ইউনেস্কোর তালিকায় বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ

প্রকাশিত: ২:৪৮ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৩১, ২০১৭

ইউনেস্কোর তালিকায় বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ

ইউনেস্কোর একটি উপদেষ্টা কমিটি ১৯৭১ সালের ৭ মার্চে দেয়া বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণটিকে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ প্রামান্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এ ধরনের দলিলগুলো যে ‘মেমোরি অব দা ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টারে’ অন্তর্ভুক্ত করা হয় সে তালিকায় এ ভাষণটিকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। খবর বিবিসির।

ইউনেস্কোর ওয়েবসাইটে ওই তালিকায় এখন ৭ মার্চের ভাষণের বিষয়টি দেখাও যাচ্ছে। সংস্থাটির যে উপদেষ্টা কমিটি এ মনোনয়ন দিয়েছে সেই কমিটির বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের ন্যাশনাল আর্কাইভসের মহাপরিচালক ড: আব্দুল্লাহ আলরাইসি।

প্যারিসে ইউনেস্কো সদর দপ্তরে ওই বৈঠকে তিনি ছাড়াও উপদেষ্টা কমিটির আরো ১৪ জন সদস্য ছিলেন যারা সবাই বিশ্বখ্যাত বিশেষজ্ঞ । সারা বিশ্ব থেকে আসা প্রস্তাবগুলো দু বছর ধরে নানা পর্যালোচনার পর উপদেষ্টা কমিটি তাদের মনোনয়ন চূড়ান্ত করে বলে ইউনেস্কোর ওয়েবসাইটে উল্লেখ করা হয়েছে।

মূলত এর মাধ্যমে বিশ্ব জুড়ে যেসব তথ্যভিত্তিক ঐতিহ্য রয়েছে সেগুলোকে সংরক্ষণ এবং পরবর্তী প্রজন্মের যাতে তা থেকে উপকৃত হতে পারে সে লক্ষ্যেই এ তালিকা প্রণয়ন করে ইউনেস্কো।

ওদিকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে যে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণকে ওয়ার্ল্ডস ডকুমেন্টারি হেরিটেজ-এ অংশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। ভাষণটি মেমোরি অব দা ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টারে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। ইউনেস্কো মহাপরিচালক ইরিনা বোকোভা ৩০শে অক্টোবর এ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী বলেছেন, ‘এখন বিশ্ব আরো বেশি করে আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও গৌরবময় স্বাধীনতা যুদ্ধ সম্পর্কে জানতে পারবে।’

মেমোরি অব দা ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টারে এখন পর্যন্ত অন্তর্ভুক্ত হয়েছে সব মহাদেশ থেকে ৪২৭টি গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টস বা কালেকশন।

কি ছিলো ৭ মার্চের ভাষণে?
৪৫ বছর আগে ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ এসেছিল এক ধারাবাহিক রাজনৈতিক আন্দোলনের পটভূমিতে। সেদিনের ১৮ মিনিটের ভাষণে শেখ মুজিব বলেছিলেন ‘’এবারের সংগ্রাম, মুক্তির সংগ্রাম। এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ ওই ভাষণে তিনি বলেছিলেন, ‘ঘরে ঘরে দূর্গ গড়ে তোলো। তোমাদের যার যা কিছু আছে, তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকো।’

অনেকেই বিশ্বাস করেন এই বক্তব্যের মাধ্যমে শেখ মুজিবুর রহমান একটা গেরিলা মুক্তিযুদ্ধের দিক নির্দেশনা দিয়েছিলেন। জনসভায় ছিলেন এমন অনেকে বলেছেন, লাঠি, ফেস্টুন হাতে লাখ লাখ মানুষ উত্তপ্ত শ্লোগানে মুখরিত থাকলেও শেখ মুজিবের ভাষণের সময় সেখানে ছিল পিনপতন নিরবতা।

ভাষণ শেষে আবার স্বাধীনতার পক্ষে শ্লোগান মুখর হয়ে উঠেছিল ঢাকার রাস্তাগুলো।