আশা-নিরাশার দোলাচলে হাসিনা-খালেদা

প্রকাশিত: ৯:০৭ অপরাহ্ণ, জুলাই ১২, ২০১৭

আশা-নিরাশার দোলাচলে হাসিনা-খালেদা

দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের দুই নেত্রীই আগামী নির্বাচনে সরকার গঠনে ‘আত্মবিশ্বাসী’ হয়ে উঠেছেন। আর সেভাবেই তারা নিজেদেরকে প্রস্তুত করছেন। তবে পরস্পরের বক্তব্যকে নাকচ করে দিচ্ছে দু’পক্ষই। সেইসঙ্গে দু’পক্ষের মধ্যেই একধরনের শঙ্কাও কাজ করছে বলে জানা যাচ্ছে। সমিলেই দু’পক্ষই আশা-নিরাশার দোলাচলে রয়েছে। এরপরও এ নিয়ে চলছে রাজনীতিতে আলোচনা-সমালোচনা।

জানা যাচ্ছে, একদিকে সু্ষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা রয়েছে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে, অন্যদিকে ২০০১ ধারায় ভোটবিপ্লবের শঙ্কায় রয়েছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এরপরও বিএনপি আশা করছে, অবাধ ও সুষ্ঠু হলে আগামী একাদশ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গঠন করবে তারা। আওয়ামী লীগ মনে করছে, গত সাড়ে আট বছরে তারা যে ধরনের উন্নয়ন করেছে তাতে জনগণই ভোট দিয়ে তাদেরকে ফের ক্ষমতায় আনবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত শনিবার তার সরকারি বাসভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সূচনা বক্তব্যে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে ২০২০ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করবে। তিনি বলেন, ‘আমরা ক্ষমতায় এসে অনেক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছি। আরো যেসব মেগা প্রকল্প হাতে নিয়েছি সেগুলো বাস্তবায়নে আওয়ামী লীগকে আরেক টার্ম ক্ষমতায় থাকা প্রয়োজন। কারণ, বিএনপি ক্ষমতায় আসলে লুটপাট করে, দেশের উন্নয়ন করে না।’

দলের অন্য শীর্ষ পর্যায়ের নেতারাও ফের সরকার গঠনের ব্যাপারে আশাবাদী। তবে নেতাদের মধ্যে ক্ষমতা হারানোর ভীতিও কাজ করছে।

গত ২৯ এপ্রিল চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি সম্মেলনে দলের নেতাকর্মীদের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সরকার ক্ষমতা হারালে নেতাকর্মীদের দেশ ছেড়ে পালাতে হবে। তাই সময় থাকতে অবৈধভাবে উপার্জন করা অর্থ দেশের উন্নয়নের জন্য ব্যয় করুন।’

তিনি এও বলেন, ‘অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ দিয়ে কী করবেন, যদি দল ক্ষমতায় না থাকে? দলকে ক্ষমতায় রাখতে এবং আগামী নির্বাচনে যাতে আওয়ামী লীগ আবারো জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসে, সে জন্য এসব অর্থ দেশের জন্য, জনগণের উন্নয়নের জন্য ব্যয় করুন।’

নেতাদের ‘খাই খাই ভাব’ পরিহার করার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘খাই খাই ভাব’ কর্মীদের মধ্যে নেই। কিন্তু নেতাদের মধ্যে আছে। নেতাদের এই ‘খাই খাই ভাব’ পরিহার করতে হবে।

গত রবিবার খুলনা জেলা স্টেডিয়ামে আওয়ামী লীগের খুলনা বিভাগীয় প্রতিনিধি সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ওবায়দুল কাদের  আরো বলেন, ‘আমি মন্ত্রী। আমার এপিএস, ভাই এবং আত্মীয়স্বজন যদি অপকর্ম করে, তবে আমি কি ভালো মানুষ? তাই আমি বলব, হয় এদের সংশোধন করুন, নাহয় এদের পরিহার করুন। গুটি কয়েক মানুষের জন্য আওয়ামী লীগের রাজনীতি কলুষিত হতে পারে না।’ নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে ক্ষতি করবেন না। খারাপ লোককে দলে ভেড়াবেন না। দল ভারী করে কোনো লাভ নেই। পদে না থাকলে কেউ সালাম দেবে না। ক্ষমতায় না থাকলে দাপট চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যাবে।’

এছাড়া মাঠ পর্যায়ের নেতাদের মধ্যেও ক্ষমতা হারারোর শঙ্কাও কাজ করছে। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোসলেম উদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘যদি আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতা হারায় তাহলে ওই রাতেই অন্তত ৫ লাখ নেতাকর্মীর লাশ পড়বে। তিনি বলেন বড় বড় নেতারা, যাদের পাসপোর্ট-ভিসা আছে, টাকা আছে তারা হয়তো বিদেশে পালিয়ে যেতে পারবে। বাকি নেতাকর্মীদের লাশ হতে হবে।’

গত শনিবার বিকেলে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা কার্যালয়ে কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন সংক্রান্ত এক বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যকালে এ আশঙ্কার  কথা ব্যক্ত করেন।

অন্যদিকে অবাধ ও সুষ্ঠু হলে আগামী একাদশ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গঠন করার ব্যাপারে খুবই ‘আত্মবিশাসী’ বিএনপি। এ বিষয়ে নেতানেত্রীদের বক্তব্যেই তা ফুটে উঠছে।

১৪ জুন এক অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, একতরফা নির্বাচন করে আওয়ামী লীগকে আর ক্ষমতায় যেতে দেয়া হবে না। এবার নির্বাচন হবে সকলের অংশগ্রহণে। হাসিনার (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। বেগম জিয়া বলেন, সামনে আসছে শুভ দিন, ধানের শীষে ভোট দিন।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ মনে করছিলো অতীতের মত একতরফা নির্বাচন করে আবার ক্ষমাতায় যাবে। না, তাদেরকে আর সে সুযোগ দেয়া হবে না। অনেক সুযোগ পেয়েছে, দেশটাকে উন্নয়নের নাম করে লুটেপুটে খাচ্ছে তারা।

খালেদা জিয়া তার বক্তব্যে এও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচনকে সবচেয়ে বেশি ভয় পায়। তারা ভাবছে আগামী নির্বাচনে চুরি করে ক্ষমতায় বসবে। না, তাদেরকে এবার চুরি করে ক্ষমতায় বসতে দেবে না জনগণ। এবার আওয়ামী লীগকে একতরফা ইলেকশন করতে দেয়া হবে না।

এর আগে ২১ মে ০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আন্দোলনে হতাহত নেতাকর্মীর ৯ পরিবারের সদস্যকে আর্থিক সহযোগিতা প্রদানকালে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেন,হত্যা-নির্যাতনের মাধ্যমে কোনো সরকার অতীতে কখনো বেশি দিন ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারেনি,ফলে এ সরকারও পারবে না। এদেরও সময় ঘনিয়ে এসেছে। অচিরেই এরা ক্ষমতা ছেড়ে পালাতে বাধ্য হবে।

তিনি আরো বলেন,বিএনপি সরকার গঠন করতে পারলে দেশে চলমান সব গুম-খুনের রহস্য উন্মোচন করে যথাযথ বিচার করা হবে। তিনি সরকারের জুলুম-নির্যাতনের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।

অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার দলের কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় আরো এক টার্ম ক্ষমতায় থাকার আশাবাদ একেবারেই নাকচ করে দিয়েছেন বিএনিপর সিনিয়র নেতারা। তারা বলছেন, আওয়ামী লীগের আরো এক টার্ম ক্ষমতায় থাকার ‘আশাবাদ’ আশা হিসেবেই থাকবে। এ রকম আশা তারা করতেই পারেন। তবে সেই আশা আর বাস্তবায়ন হবে না।

বিএনপি নেতারা বলেন, ‘একটি নিরপেক্ষধর্মী সরকারের অধীনে একাদশ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে কোনোভাবেই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের আরো ‘এক টার্ম’ ক্ষমতায় থাকার সুযোগ দেবে না জনগণ। আমাদের কাছে যে জরিপ আছে, তাতে দেখা যায় আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৩০টির বেশি আসন পায় না।’ তারা মনে করেন, আগামী নির্বাচনে জয়লাভের হাওয়া এখন ধানের শীষের অনুকূলে বইছে। ‘অন্যথা’ না হলে কোনোভাবেই এই জোয়ারকে ভিন্নপথে নেয়া যাবে না।

এ বিষয়ে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ৯ জুলাই ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সংগ্রহ অভিযানের এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, মানুষ পরিবর্তন চায়। এই সরকার মানুষের জীবনকে দুঃসহ ও অসহনীয় করে তুলেছে। তাদের সরিয়ে দেশের মানুষ অতীতে যারা আস্থা অর্জন করেছিল সেই বিএনপিকে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে দেখতে চায়। দেখতে চায় খালেদা জিয়াকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে।

এর আগে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল জুন মাসে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের এক আলোচনা সভায় বলেছিলেন, ‘নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ৩০টির বেশি আসন পাবে না।’

তিনি এর ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছিলেন, ব্যাপারটা হচ্ছে, আওয়ামী লীগের পায়ের তলায় মাটি নেই। তারা পুরোপুরিভাবে গণবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তারা খুব ভালো করে জানে, যদি সহায়ক সরকার বা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে ক্ষমতাসীনরা নির্বাচন দেয়, তাহলে তারা (আওয়ামী লীগ) ৩০টির বেশি আসন পাবে না।

বিএনপি ওই জরিপের প্রেক্ষিতে আগামী নির্বাচনে জয়লাভের লক্ষ্যে পুরোদমে নির্বাচনমুখী কাজ শুরু করে। তারা তাদের জেলা কমিটির মাধ্যমে প্রতিটি আসনের বিপরীতে ৩ জন সম্ভাব্য প্রার্থী ধরে ৯শ’ প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ শুরু করে। জনগণের বিপদের সময় তাদের পাশে থেকে কাজ করার জন্য কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে এক চিঠির মাধ্যমে দলীয় নেতাকর্মীদের জানিয়ে দিতে জেলা কমিটিগুলোকে নির্দেশনা দেয়া হয়। মাঠ অনুকুলে বিবেচনা করে ‘অযথা আন্দোলন-সংগ্রামের’ জন্য কোনো কর্মসূচি না দেয়ারও নীতিগত সিদ্ধান্ত রয়েছে দলটির।

একই সঙ্গে দলের নেতারা জানিয়েছেন, নির্বাচনকে সুষ্ঠু করতে যা যা করার তাই করবে দলটি। তারা বলেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) পুনর্গঠনে বিএনপি ১৩ দফা প্রস্তাব উপস্থাপন করেছিল। ভিশন-২০৩০ দেয়া হয়েছে। এখন ইসি যে সংলাপ করছে তাতেও বিএনপি অংশ নেবে। এছাড়া লন্ডন থেকে ফিরে খালেদা জিয়া নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারে রূপরেখা উপস্থাপন করবেন। এই রূপরেখায় বর্তমান সাংবিধানিক কাঠামোয় নির্বাচনকালীন সরকারের বেশ কয়েকটি বিকল্প প্রস্তাব থাকবে। এই বিকল্প কাঠামোর পাশাপাশি এসব নিয়ে সংলাপে বসে সমঝোতায় পৌঁছার আহ্বানও থাকবে ক্ষমতাসীন দলের প্রতি।

অন্যদিকে, সম্প্রতি দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে দেশকে একটি উচ্চমধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করতে একটি দীর্ঘমেয়াদী মহাপরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন।

এতে দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি, কৃষি-শিল্প ও শিক্ষা-সংস্কৃতি, ইতিহাস-ঐতিহ্যসহ সব সেক্টরে আমূল পরিবর্তনের কথা বলেছেন। খালেদা জিয়ার পরিকল্পনা থেকে বাদ যায়নি জাতির বিভক্তি ও প্রতিহিংসা নিরসনে জাতি গঠনে উন্নত গণতান্ত্রিক পথে দেশকে এগিয়ে নিতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়টেও। তিনি এটিকে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করে এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলেছেন।

গত ১০ মে সাংবাদিক সম্মেলনে ‘ভিশন ২০৩০’ নামে মহাপরিকল্পনায় তিনি এই পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন।

সহনশীল গণতন্ত্রের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করে তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেন, বিএনপি মনে করে বাংলাদেশের জনগণ মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যে রাষ্ট্র গড়ে তুলেছিল আজ সে রাষ্ট্রের মালিকানা তাদের হাতে নেই। তাই দেশের জনগণের হাতেই দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে চায় বিএনপি।

‘বিএনপি এমন এক উদার গণতান্ত্রিক সমাজ বিনির্মাণে বিশ্বাস করে যেখানে জাতীয় স্বার্থ সমুন্নত রেখে মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও নাগরিক অধিকার সুরক্ষিত হবে। যত সংখ্যালঘিষ্ঠই হোক না কেন, কোনো মত ও বিশ্বাসকে অমর্যাদা না করার নীতিতে বিএনপি দৃঢ় অঙ্গীকারাবদ্ধ।’

বেগম জিয়া বলেন, ‘আমরা ‘ওয়ান ডে ডেমোক্রেসিতে’ বিশ্বাসী নই। জনগণের ক্ষমতাকে কেবল নির্বাচনের দিন বা ভোট দেয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে চায়না বিএনপি। নিত্যদিনের জন-আকাঙ্ক্ষাকে মর্যাদা দিয়ে তাদেরকে স¤পৃক্ত করেই রাষ্ট্র পরিচালনা করবো আমরা।’

বেগম জিয়া আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে জোর দিয়েই বলেন, ‘শরতের আকাশে সাতটি রঙের বিচিত্র প্রভা নিয়ে রঙধনু যেভাবে মনোরম সৌন্দর্যের বিচ্ছূরণ ঘটায়, আমরা চাই সকল মত ও পথকে নিয়ে এমন একটি রাজনৈতিক সংস্কৃতি লালন ও পরিপুষ্ট করতে যে সংস্কৃতি বাংলাদেশকে একটি Rain-Bow Nation এ (রঙধনু-জাতিতে) পরিণত করবে।’