ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ

প্রকাশিত: ১২:৪৬ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৭, ২০১৮

ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ

নরসিংদী : নরসিংদীতে স্থানীয় যুবলীগ নেতা সৈকত হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করেছেন এলাকাবাসী।

শুক্রবার সকালে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে তারা বিক্ষোভ শুরু করেন। এতে করে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

এর আগে ২০১৭ সালের ২৯ ডিসেম্বর ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের শিবপুর থানাধীন বরইতলা নামক স্থানে সড়ক দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়। ট্রলিক্রেন ও লেগুনার মধ্যে সংঘর্ষে জিহাদ (১০) এবং ইয়াসিন আরাফাত (২৮) নামে দুইজন নিহত হয়েছে।

আহত হয়েছে কমবেশি ২৩ জন যাত্রী, শ্রমিক ও পথচারী। এই দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে মহাসড়কে তান্ডব ঘটিয়েছে উত্তেজিত শ্রমিক জনতা। তারা রাস্তা অবরোধ করে ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।

আহতের মধ্যে আরাফাত (৮), পূর্ণিমা (৩৫), তারা মিয়া (৭০), মফিজুল (৫৫), আব্দুস সাত্তার (৩৫), লাবনী (২০), আলেয়া (২৪), আসমা (৩০), সাবিনা (২০), শামীমা (২০), আমেনা আক্তার (১৮), শেফালী (৩০), সোহেল মোল্লা (৩০), লতিফা বেগম (২৪), লুৎফা (৩৩), সালমা (৩০), পারভীন (২৫), মাহফুজ (১৩), জোনাকী (৩০), ময়না (২০), ডলী (২৫), নাজমা (৩০), বিউটি (৩০), অজ্ঞাত (৩৫) নামে ২৩ জনের নাম পরিচয় পাওয়া গেছে। দুর্ঘটনার পর সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে উত্তেজিত শ্রমিক জনতার হামলায় আহত হয়েছেন জায়েদুল কবির (৩০), আব্দুল কাদের (৪০) ও মামুন জোয়ার্দার নামে বিটিভি’র আরো ৩ সাংবাদিক কর্মকর্তা কর্মচারী। তাদের বহনকারী একটি মাইক্রোবাসও (ঢাকা মেট্রা-চ-১৫-৫৬০০) ভাঙচুর করেছে শ্রমিক জনতা। দুর্ঘটনায় নিহত জিহাদ নরসিংদী শহরের ভেলানগর মহল্লার রিপন মিয়ার পুত্র। সে ভেলানগরের একটি মাদ্রাসার ছাত্র। দুর্ঘটনার সময় সে নরসিংদী জেলা ইজতেমার দিকে যাচ্ছিল। নিহত ইয়াসিন আরাফাত থার্মেক্স গ্রুপের আদুরী এপারেলস’র শ্রমিক।

আহতদের মধ্যে,আব্দুস ছাত্তার, পারভীন ও অজ্ঞাতনামা ৩ জনকে সংকটাপন্ন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। বাকীরা নরসিংদী জেলা হাসপাতালে চিকিৎসধীন নিচ্ছে।

ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ থেকে জানা গেছে, সকাল সোয়া ৮ টায় মাধবদী থেকে একটি যাত্রীবাহী লেগুনা (ঢাকা মেট্রো-চ-১১-০৮১৯) লেগুনা যাত্রী নিয়ে শিবপুরের বরইতলায় থার্মেক্স গ্রুপের আদুরী এপারেলস’র সামনে গিয়ে যাত্রা বিরতি দেয়।

এ সময় বিপরীত দিক থেকে একটি ট্রলিক্রেন (ঢাকা মেট্রো-শ-১১-০৮১২) ঘটনাস্থলে পৌছে ঘনকুয়াশার কারণে হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ঘটনাস্থলে থেমে থাকা লেগুনার সাথে সংঘর্ষে হয়। এতে দুইজন লেগুনার যাত্রী ঘটনাস্থলে নিহত এবং ২৩ জন আহত হয়।

এই খবর ছড়িয়ে পড়লে আদুরী এপারেলস’র শ্রমিকরা মিল থেকে বেরিয়ে রাস্তায় নেমে আসে এবং তাদের সাথে যোগ দেয় রাস্তায় উপস্থিত জনতা। এ অবস্থায় তারা দুই ঘন্টা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে।

অবরোধ চলাকালীন শ্রমিকরা ট্রলিক্রেনটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। ফায়ার সার্ভিসের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে পানি স্প্রে করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। একই সময় তারা সাংবাদিকদের গাড়িসহ ১০-১৫ টি যানবাহন ভাঙচুর করে।

এ খবর চর্তুদিকে ছড়িয়ে পড়লে ঢাকা সিলেট মহাসড়কের কয়েক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিশাল যানজটের সৃষ্টি হয়। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে চলাচলকারী বিভিন্ন যানবাহনের হাজার হাজার যাত্রী সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হয়।

এ ব্যাপারে ইটাখেলা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ হাফিজুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, দুর্ঘটনার পর ক্রেনের চালক পালিয়ে যায়। তাছাড়া ক্রেনটির মালিক সম্পর্কে কোন পাত্তা পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে শিবপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।