২২শে মে, ২০২২ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ২:২৬ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৭
নাইপেদো : মায়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর দেশটির সেনাবাহিনী ও সরকার সমর্থকদের সহিংসতা ও নির্যাতন অব্যাহত আছে। রোহিঙ্গা গ্রামগুলো এখন মানবশূন্য। একের পর এক পুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে রোহিঙ্গা ঘর-বাড়ি। উপগ্রহের ছবিতে এর প্রমাণ মিলেছে। এসব কিছুতেই বিকার নেই সেনাবাহিনী ও অং সান সু চি প্রসাশনের।
এর মধ্যে রোহিঙ্গা ইস্যুতে অং সান সু চি’কে নিজের অবস্থান পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন মায়ানমারের নির্বাসিত আটজন নাগরিক। সু চির উদ্দেশে লেখা আবেগঘন এক খোলা চিঠিতে তারা এই আহ্বান জানান।
চিঠির লেখকেরা বলেন, জন্মস্থান মায়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতিতে দুঃখ ভাগাভাগি করতে তারা এই চিঠি লিখছেন। চিঠিতে সু চি’র ব্যক্তিগত উত্তরাধিকার, জনগণের দুর্দশা এবং জাতি হিসেবে মায়ানমারের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
১৯৮৮ সালে সু চি’র দেওয়া প্রথম বক্তৃতার প্রসঙ্গ টেনে লেখকেরা বলেন, জনগণ যতদিন নিপীড়নের শিকার হতে থাকবে, ততদিন কথা বলবেন বলেছিলেন। তার এই সংকল্প ও সাহসিকতায় তারা (লেখকেরা) দারুণভাবে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন।
লেখকেরা বলেন, তাদের বাবা-মা ও প্রজন্মের কাছ থেকে সু চির জীবন উৎসর্গকারী বাবা যে ভালোবাসা, সম্মান ও বিশ্বাস অর্জন করেছিলেন; লাখো বার্মিজের মতো তারাও তা তাকে (সু চি) দিয়েছেন।
সু চির দীর্ঘ গৃহবন্দীর কথা উল্লেখ করে লেখকেরা বলেন, ওই সময় তারা তার (সু চি) পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। সু চির স্বাধীনতা এবং নেতৃত্বের সমর্থনে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আন্দোলন গড়তে তারা ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগতভাবে যথাসাধ্য সবকিছু করেছিলেন।
সামরিক জান্তার নিপীড়ন বন্ধে সু চির ডাকে রোহিঙ্গাসহ জাতি-ধর্মনির্বিশেষে সবাই সাড়া দিয়েছিল বলে চিঠিতে উল্লেখ করেছেন লেখকেরা। তারা বলেন, সু চি যখন মুক্তি পান, তখন তারা উৎফুল্ল হয়েছিলেন। গণতন্ত্রের লক্ষ্যে সু চি কীভাবে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেন, তার অপেক্ষায় ছিলেন তারা। কিন্তু তিনি তার দক্ষ সমর্থক ও সহযোগী ভিন্নমতাবলম্বীদের সঙ্গে কোনো আলোচনাই করেননি। বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাদারি পরামর্শের জন্য অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের ব্যাপারে কোনো আগ্রহই দেখাননি তিনি।
মায়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজনীতিবিদ সু চির বিবৃতিতে লেখকেরা মর্মাহত বলে জানিয়েছেন।
লেখকেরা সু চির সরকারের গঠন-প্রকৃতিতে উদ্বিগ্ন। তাদের মতে, সরকারে এনএলডির সর্বজন শ্রদ্ধেয় ও অভিজ্ঞ জ্যেষ্ঠ ব্যক্তি নেই। অভিজ্ঞ যারা আছেন, তারা সাবেক সেনা কর্মকর্তা। তারা সেই গোষ্ঠীর লোক, যারা সু চিকে বন্দী করেছিলেন, যারা গত ৫০ বছর জাতিকে নিপীড়ন করেছেন।
সু চির কাছে লেখকেরা প্রশ্ন তুলেন, আমরা কোন দিকে যাচ্ছি?
মায়ানমারের গণতান্ত্রিক রূপান্তর কি পুরোপুরি ঘুরে গেছে? মায়ানমার কি স্বৈরতন্ত্রে ফিরে গেছে?—এমন প্রশ্নও তুলেন লেখকেরা।
সু চিকে উদ্দেশ করে লেখকেরা বলেন, মায়ানমারে মুক্ত গণমাধ্যম উৎসাহিত করা উচিত। ভিন্ন মতাবলম্বীদের পদ দেওয়া উচিত। নীতি নিয়ে বিতর্ক হওয়া উচিত। জেনারেলদের সঙ্গে বিশ্বাস স্থাপনের পাশাপাশি দেশের সব জাতি-ধর্মের মধ্য থেকে পরবর্তী প্রজন্মের নেতা গড়া উচিত।
লেখকেরা বলেছেন, তারা জানেন, কাজটা সহজ নয়। কিন্তু সংস্কারের জন্য এগুলো গুরুত্বপূর্ণ। সু চি একা এই কাজগুলো করবেন, এমন কথা বলছেন না লেখকেরা। শক্তিশালী একটি দলের পক্ষেই এ কাজ করা সম্ভব।
সু চিকে তার বাবার স্মৃতি স্মরণ এবং সরকারে তার অবস্থান উল্লেখ করে লেখকেরা এই নেত্রীকে গণতান্ত্রিক নীতি ও মানবিক দিক বিবেচনায় একটি শক্ত অবস্থান গ্রহণের আবেদন জানিয়েছেন। তারা বলেন, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতার অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে। এ বিষয়ে কাজ করতে সু চির নৈতিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
সু চিকে উদ্দেশ করে লেখকেরা বলেন, তিনি এখনো ক্ষত নিরাময় করতে পারেন। ঐক্যর প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিতে পারেন। মায়ানমারের নির্বাচিত নেতা হিসেবে এ বিষয়ে সু চির উদ্যোগ আশা করছেন তারা।
সু চির মঙ্গল কামনা করে এবং তিনি শান্তির পথে হাঁটবেন—এই প্রত্যাশা জানিয়ে চিঠি শেষ করেন লেখকরা।
চিঠিটি লিখেন—কো অং (যুক্তরাজ্য), তুন অং (যুক্তরাষ্ট্র), কিন ওয়ং (অস্ট্রেলিয়া), বিলাল রাসিচিড (যুক্তরাষ্ট্র), ইউ কেয়া উইন (যুক্তরাষ্ট্র), হারান ইয়ানগি (কানাডা), মুং জার্নি (যুক্তরাজ্য) ও মোয়েথি জুন (যুক্তরাষ্ট্র)।
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
Managing Editor : Nizam u jaigirdar
Executive Editor : M A Malek
UK Correspondent : Moheuddin Alamgir USA Correspondent : Abul Kashem Murshed
Office : Central Market (1st floor),
Bandar Bazar (Court Point),
Sylhet – 3100, Bangladesh.
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01711912127
Design and developed by M-W-D