেন।’

সভার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। পরে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা বক্তব্য রাখেন। এরপর তৃণমূল নেতাদের কথা শোনেন শেখ হাসিনা। এ সময় তৃণমূল নেতারা স্থানীয় উন্নয়নের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। কেউ কেউ স্থানীয় সংসদ সদস্যদের মনোনয়ন দেয়ার অনুরোধ জানান আওয়ামী লীগ সভাপতিকে। দলের ঐক্যের ওপর গুরুত্বারোপ করে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে কাজ করার কথা বলেন তৃণমূলের নেতারা।

নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার নগরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নিলুফার ইয়াসমিন প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি ওই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ আব্দুল কুদ্দুসকে পুনরায় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেয়ার জন্য অনুরোধ জানান।

বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান খো কো মারমা তার বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির ফলে পাহাড়ি মানুষের জীবন-মান উন্নয়নের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।

সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আমির আলী বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেটের ১৯টি সিট আমরা আপনাকে উপহার দেব। সিলেট সিটি কর্পোরেশনে আপনি যাকে মেয়র পদে মনোনয়ন দিয়েছেন আমরা আপনাকে সিটি মেয়র উপহার দেব।

জাতীয় পার্টির স্থানীয় সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে তিনি বলেন, এখানে টাকা ছাড়া কোনো নিয়োগ হয় না। সিলেটের ওই আসন থেকে শফিকুর রহমান চৌধুরীকে মনোনয়ন দেয়ার অনুরোধ জানাই। আমাদের নৌকা আমাদের ফিরিয়ে দিন।

সুনামগঞ্জের মোহনপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হেমন্ত তালুকদার বলেন, আমরা গ্রাম থেকে এসেছি, আমাদের কোনো কথা বলার সুযোগ নাই। আওয়ামী লীগের শত্রু আর কেউ নাই। নির্বাচন আসলেই আওয়ামী লীগের শত্রু আওয়ামী লীগ হয়ে যায়। আমরা কোনো নেতার গ্রুপিংয়ে যাব না, নেত্রী যাকে নৌকা দেবেন আমরা তাকে ভোট দেব। আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি। আমরা বুঝি নৌকা যেদিকে শেখ হাসিনা সেদিকে।

পাবনা সদর উপজেলার সাদুল্ল্যাহপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস মন্ডল স্থানীয় সংসদ সদস্যের প্রশংসা করে বলেন, আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি, নৌকার জয়ের জন্য কাজ করে যাব।

বরিশাল মহানগরের ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আবুল ফারুক হুমায়ুন বলেন, দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগ করে এ রকম সুযোগ পাইনি। আজ যে সুযোগ পেয়েছি, তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আগামী সিটি নির্বাচনে আপনাকে বরিশাল থেকে একটা নতুন উপহার দেব। সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকে মেয়র নির্বাচিত করে আপনাকে উপহার দেব।

কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী বলেন, উখিয়া-টেকনাফে আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা ৪ চারলেনে উন্নীত করে দেয়ার জন্য অনুরোধ করছি। ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের সম্মানী খুবই নগণ্য। আজকের এই সভায় এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। কক্সবাজারে যে মেডিকেল কলেজটি করার কথা রয়েছে, দ্রুত সেটির ভিত্তিপ্রস্তর দেয়ার অনুরোধ জানাই। মাদকের কথা আসলে আমাদের উখিয়া-টেকনাফের মানুষের মাথা হেট হয়ে যায়। আপনার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানাই।

ঝালকাঠি জেলার কৃত্তিপাশা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সঙ্কর মুখ্যার্জি বলেন, আমি একজন সাধারণ মানুষ। হাঁস-মুরগি পালন করি। আজ শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী বলে আমাকে এখানে কথা বলার সুযোগ দিয়েছেন। এ সুযোগ অন্য কেউ দিতো না। সবাই উন্নয়নের কথা বলেন, উন্নয়ন দেখতে হলে গ্রামে আসেন। আমাদের গ্রামে কোনো ছনের ঘর নেই।

তিনি বলেন, ২০০১ সালের সেই ভয়বহতা যারা দেখেন নাই, তারা বুঝবেন না জামায়াত-বিএনপি কী জিনিস। তাই আপনাদের বলবো, কোনো অবস্থায় যেন সেই জামায়াত-বিএনপি ক্ষমতায় না আসতে পারে।

এছাড়া প্রধানমন্ত্রী বাজেটের প্রতিটি টাকা যথাযথভাবে কাজে লাগাতে স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের প্রতিও আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।