২৩শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৪:৫৬ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২০, ২০১৮
হায়াত-মউত আল্লাহর হাতে, বেগম খালেদা জিয়াকে ইঙ্গিত করে ওবায়দুল কাদেরের এ বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যে প্রমাণ হলো ক্ষমতাসীনদের ষড়যন্ত্রের নকশা পরিষ্কার।
শুক্রবার নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
রিজভী আরো বলেন, ‘কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে আমরা বারবার গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করলেও সরকার ও কারা কর্তৃপক্ষ কোনো কর্ণপাত করছে না। গতকাল শারীরিকভাবে অসুস্থ দেশনেত্রীর সঙ্গে দেখা করার জন্য দলের মহাসচিবসহ সিনিয়র নেতারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতিপত্র নিয়ে কারাফটকে গেলেও তার সঙ্গে সাক্ষাতের অনুমতি দেয়নি কারা কর্তৃপক্ষ। দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার হাঁটু ও পায়ের ব্যথা আরো বেড়ে গেছে।
পুরাতন ভবনের স্যাঁতসেঁতে কক্ষে তাঁকে অন্তহীন নানাবিধ সমস্যার দ্বারা আক্রান্ত হতে হচ্ছে। সেখানে একদিকে মশার তীব্র উপদ্রব, অন্যদিকে ঘনঘন লোডশেডিংয়ে তাকে এক অবর্ণনীয় কষ্টে রাখা হয়েছে।’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘আমি স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, অবিলম্বে দেশনেত্রীর ইচ্ছানুযায়ী রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের দিয়ে চিকিৎসা ব্যবস্থা করা হোক, অন্যথায় জনগণের রুদ্ররোষ থেকে কেউই রেহাই পাবে না।’
এসময় রিজভী আরো বলেন, চাঁদার দাবিতে গুণ্ডামি করলেও চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের নেতা মো. নুরুল আজিম রনিকে তার সংগঠন ও দল আওয়ামী লীগ থেকে পুরস্কৃত করা হবে। যেমনটি ছাত্রীর রগ কেটেও সম্মানিত হয়েছেন ছাত্রলীগ নেত্রী এশা।
উল্লেখ্য, ইউনিএইড নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কোচিং সেন্টারের চট্টগ্রাম অফিসের পরিচালক মোহাম্মদ রাশেদ মিয়াকে (৩৮) তার অফিসে চড়-থাপ্পড় মারেন ছাত্রলীগ নেতা রনি। গত ১৭ ফেব্রুয়ারির ওই ঘটনার একটি ভিডিও বৃহস্পতিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে।
এরপর ২০ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে রনি তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর করেন বলে রাশেদ মিয়া চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ মডেল থানায় এজাহার দায়ের করেন। পরে ছাত্রলীগ থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
এ প্রসঙ্গ টেনে রিজভী বলেন, ‘চাঁদার দাবিতে চট্টগ্রামে একটি কোচিং সেন্টারের মালিকের ওপর মহানগর ছাত্রলীগ নেতা রনির অমানবিক নির্যাতনের দৃশ্য বিশ্ব দেখেছে। এই ছেলেটিই শিক্ষককে পিটিয়ে রেহাই পেয়েছে। অবৈধ অস্ত্রসহ ধরা পড়লেও সাজা পাননি।’
তিনি বলেন, ‘দল থেকে অব্যাহতির পর যারা উৎফুল্ল হচ্ছেন, তারা জেনে রাখুন- রনিও ছাত্রলীগের রগকাটা নেত্রী এশার মত তিরস্কারের পরিবর্তে পুরস্কৃত হবেন। শেখ হাসিনার অবৈধ ক্ষমতার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অবৈধ টাকা অর্জন। আর এটি করতে গিয়েই ছাত্রলীগের এমন বাড়-বাড়ন্ত। এটাই হলো শেখ হাসিনার আইনের শাসন, সুশাসন, উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের নমুনা।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশ্যে রিজভী প্রশ্ন রাখেন, ‘এসবের দায় কী আপনাদের ওপর বর্তায় না?’’
সংবাদ সম্মেলনে তিনি কমনওয়েলথ শীর্ষ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেন।
রিজভী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেছেন- ‘টেকসই শান্তি এবং স্থিতিশীলতার ভিত্তি হচ্ছে গণতন্ত্রের উন্নয়ন, সুশাসন ও আইনের শাসন’। তার এই বক্তব্য শুনে বিভিন্ন দেশের সরকার প্রধানরা নিশ্চয়ই বিস্ময়ে হতবাক হয়েছেন! কারণ, তার নেতৃত্বেই বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে।’
হল থেকে ছাত্রীদের বিতাড়নে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের গভীর রাতে হল থেকে সম্পূর্ণ অমানবিক আচরণের মাধ্যমে বের করে দেয়া হয়েছে। এটি দেশের ইতিহাসে ন্যাক্কার ও কলঙ্কজনক ঘটনা হয়ে থাকবে।’
আরও পড়ুন….
দমনপীড়ন চালিয়েও বিএনপি’র কিছু করতে পারছেন না প্রধানমন্ত্রী: রিজভী
‘বিএনপি চেয়ারপারসন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও নেতাকর্মীদের চরম দমনপীড়ন চালিয়েও দলের কিছু করতে না পেরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
বৃহস্পতিবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ফিউচার অফ বাংলাদেশ আয়োজিত ‘গণতন্ত্রহীনতা বনাম জবাবদিহিতা’ শীর্ষক তরুণ প্রজন্মের সঙ্গে মুক্ত আলোচনায় তিনি একথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী ভাবছেন, খালেদা জিয়াকে জেলে রেখে এতো দমনপীড়ন করছি, নেতাকর্মীদের এতো নির্যাতন করছি, তারপরও বিএনপি এতো ঐক্যবদ্ধ। লন্ডন থেকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এগুলো শেখ হাসিনা আর সহ্য করতে পারছেন না। ক্ষত-বিক্ষত হয়ে এখন আর্তনাদ করছেন।
দেশে এখন গণতন্ত্র নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, রাতের অন্ধকারে যেকোনো যুবক অদৃশ্য হয়ে যায়। গুম করা হয়। কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের ৩ জনকে চোখ বেঁধে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে লন্ডনে সাংবাদিকরা প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করলে এড়িয়ে গিয়েছেন। উত্তর দেননি। বলেছেন তারেক রহমানকে ফিরিয়ে আনা হবে। এখানেই তো তার জালা, এখানেই তো তার ভয় ও বিদ্বেষ।
তিনি বলেন, বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়ে পার্লামেন্ট গঠন করেছেন। সেই পার্লামেন্টের প্রধানমন্ত্রী হয়ে তিনি এতো অহঙ্কার করেন। একে ধমকান, তাকে ধমকান। বিরোধী পক্ষকে দেখে নেবেন বলেন। কীভাবে তারেক রহমানকে লন্ডন থেকে আনবেন এসব বলে বেড়ান।
রিজভী বলেন, লন্ডনকে বলা হয়, পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন ও যাকে বলা হয় গণতন্ত্রের আতুড়ঘর, সেখান থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য গণমাধ্যমে বক্তব্য দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু আপনার দেশে যে মানবাধিকার নেই, নাগরিক অধিকার নেই ও গণতন্ত্র নেই সে কথা তো বলছেন না।
মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তব্য রাখেন ফিউচার অব বাংলাদেশের আহ্বায়ক মো. উজ্জল, সদস্য সচিব সাজ্জাতুল হানিফ, শাহাদাত হোসেন মিশু, মো. রুবেল মিয়া, মেহেদী কাওসার শাহিন, মো. সোহাগ, মো. মাহাদী হাসান সাদবিনসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও থানার ছাত্রনেতারা।
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
Office : Central Market (1st floor),
Bandar Bazar (Court Point),
Sylhet – 3100, Bangladesh.
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D