ফেনীতে খালেদা জিয়া’র গাড়িবহরে হামলা-ভাঙচুর

প্রকাশিত: ৭:০৭ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৮, ২০১৭

ফেনীতে খালেদা জিয়া’র গাড়িবহরে হামলা-ভাঙচুর

২৮ অক্টোবর ২০১৭, শনিবার : মায়ানমারের নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের দেখতে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে ফেনীতে হামলার মুখে পড়েছে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গাড়িবহর। ফেনী শহরে প্রবেশের আগ মুহূর্তে তার গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসময় বহরে থাকা সংবাদমাধ্যম ও বিএনপির সহযোগী সংগঠনের নেতাদের বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে।

শনিবার বিকালে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম পেরিয়ে ফেনী জেলার সীমানার শুরুতে মোহাম্মদ আলী বাজারে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

আক্রান্ত সংবাদকর্মী ও বিএনপি নেতারা জানান, বিকাল পৌনে ৫টার দিকে বিএনপি চেয়ারপারসনের গাড়িসহ বহরের একাংশ মোহাম্মদ আলী বাজার অতিক্রমের পরপরই ১৫-২০ যুবক লাঠিসোঁটা নিয়ে সড়কে উঠে আসে।

এসময় তারা হামলা চালিয়ে একাত্তর, ডিবিসি, চ্যানেল আই ও বৈশাখী টেলিভিশনের গাড়ি ভাঙচুর করে। হামলায় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের তিনটি গাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

দুর্বৃত্তরা ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। এদের কারও কারও হাতে আগ্নেয়াস্ত্রও দেখা গেছে।

হামলায় একাত্তর টিভির শফিক আহমেদ, বৈশাখী টিভির গোলাম মোর্শেদ এবং ডিবিসি’র ক্যামেরাপারসনসহ কমপক্ষে পাঁচজন আহত হন।

শফিক আহমেদ জানান, ৪০ থেকে ৫০ জন ছেলে লাঠিসোঁটা নিয়ে অতর্কিতে তাদের গাড়ির ওপর হামলা চালায়। এসময় তাকে ও চিত্রগ্রাহক আলম হোসেনকে তারা মারধর করা হয় এবং ক্যামেরা ভেঙে ফেলা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, এখনো রাস্তায় হামলাকারী দুর্বৃত্তরা অবস্থান করছেন। মূলত স্টার লাইন পেট্রল পাম্পের কাছে তারা জড়ো হয়ে আছে।

এর আগে দুপুর একটায় কুমিল্লায় খালেদা জিয়াকে শুভেচ্ছা জানানোর জন্য আসা বিএনপি নেতা কর্মীদের ওপর হামলা করে স্থানীয় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীরা। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। খালেদা জিয়ার গাড়িবহর ওই বিকেল ৪টার দিকে অতিক্রম করে।

এর আগে সকাল বেলা সাড়ে ১০টার পরে গুলশানের বাসভবন থেকে তাকে বহনকারী গাড়িবহর রওনা হয়।

ফেনীতে প্রবেশের সাথে সাথে হাজার হাজার নেতাকর্মী খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানান। সার্কিট হাউজে পৌঁছানোর পরপরই সেখানে নেতাকর্মীদের ঢল নামে। শ্লোগানে শ্লোগানে সার্কিট হাউজের আশপাশ মুখরিত হয়ে উঠেছে।

নেতাকর্মীদের ভিড়ে চট্টগ্রামমুখী মহাসড়কের অর্ধেক ছিল তাদের দখলে। প্রায় ১ কিলোমিটারের বেশি স্থান জুড়ে কুমিল্লা ও আশেপাশের এলাকার নেতাকর্মীরা প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন, ব্যানার নিয়ে স্লোগান দেয়।

সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত খালেদা জিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করে তাদের মধ্যে ত্রাণ সহায়তা দিবেন।

এই কর্মসূচি সফলে সরকারের সহযোগিতা চেয়ে ফখরুল সকালে বলেছিলেন, ‘আমরা আশা করি, পথিমধ্যে সরকারের সব ধরনের সহযোগিতা পাব। পুলিশ মহাপরিদর্শক আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন, তারা দেশনেত্রীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন এবং তার সফর যাতে সুন্দরভাবে হয়, তাতে সহযোগিতা করবেন।’
বিএনপি মহাসচিব জানান, খালেদার এই সফরে ১০ হাজার রোহিঙ্গা পরিবারের মধ্যে ত্রাণ বিতরণের পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।

রোহিঙ্গা সঙ্কট শুরুর পর সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে ২২ ট্রাক ত্রাণ নিয়ে কক্সবাজারের যাওয়ার পথে বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলকে আটকে দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, মায়ানমারের সেনাবাহিনী অভিযানের ঘোষণা দিয়ে আগে থেকেই রাখাইনের রোহিঙ্গা গ্রামগুলো অবরুদ্ধ করে রাখে। এরই মধ্যে রোহিঙ্গা যোদ্ধারা অন্তত ২৫টি পুলিশ পোস্ট ও একটি সেনা ক্যাম্পে গত ২৪ আগস্ট মধ্যরাতের পরে প্রবেশের চেষ্টা করলে শুরু হয় সংঘর্ষ।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট