৫ই অক্টোবর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ২:২৫ অপরাহ্ণ, মে ৩০, ২০১৮
আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় এলে দেশের চিত্র বদলে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার দুপুরে রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে তিনি এই মন্ত্রব্য করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশে কোনো দুর্ভিক্ষ নেই, কোনো হাহাকারও নেই। আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় এলে দেশের চিত্র বদলে যাবে।
২৭ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার দু’দিনের ভারত সফর শেষ করে দেশে ফিরেছেন। এই সফরকে ঘিরে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একটা আগ্রহ ছিল। কারণ আর কয়েক মাস পরেই বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হবে সাধারণ নির্বাচন। তাই নির্বাচনের আগে দু’পক্ষের মধ্যে কী ধরনের কথাবার্তা হয় সেটা নিয়ে ছিল ব্যাপক কৌতূহলও।
শেখ হাসিনা গিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে। সেখানে তিনি বাংলাদেশ ভবনের উদ্বোধন করেছেন। আসানসোলে কবি কাজী নজরুলের নামাঙ্কিত একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিয়েছেন সাম্মানিক ডিলিট। খবর বিবিসির
কিন্তু রাজনৈতিক মহলের চোখ ও কান ছিল দুটো বৈঠকের দিকে। প্রথমটি ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আর পরেরটি বৈঠকটি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির সাথে। মোদির সাথে রোহিঙ্গা ইস্যুতে আর মিজ ব্যানার্জির সাথে তিস্তা নদীর পানি বণ্টন প্রসঙ্গে কী কথা হয় সেসবই ছিল আগ্রহের কেন্দ্রে।
শেখ হাসিনা শান্তিনিকেতনে কিছু একটা বলতে গিয়েও সেসব বলেন নি। বক্তব্যের এক পর্যায়ে নিজেকে সংবরণ করে বলেছেন, কিছু কথা আছে যেগুলো বলে তিনি সুন্দর অনুষ্ঠানকে নস্যাৎ করতে চান না।
কিন্তু কী বলতে চেয়েছিলেন তিনি? শেখ হাসিনা সেদিন কিছু না বলেও তিনি যে অনেক কিছুই বলে গেছেন সেটা ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমেও প্রকাশ পেয়েছে।
‘প্রতিদান চান হাসিনা’
আনন্দবাজার পত্রিকার শিরোনাম ছিল: ‘দিল্লির পাশে থেকেছে ঢাকা, মোদীর কাছে ‘প্রতিদান’ চান হাসিনা। পত্রিকাটি লিখছে, ‘মোদীর সঙ্গে বৈঠকে হাসিনা জানিয়েছেন- তার সরকার উত্তর-পূর্বের জঙ্গিদের দেশছাড়া করেছে, ট্রানজিট দিয়েছে, আন্তর্জাতিক মঞ্চে বরাবর দিল্লির পাশে থেকেছে। বাংলাদেশের নির্বাচনের বছরে এ বার তাই ভারতের সহযোগিতা চাই।’
‘কূটনৈতিক সূত্রে খবর, মোদীকে হাসিনা বলেছেন, তার বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের স্বপ্ন ছিল পাকিস্তানি শোষণে ছিবড়ে হয়ে যাওয়া বাংলাদেশকে মর্যাদার সঙ্গে বিশ্বে মাথা তুলে দাঁড় করানো। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে নেমেছেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধের মতো এই কাজেও ভারতকে পাশে চান।’
আনন্দবাজার পত্রিকা বলছে, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে শেখ হাসিনা কী বলবেন, উপদেষ্টাদের সঙ্গে আগেই সেটা আলোচনা করে ঠিক করে এসেছিলেন। শেখ হাসিনার দফতরের এক সূত্রের কথা উল্লেখ করে পত্রিকাটি লিখেছে, ‘হাসিনার বার্তা- মুক্তিযুদ্ধের শক্তিকে সরাতে, বাংলাদেশকে ফের পাকিস্তান বানানোর চক্রান্ত চলছে। আওয়ামি লিগ ক্ষমতা হারালে পশ্চিমে আর পূবে- দু’দিকেই পাকিস্তান নিয়ে ঘর করতে হবে ভারতকে। তাই ভারতের উচিত বাংলাদেশের বর্তমান সরকারই যাতে ক্ষমতায় ফেরে, সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা।’
‘হাসিনা চুপ তিস্তায়, মোদি রোহিঙ্গায়’
ভারতের জনপ্রিয় টেলিভিশন চ্যানেল এনডিটিভি বলছে, ‘শেখ হাসিনা চুপ ছিলেন তিস্তা নিয়ে আর প্রধানমন্ত্রী মোদি নিশ্চুপ রোহিঙ্গা ইস্যুতে।’
টেলিভিশন চ্যানেলটি তাদের ওয়েবসাইটে লিখেছে, ‘দুজন প্রধানমন্ত্রী এবং একজন মুখ্যমন্ত্রী একসাথে মঞ্চে ছিলেন চার ঘণ্টা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নীরবতাই যেন তীব্র ছিল।’
শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ভবন উদ্বোধনের পর বলেছিলেন, ‘দুই দেশের মধ্যে বহু সমস্যার সমাধান হয়েছে। কিছু সমস্যা এখনও অমীমাংসিত রয়ে গেছে। তবে আমি সেসব বিষয় তুলে এই সুন্দর অনুষ্ঠানকে ম্লান করতে চাই না।’
শেখ হাসিনার এই বক্তব্যের কথা উল্লেখ করে এনডিটিভি লিখেছে, ‘কোন শব্দ উচ্চারণ না করেই বার্তা দেওয়ার দারুণ একটি উদাহরণ হতে পারে এটি। তিস্তা শব্দটি উচ্চারণ না করেও বার্তাটি দিয়ে দিয়েছেন তিনি। আরেকটি শব্দ তিনি বারবার বলেছেন: রোহিঙ্গা। শেখ হাসিনা এই সঙ্কটে ভারতের ইতিবাচক ভূমিকা দেখতে চেয়েছেন।’
কিন্তু এনডিটিভি বলছে, ‘প্রধানমন্ত্রী মোদি তিস্তা কিংবা রোহিঙ্গা কোনওটিই মুখে নেন নি। তবে তিনি বলেছেন, শেখ হাসিনার লক্ষ্য বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করা। এজন্যে ভারতের সর্বাত্মক সহযোগিতা রয়েছে।’
‘হাসিনার চাওয়া, মমতার বিবেচ্য’
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার শিরোনাম ছিল- ‘শেখ হাসিনা, মমতা ব্যানার্জির আলোচনা। কিন্তু তিস্তার পানি ভাগাভাগির বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন।’
কাগজটি লিখেছে, ‘হাসিনা চান ২০১৮ সালের সাধারণ নির্বাচনের আগেই তিস্তা নদীর পানি ভাগাভাগি নিয়ে চুক্তিটি হয়ে যাক। মমতার দিক থেকেও কিছু বিবেচ্য বিষয় রয়েছে। উত্তর বঙ্গের যেসব জেলা কৃষির জন্যে তিস্তার জলের উপর নির্ভরশীল সেখানকার স্বার্থের কথাও মুখ্যমন্ত্রী ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে এড়িয়ে যেতে পারেন না।’
শেখ হাসিনার সাথে বৈঠকে মমতা ব্যানার্জি তিস্তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে কিনা সে প্রসঙ্গে মন্তব্য করতেও রাজি হননি।
‘পরিবারের সবাইকে চিনি’
সংবাদ প্রতিদিন পত্রিকাটি লিখেছে, ‘শেখ হাসিনার সঙ্গে তার দীর্ঘ সম্পর্কের কথা জানিয়ে মমতা উল্লেখ করেছেন ২০ থেকে ২৫ বছর ধরে হাসিনা বিরোধী নেত্রী থাকাকালীনও সম্পর্ক ভালো ছিল। পরিবারের সবাইকে চিনি। তিনি বলেন, আবার আসার জন্য অনুরোধ করেছি।আমরাও চাই ওঁরা আসুন। আমাকেও সবসময় যেতে বলেন।বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী আমাকে ভালবাসেন। ওঁকেও আমি ভালবাসি।
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
Office : Central Market (1st floor),
Bandar Bazar (Court Point),
Sylhet – 3100, Bangladesh.
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D