২৩শে জানুয়ারি, ২০২১ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই মাঘ, ১৪২৭ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১:৫০ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৩, ২০১৭
দ্বিতীয় দফায় সাময়িক বরখাস্ত হওয়া সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। পাশাপাশি রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলও ফের আইনি লড়াইয়ে নামতে যাচ্ছেন। শিগগিরিই স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করবেন তিনি।
এ বিষয়ে মেয়র আরিফুল বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ের এই সিদ্ধান্তের চিঠি আমি এখনো পাইনি। চিঠি পাওয়ার পর আমি আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালিয়ে যাবো। একইসঙ্গে জনগণের কাছেও আমি বিচার দিলাম।’
তিনি বলেন, ‘বহিষ্কার করা হলেও আমি সিলেটের মেয়র। জনগণের ভোটে আমি নির্বাচিত মেয়র। মন্ত্রণালয় আমার দপ্তর কেড়ে নিয়েছে। কিন্তু জনগণের ভোট তো কেড়ে নিতে পারবে না।’
তিনি আরো বলেন, ‘জনগণের ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিকে যদি এভাবে কথায় কথায় মামলার আসামি করা হয়, বরখাস্ত করা হয়, জনগণ থেকে দূরে সরিয়ে রাখা হয়- তবে সেটা মোটেই মঙ্গলজনক নয়। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় জনপ্রতিনিধিদের কাজ করার সুযোগ না দিলে তা রাষ্ট্রের জন্য অশনি সংকেত।’রবিবার সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে ফের সাময়িক বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সিটি করপোরেশন অ্যাক্ট অনুযায়ী উপ-সচিব মো. মাহমুদুল আলম স্বাক্ষরিত এক ফ্যাক্স বার্তায় সিলেট সিটি করপোরেশনে পাঠানো হয়েছে।
দীর্ঘ আইনি লড়াই শেষে মেয়রের পদ ফিরে পেয়ে ওই দিন সিলেট সিটি করপোরেশনে মেয়রের চেয়ারে বসেন তিনি। মেয়রের চেয়ারে বসার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ফের মেয়রের পদ থেকে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।
সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হাবীব মন্ত্রণালয়ের ফ্যাক্স বার্তার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, ‘আরিফুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে বিশেষ ট্রাইব্যুনালে মামলার সম্পূরক অভিযোগপত্র গত ২২ মার্চ আদালতে গৃহীত হয়েছে। সেহেতু সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে স্থানীয় সরকার বিভাগ আইন ২০০৯-এর ১২ উপধারা প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।’
বিশেষ ট্রাইব্যুনালের ওই মামলাটি প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের জীবদ্দশায় দিরাইয়ে একটি জনসভায় বোমা হামলা সংক্রান্ত।
সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা ও সুরঞ্জিত সেনের জনসভায় বোমা হামলার ঘটনায় দায়ের করা ৪টি মামলায় পর্যায়ক্রমে উচ্চ আদালত থেকে জামিন লাভ করেন আরিফুল হক চৌধুরী। দুই বছর চার দিন কারাগারে থাকার পর চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি সবকয়টি মামলায় জামিনে মুক্ত হন তিনি। গত ১৩ মার্চ তার রিটের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের বরখাস্তের আদেশ ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে। রাষ্ট্রপক্ষ এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করলে গত ২৩ মার্চ হাইকোর্টের দেয়া আদেশই বহাল রাখে আপিল বিভাগ। ওই আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার নগর ভবনে গিয়ে ফের মেয়রের দায়িত্ব গ্রহণ করেন আরিফুল হক চৌধুরী।
এদিকে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল শিগগিরিই স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করবেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মেয়রের ব্যক্তিগত সহকারী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ সালাম বিপ্লব।
তিনি বলেন, যে কারণ দেখিয়ে মেয়র বুলবুলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে সেটিকে আদালত অবৈধ ঘোষণা করেছিল এবং বরখাস্তের আদেশটি বাতিলের নির্দেশ দেয়।
রবিবার ২৩ মাস পর রাসিক মেয়র বুলবুল রায়ের কপি নিয়ে দায়িত্ব নিতে যান। কিন্তু কক্ষ তালাবদ্ধ থাকায় উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে রাসিকের কয়েকজন কর্মকর্তাকে নিয়ে মেয়র ও বিএনপিপন্থী কাউন্সিলররা এসে তাদের সঙ্গে কথা বলেন। এসময় বিএনপির কাউন্সিলররা রাসিকের কর্মকর্তাদের তালা খুলতে বললে তারা অপরগতা জানালে উত্তেজনা দেখা দেয়। দুপুর ১টার দিকে মেয়রের কার্যালয়ের তালা ভাঙা হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন রাসিকের প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল হক ও বোয়ালিয়া থানার ওসি শাহদাত হোসেন খানসহ রাসিকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। কার্যালয় খোলার পরে সবকিছু ঠিক আছে কিনা তা সচিব এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে এবং পুলিশের উপস্থিতিতে দেখা হয়।
বিকেল ৩টার দিকে মেয়র বুলবুল তার চেয়ারে বসেন। আর বিকেল ৩টা ৫ মিনিটে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার ফ্যাক্সে মেয়রকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ আসে। আদেশের খবর শুনে তিনি বেরিয়ে যান।
রবিবার ফ্যাক্সে পাঠানো স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব আনোয়ার পাশা স্বাক্ষরিত জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, মেয়র বুলবুলের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার অভিযোগপত্র আদালতে গৃহীত হয়েছে। আর স্থানীয় সরকারের (সিটি করপোরেশন) ২০০৯ সালের আইনে মেয়রের নামে মামলার অভিযোগপত্র আদালতে গৃহীত হলে তাকে বরখাস্তের বিধান রয়েছে। তাই মেয়র বুলবুলকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলো।
মেয়র বুলবুল জনান, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় যে কারণ দেখিয়ে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে সেটিকে অবৈধ ঘোষণা করে বরখাস্তের আদেশটি বাতিল করে আদালত। যেহেতেু সুপ্রিম কোর্ট এবং হাইকোর্টের রায় তার (মেয়র) পক্ষে আছে, তাই আবারো আইনি লড়াই শুরু করবেন। তবে কবে নাগাদ করবেন তা জানাননি মেয়র।
মেয়র বুলবুল অভিযোগ করে বলেন, ‘কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী ও কাউন্সিলর সেবামূলক প্রতিষ্ঠান রাসিককে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছেন। গত দুই বছর এসব কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে চলেছে প্রতিষ্ঠানটি। যে কাউন্সিলর দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র হয়েছিলেন আমি বসেই দেখতে পেয়েছি তার নামে দুর্নীতির অভিযোগ। তাহলে সহজেই বোঝা যায় গত দুই বছরে সিটি করপোরেশনের সেবা থেকে জনগণ বঞ্চিত হয়েছে। সাধারণ জনগণের সেবা প্রাপ্তির জায়গাটি অবমূল্যায়িত হয়েছে। এই অনিয়ম, দুর্নীতি ও ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত যারা আছেন, আগামী দিনে জনগণের কাছে তাদের কৈফিয়ত দিতে হবে।’
রাসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. শরীফ উদ্দীন রবিবার সাংবাদিকদের বলেন, কে বা কারা মেয়রের কক্ষে তালা দিয়ে গেছে তিনি জানেন না। চাবি না থাকায় তিনি খুলতে পারেননি। তবে আদালত অবমননার প্রশ্নে তিনি বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে যান।
EDITOR & PABLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
Executive Editor : M A Malek
UK Correspondent : Moheuddin Alamgir USA Correspondent : Abul Kashem Murshed
Office : Central Market (1st floor),
Bandar Bazar (Court Point),
Sylhet – 3100, Bangladesh.
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01711912127
Design and developed by M-W-D