মওদুদের প্রতি অন্যায় আচরণ করা হচ্ছে, অন্যায়কারীরা পার পাবে না : খালেদা

প্রকাশিত: ২:০৪ পূর্বাহ্ণ, জুন ৮, ২০১৭

মওদুদের প্রতি অন্যায় আচরণ করা হচ্ছে, অন্যায়কারীরা পার পাবে না : খালেদা

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন,‘আজকে যাকে-তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হচ্ছে। মওদুদের সঙ্গে কী আচরণই না করছে? অথচ তাদের (আওয়ামী লীগ) নেতাকর্মীরা যার-তার বাড়ি দখল করছে, কিন্তু যাদের বাড়ি তাদেরকে ফিরিয়ে দিচ্ছে না।’

বুধবার অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (অ্যাব) আয়োজিত ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটির (বসুন্ধরা) পুষ্পগুচ্ছ হল রুমে এ ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়। সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ও দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।

ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের বাড়ি নিয়ে অন্যায় আচরণ করা হচ্ছে উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, হাসিনার অধীনে নির্বাচন হলে সেখানে সবার অংশগ্রহণ হবে না। নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। মানুষ পরিবর্তন চায়। নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়। হাসিনাকে সরিয়ে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, ‘মওদুদ আহমদ ৩০ বছর ওই বাড়িতে আছেন। আজকে তাকে রাস্তায় বের করেছে। আমিও যে বাড়িতে ৪০ বছর বসবাস করেছি, সে বাড়ি থেকে আমাকেও এক কাপড়ে বের করে দিয়েছে। তারা যে বাড়ি ঘর দখল করছে তা জনগণ দেখেছে। তাদেরকেও জনগণ এক কাপড়ে বিদায় করে দেবে। এরাও ভালোভাবে থাকতে পারবে না।’

খালেদা জিয়া বলেন, ‘দেশে কি অবস্থা সবাই জানেন। দেশের অবস্থা মোটেও ভালো নয়। যারা ক্ষমতায় বসে আছে তারা জোর করে গায়ের জোরে আছে। পুলিশ ও বিভিন্ন সংস্থা ব্যবহার করে তারা ক্ষমতায় বসে আছেন। মানুষের দুরাবস্থার দিকে নজর নেই তাদের। দেশের মানুষ ভালো খেতে পারে না। দেশের বেশিভাগ মানুষ বেকার, তারপরও এরা (আওয়ামী লীগ) বড় বড় কথা বলে। তারা মিথ্যা কথা বলে টিকে আছে।’

বেগম জিয়া আরো বলেন, ‘মানুষ চায় পরির্বতন। চায় আগামী দিনে সুষ্ঠু নির্বাচন। সেই নির্বাচন শেখ হাসিনার অধীনে নয়। হাসিনার অধীনে সকলে নির্বাচনে অংশ নিবে না। কমিশন চাইলে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারবে না। সেই জন্যই প্রয়োজন হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে নিবার্চনের ব্যবস্থা করা।’

ইসির উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বিনা ভোটে নির্বাচিত সরকারের চাটুকারিতা না করে, জনগণের চাহিদা অনুযায়ী সুষ্ঠু নির্বাচন করে তাদের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটান।’

ইফতার মাহফিলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান, অধ্যাপক আব্দুল মান্নান, ডা.এ জেড এম জাহিদ হোসেন, শওকত মাহমুদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, ড.মামুন আহমেদ, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শ্যামা ওবায়েদ, সহ-সহনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক নিলুফার চৌধুরী মনি,

পেশাজীবীদের মধ্যে প্রকৌশলী আ ন হ আক্তার হোসেন, প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রো-ভিসি অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (একাংশ) সভাপতি কবি আব্দুল হাই শিকদার, শিক্ষক নেতা অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া, জাকির হোসেন, সাংবাদিক এম এম আজিজ, মাহফুজ উল্লাহ, সৈয়দ আবদাল আহমেদ, কাদের গনি চৌধুরী প্রমুখ।

ইফতারের পর সন্ধ্যা ৮টার দিকে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) নিয়ন্ত্রণে নেয়া ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের গুলশানের বাসার সামনে হাজির হন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। রাজউকের নিয়ন্ত্রণে নেয়া ওই বাড়ির মূল ফটকে দাঁড়িয়ে তাকে সান্তনা দিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।

খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘একজন সিনিয়র রাজনীতিবীদ, ভাষাসৈনিক মওদুদ আহমদের সঙ্গে সরকার যে আচরণ করেছে এটা জঙ্গি আচরণ।’

জানা যায়, বুধবার সন্ধ্যায় বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারে অ্যাব আয়োজিত ইফতার শেষ করে সরাসরি গুলশানের ২ নম্বরের মওদুদ আহমদকে যে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে তার সামনে যান খালেদা জিয়া। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদও তখন সেখানে আসেন। পরে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে খালেদা জিয়া রাজনৈতিক সহকর্মীকে সান্ত্বনা দেন।

তিনি বলেন, ‘ধৈর্য ধরতে হবে। সরকার যা করেছে এটা জঙ্গি আচরণ। সরকার যা করেছে এটা বেআইনি। এর বিচার একদিন হবেই।

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট