বিএনপি এখন আগের যে কোন সময়ের চেয়ে বেশী ঐক্যবদ্ধ ॥ প্রফেসর এমাজউদ্দিন

প্রকাশিত: ২:০২ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ২৫, ২০১৮

বিএনপি এখন আগের যে কোন সময়ের চেয়ে বেশী ঐক্যবদ্ধ ॥ প্রফেসর এমাজউদ্দিন

‘জিয়াউর রহমান শুধু বিএনপির নেতা নয় তিনি জাতির নেতা। তিনি অনেক ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেছেন যা তিনি ছাড়া আর কারো পক্ষে তা পালন করা সম্ভব হতো না। পচাত্তরের সাত নভেম্বর জিয়াউর রহমান যদি দায়িত্ব না নিতে তাহলে বাংলাদেশ আজ কোথায় যেতো তা বলা শক্ত। আজকে প্রতিনিয়ত দেশে যে উন্নয়নের জোয়ারের কথা বলা হয় তার সূচনা হয়েছিলো শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাধ্যমে।’ দেশের খ্যাতনামা বুদ্ধিজীবী, প্রখ্যাত রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদ শনিবার সিলেটে একটি আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই কথা বলেন।
বিকাল ৪ টায় নগরীর একটি অভিজাত হোটেলে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস ২০১৮ উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধ, জিয়াউর রহমান ও বর্তমান বাংলাদেশ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে সামাজিক সংগঠন পাবলিক ভয়েস। সংগঠনের আহবায়ক মিফতাহ সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে এবং সহকারী অধ্যাপক মো.মনিরুল ইসলাম ও পাবলিক ভয়েসের সদস্য রহুল কুদ্দুস হামজার পরিচালনায় প্রাণবন্ত এই আলোচনা সভায় জাতীয় ছাড়াও সিলেটে বিভিন্ন পর্যায়ের বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদ, রাজনীতিবীদ এবং সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
মহান মুক্তিযুদ্ধ প্রসঙ্গে আলোচনা করতে গিয়ে দেশের গুনী এই বুদ্ধিজীবী বলেন, ১৯৭১ সালে ২৭ মার্চ শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণার মাধ্যমে বাংলাদেশ একটি মাটির প্রদীপ হিসেবে জ¦লে উঠেছিলো। আর নয় মাসে সেই মাটির প্রদীপ একটা সূর্যে পরিণত হয়। এ সময় তিনি বাংলাদেশে বর্তমান গণতন্ত্রের প্রতি আক্ষেপ করে বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ভিত্তি আজ সরে গেছে। ভারত বা পকিস্তানের মতো আলোচনার টেবিল বসে বাংলাদেশের জন্ম হয়নি। বাংলাে শের জন্ম হয়েছিলো মুক্তিযুদ্ধের রক্তাক্ত প্রান্তরে। কিন্তু স্বাধীনতা ৩ মাসের মাথায় বাংলাদেশের গণতন্ত্র কেড়ে নেয়া হয়েছিলো। বাংলাদেশের নাম আজ বিশে^র শীর্ষ স্বৈরতান্ত্রিক দেশের প্রথম কাতারে উঠে এসেছে। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে জন্ম নেয়া বাংলাদেশের এই স্বৈরতান্ত্রিক পরিচয় খুবই দুঃখজনক।
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আপোসহীন নেত্রী থেকে খালেদা জিয়া আজ দেশ মাতায় পরিচিতি লাভ করেছেন। তৃতীয় বিশে^ আজ তিনি এই নামেই পরিচিত। খালেদা জিয়াকে কারাগারে ঢুকিয়ে মনে করা হয়েছিলো বিএনপি ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যাবে। কিন্তু যারা এই চিন্তা করে করে তাকে কারাগারে ঢুকিয়েছেন তাদের ষড়যন্ত্র ব্যর্থ প্রমাণিত হয়েছে। বিএনপি এখন বিগত যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি ঐক্যবদ্ধ। তরুণরা যদি খালেদা জিয়ার নির্দেশ মতো কাজ করে তবে সকল ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হবে। তিনি নিদের্শ দিয়েছেন শান্তির্পূর্ণভাবে আন্দোলন করতে। সবাইকে সেভাবেই কাজ করে যেতে হবে।
এ সময় তিনি বলেন, পাবলিক ভয়েস হচ্ছে জনমত। এই জনমত আমাদের শক্তি। দেশের জনগণ যখন দেখবে বিএনপি ঐক্যবদ্ধ এবং শক্তিশালী তখন জনগণ স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আসবে। আমাদের সামনে সেই সুদিন।
হাফিজ ইসমাঈল আহমদের তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হওয়া আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি এবং বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কবি আবদুল হাই শিকদার, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং জাসাসের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক মামুন আহমদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গির আলম প্রধান, বিশিষ্ট শিক্ষাবীদ ভাষাসৈনিক অধ্যক্ষ মাসউদ খান।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ড.এনামুল হক চৌধুরী, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ সাঙ্গঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবু, বিশিষ্ট সমাজ বিজ্ঞানী, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. কামাল আহমেদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রাজ্জাক, সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক আহবায়ক ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী, সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কাহের চৌধুরী শামীম, মহানগর সভাপতি নাসিম হোসাইন, পেশাজীবী পরিষদ সিলেটে সভাপতি ডা. শামীমুর রহমান, সুজন সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী, বিশিষ্ট শিক্ষাবীদ লে. কর্ণেল (অব) আলী আহমদ, সিলেট মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির সহকারী রেজিস্ট্রার লোকমান আহমদ চৌধুরী এডভোকেট, পাবলিক ভয়েস সদস্য, ফজলে এলাহী পাপ্পু, শাকিলুর রহমান, মাসরুর রাসেল।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম, বিএনপি নেতা সালেহ আহমদ খসরু, ডা. নাজমুল ইসলাম, সিসিক প্যানেল মেয়র ১ রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, অধ্যক্ষ নিজাম উদ্দিন তরফতার, ওলিদ তদালুকদার প্রমুখ।
এর আগে শুরুতে অতিথিদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন, সোহেল মাহমুদ, সোহেল আহমদ, আব্দুল আজিজ, মনজুর হোসেন মন্জু, রফিকুল বারী নোমান, দেওয়ান রেজওয়ান। -বিজ্ঞপ্তি

প্রসঙ্গত, প্রফেসর ড.এমাজউদ্দিন আহমদ ১৯৩২ সালের ১৫ ডিসেম্বর তৎকালীন মালদাহ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও ভারতের কিছু অংশ) জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের ‘গোহাল বাড়ি’ এলাকায় পরিবারসহ দীর্ঘদিন বসবাস করেন প্রফেসর এমাজউদ্দিন। তিনি শিবগঞ্জের আদিনা সরকারি ফজলুল হক কলেজ ও রাজশাহী কলেজের প্রাক্তণ ছাত্র। মহান ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে, ১৯৫২ এর পরবর্তী সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ছাত্রনেতা হিসেবে অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমেদ কারাবরণও করেন। যুক্তরাষ্ট্র কেন্দ্রিক নব্বই দশকের সর্বাপেক্ষা ‘প্রশংসিত বাঙালি ব্যক্তিত’ ছিলেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য এবং উপাচার্য [নভেম্বর ১,১৯৯২-আগস্ট ৩১,১৯৯৬] হিসেবে দীর্ঘদিন সাফল্যের সাথে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বর্তমানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ (ইউডা) ভিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট