সিরিয়ায় রুশ সামরিক বিধ্বস্ত হয়ে অন্তত ৩২ জন নিহত

প্রকাশিত: ১:০৯ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ৭, ২০১৮

সিরিয়ায় রুশ সামরিক বিধ্বস্ত হয়ে অন্তত ৩২ জন নিহত

দামেস্ক: সিরিয়ায় রাশিয়ার একটি সামরিক বিধ্বস্ত হয়ে অন্তত ৩২ জন নিহত হয়েছে বলে খবর দিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো।

বিবিসির খবরে বলা হয়, নিহতদের মধ্যে ছয়জন বৈমানিক এবং ২৬জন যাত্রী রয়েছেন।

রাশিয়ার একটি সামরিক পরিবহন বিমান বিধ্বস্ত হয়ে অন্তত ৩২ জন নিহত হয়েছে। সিরিয়ার মেইমিম বিমানঘাঁটিতে অবতরণের সময় রুশ এই বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, বিধ্বস্ত বিমানের ২৬ যাত্রী ও ৬ জন ক্রু নিহত হয়েছে। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে বলে প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে।

মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মস্কোর স্থানীয় সময় বিকেল ৩টার দিকে ওই দুর্ঘটনা ঘটেছে। সিরিয়ার মেইমিম বিমানঘাঁটিতে অবতরণের সময় রাশিয়ার এএন-২৬ মালবাহী সামরিক বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে।

দুর্ঘটনায় বিমানের সব আরোহীর প্রাণহানি ঘটেছে বলে বিবৃতিতে নিশ্চিত করা হয়েছে। অবতরণের আগে রানওয়ে থেকে ৫০০ মিটার দূরে বিমানটি আঁছড়ে পড়ে। তবে দুর্ঘটনার আগে বিমানটিতে আগুন ধরেনি বলে রুশ সেনাবাহিনী জানিয়েছে।

সিরিয়ায় বিমান হামলায় ৩৪ বেসামরিক নাগরিক নিহত

সিরিয়ায় বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ঘাঁটি পূর্ব গৌতায় সরকারি বাহিনীর বিমান হামলায় শিশুসহ ৩০ জনের বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। পর্যবেক্ষক একটি সংস্থার তথ্যের বরাত দিয়ে সোমবার বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

মানবাধিকার বিষয়ক সিরীয় পর্যবেক্ষক সংস্থার প্রধান রামি আব্দেল রহমান জানান, পূর্ব গৌতায় রোববার আসাদ বাহিনীর রকেট হামলায় ৩৪ বেসামরিক লোক নিহত হয়। নিহতদের মধ্যে ১১ শিশু রয়েছে।

তিনি আরও জানান, হামলায় গৌতার প্রধান নগরী দৌমা ও এর পূর্বাঞ্চলীয় শহরতলীতে ২৬ জন নিহত হয়।

সংস্থাটি জানায়, গত ১৫ দিন ধরে গৌতায় সরকারি বাহিনীর বিমান হামলা, গোলা বর্ষণ ও রকেট হামলায় ৬৯০ জনের বেশি বেসামরিক লোক প্রাণ হারিয়েছে।

রোববার সিরীয় প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ বলেন, তার বাহিনী বিদ্রোহীদের কবল থেকে পূর্ব গৌতাকে অবশ্যই পুনরুদ্ধার করবে।

আন্তর্জাতিক বাহিনীর পক্ষ থেকে ওই এলাকায় রক্তপাত বন্ধের আহ্বানের মাঝেই তার কাছ থেকে এমন ঘোষণা আসে।

পূর্ব গৌতায় সামরিক অভিযান অব্যাহত রাখার ঘোষণা আসাদের
সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের নিকটবর্তী পূর্ব গৌতায় বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সেনা অভিযান অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। এটি তার দেশের সন্ত্রাস বিরোধী যুদ্ধের অংশ বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।

রবিবার রাতে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে সম্প্রচারিত এক ভাষণে আসাদ এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাব… এবং এ যুদ্ধের ধারাবাহিকতায়ই গৌতায় অভিযান চালানো হচ্ছে।’

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, যুদ্ধবিরতি এবং সামরিক অভিযানের মধ্যে কোনো সাংঘর্ষিক বিষয় নেই। সংঘর্ষের মধ্যেই গত দু’দিনে সিরিয়ার সেনাবাহিনী বেসামরিক নাগরিকদের সরে যাওয়ার সুযোগ দিয়েছে।

রাশিয়ার প্রস্তাবনায় প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত পূর্ব গৌতায় যে মানবিক যুদ্ধবিরতি থাকে সেকথা উল্লেখ করে এ মন্তব্য করেন প্রেসিডেন্ট আসাদ। ওই অঞ্চলে আটকে পড়া বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়ার সুযোগ দিতে প্রতিদিন এ যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট এ সম্পর্কে আরো বলেন, বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়ার সুযোগ দেয়ার পাশাপাশি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান চলতে থাকবে।

পূর্ব গৌতায় মানবিক পরিস্থিতির ব্যাপারে পাশ্চাত্যের উদ্বেগকে তিনি ‘হাস্যকর মিথ্যা অভিযোগ’ বলে নাকচ করে দেন। প্রেসিডেন্ট আসাদ বলেন, ‘কিছুদিন পরপরই পাশ্চাত্য মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে যেসব বক্তৃতা-বিবৃতি দেয় তা অত্যন্ত হাস্যকর মিথ্যা। পশ্চিমা নেতাদের মতোই তাদের দাবিগুলিও হাস্যকর।’

সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের কাছে জঙ্গি নিয়ন্ত্রিত পূর্ব গৌতায় এলাকায় প্রায় চার লাখ মানুষ বসবাস করেন। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে সেখানে সিরিয়ার সেনাবাহিনীর সঙ্গে এলাকাটি নিয়ন্ত্রণকারী বিদ্রোগীদের ভয়াবহ সংঘর্ষ হচ্ছে।

রাশিয়া ও সিরিয়া শুরু থেকেই যুদ্ধবিরতির সময় বিদ্রোহীরা বেসামরিকদের বের হতে দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছে; বিদ্রোহীরা এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, সরকারকে ভয় পাওয়ার কারণেই সাধারণ মানুষ পূর্ব গৌতা ছাড়ছে না।

দুই পক্ষের এমন অবস্থানের কারণে ওই এলাকার সাধারণ মানুষ ‌’যৌথ শাস্তির’ সম্মুখীন হচ্ছেন, যা জেনেভা কনভেনশনের বিরোধী বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক এক কর্মকর্তা।

আট বছর ধরে চলা যুদ্ধে রাজধানীর পাশে বিদ্রোহ অধ্যুষিত এ এলাকার নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাওয়াটা সরকারিবাহিনীর জন্য বিরাট বিজয় হিসেবে চিহ্নিত হবে; ইরান ও রাশিয়ার সমর্থন নিয়ে এরই মধ্যে আসাদবাহিনী বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা সিরিয়ার বেশিরভাগ এলাকা পুনরুদ্ধারে সক্ষম হয়েছে।

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট