বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ : আহমেদ আজম খান

প্রকাশিত: ১:৩১ পূর্বাহ্ণ, জুন ২১, ২০১৮

বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ : আহমেদ আজম খান

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় কারাদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান।

বুধবার বিকেল ৫টায় খালেদা জিয়ার সঙ্গে কারাগারে দেখা করতে যান তিনি। কারাগার থেকে বেরিয়ে আহমেদ আজম খান জানান, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ্, তিনি গণতন্ত্র উদ্ধারে নেতা-কর্মীদের নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করতে বলেছেন।

আহমেদ আযম বলেন, ম্যাডাম বলেছেন তার চিকিৎসার করানো জরুরী কিন্তু তা না করে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল ও সিএমএইচ এই দুই প্রতিষ্ঠানকে সরকার অযথাই বিতর্কিত করছে। সরকার এটা নিয়ে রাজনীতি করছে। একবার বলে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে একবার বলে সিএমএইচে। এই দুটি প্রতিষ্ঠানকে সরকার অযথায় বির্তকিত করছেন। এই দুটি প্রতিষ্ঠান নিয়ে আমার তো কোনো বির্তক নেই। কোনো অভিযোগ নেই।

আহমেদ আযম বলেন, ওনি বলেছেন আমি ইউনাইটেড হাসপাতালে আগে চিকিৎসা করিয়েছি। ওখানকার ডাক্তাররা আমার রোগ সর্ম্পকে জানেন। ওখানে আমি স্বস্তিবোধ করবো। অযথা এই দুটো প্রতিষ্ঠানকে সরকার বিব্রত করছে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, ম্যাডামের শরীর ভালো না এটাতো সবাই জানেন। ৭৪ ঊর্ধ্ব মানুষ ওনার বিভিন্ন ধরণে রোগ রয়েছে যা আমি বলতে পারবো না। কারণ আমি ডাক্তার নই। ওনার শরীর ভীষণ খারাপ। ওনার এই মুর্হূতে চিকিৎসার দরকার।

রাজনীতি প্রসঙ্গে খালেদা জিয়া বলেছেন, গণতন্ত্র, ভোটের অধিকার পুনরুদ্ধারে যে আন্দোলন চলছে তা বেগবান করার নির্দেশ দিয়েছেন। এবং এই অধিকার আদায়ের আন্দোলনে ওনি বাইরে থাকুন আর ভেতরে থাকুন ওনি নেতৃত্ব দেবেন।

গণমাধ্যমেকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। গণমাধ্যম যেভাবে ওনার নির্জন কারাবাস ও অসুস্থতার খবর তুলে ধরেছেন এজন্য। নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন শান্ত থাকার জন্য। নিবার্চনকালিন সময়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন ছাড়া জনগণ নিবার্চন মানবে না বলে জানান আহমদ আযম।

নিবার্চন প্রসঙ্গে খালেদা জিয়া বলেছেন ওনাকে জেলে রেখে যে নির্বাচন সরকার করতে চান সেটা কোনো গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে না। ৫জানুয়ারি যে ধরণের নির্বাচন হয়েছে ওই নির্বাচনে দেশের মানুষ ভোট দেয়নি। ওনাকে জেলে রেখে একটা অর্থহীন নির্বাচন দেশের মানুষ দেখতে চান না।

আহমেদ আযম বলেন, পারিবারিক আইনজীবী হিসেবে গত ত্রিশ বছর ওনার বিভিন্ন আইনি বিষয়গুলো আমাকে দেখাশুনা। গত চার মাস ধরে চেষ্টা করছি ওনার সঙ্গে সাক্ষাতের। আজ অনুমতি পেলাম। পারিবারিক আইনজীবী হিসেবে ওনার সঙ্গে আমার প্রতি সপ্তাহে কাজ থাকে।

এর আগে গত শনিবার কারাগারে বন্দী খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার স্বজনরা দেখা করেছেন। স্বজনদের বরাত দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেছিলেন, ‘তার শরীরের অবস্থা আগের চেয়ে অনেক নাজুক। তিনি একা হাঁটতে পারছেন না। আমরা আজকের মধ্যে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’

বিএনপি চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থা আগের থেকে অবনতি ঘটেছে জানিয়ে ফখরুল বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ওনার দুই হাঁটু প্রতিস্থাপন করা। এটাকে নরমাল এক্স-রে মেশিনে, নরমাল সিটিস্ক্যানে ও নরমাল এমআরআইতে হবে না। এ জন্য স্পেশাল এমআরআই, স্পেশাল সিটিস্ক্যান ও স্পেশাল হসপিটালাইজেশন প্রয়োজন হবে। এই জিনিসগুলো দিতে সরকার কোনোভাবেই রাজি হচ্ছে না।’

গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন রাজধানীর বকশীবাজারে স্থাপিত অস্থায়ী পঞ্চম বিশেষ জজ আদালত। রায় ঘোষণার পর পরই খালেদা জিয়াকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়। বর্তমানে সেখানেই রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।