পোল্যান্ডকে ২-১ গোলে হারিয়ে সেনেগালের হাতে আফ্রিকার পতাকা

প্রকাশিত: ২:৫০ পূর্বাহ্ণ, জুন ২০, ২০১৮

পোল্যান্ডকে ২-১ গোলে হারিয়ে সেনেগালের হাতে আফ্রিকার পতাকা

পোল্যান্ডকে ২-১ গোলে হারিয়ে শুভ সূচনা করেছে সেনেগাল। এরপর ৬১ মিনিটে মাবাই নিয়াংয় ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। তবে গ্রেজেজর্জ ক্রাইচোয়িক ৮৬ মিনিটে পোল্যান্ডের হয়ে একটি গোল শোধ করেন।

২০০২ সালেই প্রথম বিশ্বকাপ খেলেছিলো সেনেগাল। সেবার প্রথম বিশ্বকাপে এসেই বিশ্ববাসীকে চমকে দিয়েছিলো আফ্রিকান দেশটি। উদ্বোধনী ম্যাচেই তখনকার ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সকে ১-০ গোলে হারিয়ে দেয় তারা। শেষ পর্যন্ত কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত গিয়েছিলো সেনেগালিজরা।

তবে সেটিই তাদের প্রথম ও শেষ বিশ্বকাপ। এরপর আর বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে উঠতে পারেনি সেনেগাল। সেই ২০০২-এর ১৬ বছর পর আবারও রাশিয়া বিশ্বকাপে মাঠে নেমেই বাজিমাত করেছে তারা। মস্কোর স্পার্তাক স্টেডিয়ামে তাদের প্রতিপক্ষ পোল্যান্ড। ২০০২ সালের সেনেগাল দলের অধিনায়ক আলিউ সিসে এবার বিশ্বকাপে দলটির কোচ। এবারের সেনেগাল দল নিয়েও আশাবাদী সিসে। আবারো ২০০২ সালের স্মৃতি ফিরিয়ে আনতে চান তিনি।

রাশিয়া বিশ্বকাপ যে নিজস্ব একটা গতি তৈরি করে নিয়েছে, সেটা প্রমাণ হলো সেনেগাল-পোল্যান্ড ম্যাচেও। এই দুই দলের মধ্য দিয়েই পূরণ হলো একটা বৃত্ত। বিশ্বকাপের ৩২টি দলই একটি করে ম্যাচ খেলে ফেলেছে ইতিমধ্যে। শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হলো পোল্যান্ড আর সেনেগাল। এই ম্যাচে পোল্যান্ডের রক্ষণকে কাঁপিয়ে দিয়ে প্রথমার্ধেই ১-০ গোলে এগিয়ে যায় আফ্রিকান দেশ সেনেগাল। পরে দ্বিতীয়ার্ধে আরেকটি গোল করে নিজের অবস্থান দৃঢ় করে নেয়।

আফ্রিকার দেশগুলোর মধ্যে এখনও জয় পায়নি কেউ। প্রথম ম্যাচে মিশরকে হারিয়েছে উরুগুয়ে। পরের ম্যাচে ইরানের কাছে গেরেছে মরক্কো। নাইজেরিয়া হেরেছে ক্রোয়েশিয়ার কাছে। তিউনিসিয়া হেরেছে ইংল্যান্ডের কাছে। শেষ প্রতিনিধি হিসেবে সেনেগালের কাছেই আফ্রিকান পতাকা ছিল। পোল্যান্ডকে শেষ পর্যন্ত ২-১ গোলে হারিয়ে আফ্রিকার সম্মানটা ধরে রাখলো সেনেগাল।

৩৭ মিনিটেই গোল করে সেনেগালকে এগিয়ে দেন ইদ্রিসা গুইয়ে। যদিও গোলটিকে আত্মঘাতি হিসেবেই ধরা হচ্ছে। কারণ, ইদ্রিসা গুইয়ের দুর্দান্ত শটটির গতিপথ আটকে দিয়েছিলেন থিয়াগো সিওনেক। তার পায়ের সঙ্গে লেগেই মূলতঃ বল চলে যায় পোল্যান্ডের জালে। প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার ৮ মিনিট আগে গোল হজম করে বসে পোলিশরা। তার আগে সাদিও মানে এবং এমবায়ে নিয়াংয়ের সম্মিলিত আক্রমণ থেকে বক্সের মধ্যে বল পেয়েছিলেন ইদ্রিসা।

ম্যাচের শুরু থেকে অবশ্য সেনেগালের রক্ষণে চাপ সৃষ্টি করে খেলার চেষ্টা করছিল পোল্যান্ড। কিন্তু ১৮ মিনিটেই গোলের দারুণ সুযোগ তৈরি করে নেয় সেনেগাল। জিয়েলিনস্কির একটি দুর্বল পাস থেকে বলের নিয়ন্ত্রন নেয় সেনেগালের সাবালি। বল নিয়ে এগিয়ে গিয়ে বক্সের মধ্যে এমবায়ে নিয়াংকে বল ঠেলে দেন সাবালি। অসাধারণ পাস। কিন্তু বলটিকে শটে পোস্টের ওপর দিয়ে পার করে দেন তিনি বাইরে। দারুণ আক্রমণের একটি বাজে ফিনিশিং ছিল ওটা।

৩০ মিনিটে লেওয়ানডস্কি একটা ভালো সুযোগ পেয়েছিলেন গোল করার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি ব্যর্থ হলেন। একটি লং পাস থেকে বক্সের মধ্যে বল নিয়ন্ত্রণে নেয়ার চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু সেনেগাল গোলরক্ষক খাদিম এনদিয়াই তাকে ব্যর্থ করে দেন।

পরে দ্বিতীয়ার্ধে সেনেগাল আরেকটি গোল করলে বড় ব্যবধানে পিছিয়ে যায় পোলেন্ড। অবশ্য পরে একটি গোল করে সমতায় ফেরার চেষ্টা করে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটা সম্ভব হয়ে উঠেনি।

পোল্যান্ড একাদশ: ওজসিয়াখ এসচিজনি (১) (গোলরক্ষক), লুকাজ পিসজজেক (২০), মাইকেল প্যাদজান (২), থিয়াগো সিওনেক (৪), ম্যাকিয়েজ রাইবাস (১৩), জ্যাকব ব্লাসজিকোস্কি (১৬), গ্রেগোরিজ ক্রিচোইয়াক (১০), পিওতর জিয়েলিনস্কি (১৯), কামিল গ্রোসিকি (১১), আর্কাদিয়াজ মিলিক (৭), রবার্ট লেওয়ানডস্কি (৯) (অধিনায়ক)।

সেনেগাল একাদশ : খাদিম এনদিয়াই (১৬) (গোলরক্ষক), মুসা ওয়াগুই (২২), কালিদু কোলিবালি (৩), সালিফ সানে (৬), ইউসুফ সাবালি (১২), ইদ্রিসা গুইয়ে (৫), আলফ্রেড এনদিয়ে (১৩), এমবায়ে নিয়াং (১৯), ইসমাইলা সার (১৮), মামে বিরাম দিউফ (৯), সাদিও মানে (১০)।