৭ই মার্চ, ২০২১ খ্রিস্টাব্দ | ২২শে ফাল্গুন, ১৪২৭ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১:৫৫ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২, ২০১৬
লুই আই কানের করা জাতীয় সংসদ ভবনের মূল নকশাটি বুঝে পেয়েছে জাতীয় সংসদ সচিবালয়। নকশা পাওয়ার পরেই জিয়াউর রহমানের কবরসহ ওই এলাকার অন্য সব স্থাপনা সরানোর ঘোষণা ছিল সরকারের।
যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া ইউনিভার্সিটির আর্কাইভে রক্ষিত ৮৫৩টি নকশা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সংসদ ভবনে এসে পৌঁছে। সংসদ সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব আ ই ম গোলাম কিবরিয়া নকশাগুলো গ্রহণ করেন।
নকশাগুলো খতিয়ে দেখে দ্রুত সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরসহ সব নকশাবহির্ভূত স্থাপনা উচ্ছেদের কার্যক্রম শুরু হবে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার রাতে টেলিফোনে লুই কানের নকশাগুলো জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে পৌঁছানোর খবর নিশ্চিত করেন অতিরিক্ত সচিব আ ই ম গোলাম কিবরিয়া।
তিনি জানান, অনেক চেষ্টার পর নকশাগুলো দেশে এসে পৌঁছেছে। সন্ধ্যায় সচিবালয়ের পক্ষ থেকে সেগুলো গ্রহণ করা হয়। তিনি বলেন, এখনো ভালোভাবে দেখা হয়নি। নকশা নিয়ে দ্রুতই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বৈঠক করবেন। এরপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সংসদ সচিবালয় সূত্র জানায়, লুই আই কানের মূল নকশা না থাকার কারণে সংসদ ভবন এলাকার উন্নয়ন কার্যক্রম আটকে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজির পর যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া ইউনিভার্সিটির আর্কাইভে এগুলোর সন্ধান মেলে। এরপর কানের উত্তরসূরিদের কাছ থেকে নকশা সংগ্রহের বিষয়ে সম্মতি নেওয়া হয়।
সূত্র আরো জানায়, গত ২৯ মে জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব আ ই ম গোলাম কিবরিয়ার নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল যুক্তরাষ্ট্রে যায়। এ দলে ছিলেন স্থাপত্য অধিদপ্তরের প্রধান স্থপতি কাজী গোলাম নাসির, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (উন্নয়ন শাখা-৯) মো. মনিরুজ্জামান, গণপূর্ত অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আহসান হাবিব ও স্থাপত্য অধিদপ্তরের সহকারী স্থপতি সাইকা বিনতে আলম। তারা নকশাগুলো দেশে আনার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন করেন।
গত ২৯ মার্চ নকশা আনার প্রক্রিয়া নিয়ে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে যৌথ সভা হয় সংসদে। সভা শেষে স্পিকার সাংবাদিকদের জানান, পরিকল্পনা কমিশনের বৈঠকের সিদ্ধান্ত ছিল নকশাগুলো আনার। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এগুলো আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে এগুলো খুঁজে বের করতে তিন হাজার ৫৫০ মার্কিন ডলার ব্যয় করতে হয়েছে। সেখানে আট হাজার নকশা ও দলিল আছে।
তবে সব কটি দরকারি নয়। ৮৫৩টি নকশা দরকার বলে তারা স্থাপত্য অধিদপ্তরকে জানিয়েছে। এগুলোই আনা হবে। এ ছাড়া ১১৫টি নকশা আছে, যেগুলোর ভিত্তিতে এখনো ভবন হয়নি। ওগুলোর জন্য ৬০ হাজার ডলারের মতো লাগবে।
সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তারা জানান, ১৯৭৪ সালে লুই আই কান যখন মূল নকশাটি করেন তখন ২৭টি মন্ত্রণালয়ের জন্য এ পরিকল্পনা করা হয়েছিল। সেসব নকশায় মসজিদ ছিল, মাঝে বাগান ছিল, চন্দ্রিমা উদ্যানের ওখানে একটি বড় সড়ক ছিল, এর সামনে লেক ছিল, এরপর সংসদ ভবন ছিল। ২০৮ একর জায়গার ওপর জাতীয় সংসদ ভবন নির্মাণের নকশা করা হয় প্রথম ধাপে। এর সামনে ও পেছনে বিস্তীর্ণ সবুজ খোলা মাঠ।
চারদিকে আট লেনের সড়ক, মাঝখানে লেক। দ্বিতীয় ধাপে লেকের পর বিস্তীর্ণ সবুজ মাঠের পরিকল্পনা করা হয়। বাকি জায়গায় সচিবালয়, লাইব্রেরি, জাদুঘর, হাসপাতাল ও সাংস্কৃতিক বলয় গড়ে তোলার কথা।
কিন্তু নকশার ব্যত্যয় ঘটিয়ে মধ্যবর্তী এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছে মাজার ও কবরস্থান। সংসদ ভবনের উত্তরে ৭৪ একর আয়তনের চন্দ্রিমা উদ্যানের মাঝে বিশাল এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজার কমপ্লেক্স। আর সংসদ ভবনের দক্ষিণ-পশ্চিম কোনায় মানিক মিয়া এভিনিউয়ের পশ্চিম প্রান্তে পাঁচ বিঘার বেশি জায়গায় করা হয়েছে ‘জাতীয় কবরস্থান’। সেখানে সাতজনকে সমাহিত করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, লুই আই কানের নকশা অমান্য করার প্রক্রিয়া এখানেই থেমে থাকেনি। নকশা উপেক্ষা করে আসাদ গেটের উল্টো দিকে সংসদ ভবনের জায়গায় স্থাপন করা হয় পেট্রল পাম্প। বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট সরকার মূল সংসদ ভবনের পাশে খোলা সবুজ চত্বরে স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের বাসভবন নির্মাণ করে।
নকশা দেখে অবিহিত সব স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে বলে ইতিমধ্যে জানিয়েছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।
উল্লেখ্য, লুই আই কানের মূল নকশা অনুযায়ী, ১৯৭৪ সালে শেরেবাংলানগরে ৪২ একর জায়গায় জাতীয় সচিবালয় নির্মাণের জন্য সরকার ও মার্কিন কম্পানি ডেভিড উইসডম অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের মধ্যে চুক্তি হয়। পরে এ বিষয়ে আর অগ্রগতি হয়নি। সর্বশেষ সংসদ কমিশনের বৈঠকে নকশা পুরোপুরি বাস্তবায়নের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
EDITOR & PABLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
Executive Editor : M A Malek
UK Correspondent : Moheuddin Alamgir USA Correspondent : Abul Kashem Murshed
Office : Central Market (1st floor),
Bandar Bazar (Court Point),
Sylhet – 3100, Bangladesh.
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01711912127
Design and developed by M-W-D