২৬শে জানুয়ারি, ২০২১ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই মাঘ, ১৪২৭ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১:৫৫ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২১, ২০১৬
শেষ পর্যন্ত কি মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দিচ্ছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম? দুই সপ্তাহ ধরে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে এই গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প, বিটিসিএলের এমডি নিয়োগ এবং আন্তর্জাতিক কলের রেট নির্ধারণ নিয়ে টেলিযোগাযোগ খাতের প্রভাবশালী একাধিক পক্ষের সঙ্গে মতবিরোধ চরম পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়ার কারণেই তিনি মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দিতে পারেন।
সোমবার দৈনিক সমকাল পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনটি হুবহু তুলে ধরা হলো।
এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, গত এক বছরে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বেশ কিছু কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে তাকে। বিশেষ করে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিমকার্ড নিবন্ধনের ফলে ভিওআইপি প্রযুক্তি ব্যবহার করে অবৈধ আন্তর্জাতিক কল আদান-প্রদান প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।
এ কারণে অবৈধ আন্তর্জাতিক কল ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত অনেকেই তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়েছেন। দেশের স্বার্থ রক্ষা করে আন্তর্জাতিক কল রেট নির্ধারণকে গুরুত্ব দেওয়াটাও অনেকের পছন্দ হয়নি। এই মহলটিই এ ধরনের গুঞ্জন ছড়াতে পারে। তবে গুঞ্জন গুঞ্জনই। সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধানমন্ত্রী। তার প্রতি আমার পুরোপুরি আস্থা রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব দিয়েছেন। সততার সঙ্গে আমি তা পালন করছি। সমঝোতা করে দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করিনি, করবও না। প্রয়োজনে দায়িত্ব ছাড়তেও দ্বিধা করব না।
কেন এই গুঞ্জন
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমের মন্ত্রিত্ব ছাড়ার গুঞ্জন প্রবল হয়েছে সর্বশেষ বিটিসিএলের এমডি নিয়োগের পর থেকে। এ নিয়োগের বিরুদ্ধে ছিলেন প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। গত ১৬ নভেম্বর বিটিসিএলের এমডি হিসেবে দু’বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পান মাহফুজ উদ্দিন আহমেদ। প্রায় এক বছর আগে তিনি বিটিসিএলের ভারপ্রাপ্ত এমডি হিসেবে অবসরে গিয়েছিলেন। তার সময়ে বিটিসিএলের নেটওয়ার্ক আধুনিকীকরণের আলোচিত টিএনডিপি প্রকল্প থেকে অনিয়মের অভিযোগ তুলে প্রায় তিনশ’ কোটি টাকার ঋণ সহায়তা প্রত্যাহার করেছিল জাপানের আন্তর্জাতিক সংস্থা জাইকা।
এ নিয়ে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় এবং সমালোচনার ঝড় বয়ে যায় টেলিযোগাযোগ খাতে। পরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশে গঠিত তদন্ত কমিটিতে জাইকার ঋণ ফেরত যাওয়ার নেপথ্যে এমডি মাহফুজ উদ্দিন আহমেদ এবং প্রকল্প পরিচালক অশোক কুমার মণ্ডলের অনিয়ম এবং দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ প্রমাণিত হয়।
পরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়। গত এক বছরেও এই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিবের নেতৃত্বাধীন বিটিসিএলের পরিচালনা পর্ষদ।
সূত্র জানায়, হঠাৎ করেই গত দু’মাস আগে অবসরে যাওয়া মাহফুজ উদ্দিন আহমেদকে চুক্তিভিত্তিক এমডি নিয়োগে তৎপর হয়ে ওঠে আন্তর্জাতিক কল ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত একটি প্রভাবশালী মহল।
প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার শুরুতেই বিতর্কিত একজন ব্যক্তিকে এমডি নিয়োগে আপত্তি জানান। এতদসত্ত্বে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পান মাহফুজ উদ্দিন আহমেদ।
অনুসন্ধানে জানা যায়, মাহফুজ উদ্দিন আহমেদ অবসরে যাওয়ার পর তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগে কর্মরত বিটিসিএলের সাবেক কর্মকর্তা গোলাম ফখরুদ্দিন আহমেদ চৌধুরীকে প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমের পছন্দে বিটিসিএলের এমডি নিয়োগ করা হয়। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর বিটিসিএলের আন্তর্জাতিক কলের পরিমাণ বাড়তে থাকে। বিটিসিএলের ভেঙে পড়া আর্থিক কাঠামোও চাঙ্গা হয়। এহেন পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক বেসরকারি আইজিডবি্লউ অপারেটরদের সুইচে কলের পরিমাণ কমে গেলে তারা ক্ষুব্ধ হয়। গত মে মাসে গোলাম ফখরুদ্দিন আহমেদকে আকস্মিকভাবে এমডি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
আরো কিছু কারণ
সূত্র আরো জানায়, শুধু বিটিসিএলের এমডি নিয়োগ নয়, আরো কিছু ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক কল ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করা প্রভাবশালী মহলের সঙ্গে প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমের মতবিরোধ বেড়ে যায়। প্রতিমন্ত্রী দায়িত্ব নেওয়ার আগেই এই প্রভাবশালী মহল নিজেদের ফোরাম গঠন করে। তারা ফোরামের সুইচের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক কল আদান-প্রদানের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। সে সময় প্রভাবশালী ব্যবসায়ীদের সাত সদস্যের ফোরাম বিটিআরসির সঙ্গে বিদেশ থেকে আসা কল টার্মিনেশন রেট এক দশমিক পাঁচ সেন্ট হিসেবে রাজস্ব ভাগাভাগির চুক্তি করলেও পরে চুক্তির দুর্বলতার সুযোগে কল রেট বাড়িয়ে দুই সেন্টের উপরে নেয়। এর ফলে অবৈধ পথে আবারো আন্তর্জাতিক কল আসার হার বাড়তে থাকে। কমতে থাকে সরকারের আয়।
দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম কল টার্মিনেশন রেট ১ দশমিক ৫ সেন্ট থেকে ১ দশমিক ৭ সেন্টের মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখে বিটিআরসির সঙ্গে আগের চুক্তি সংশোধনের উদ্যোগ নেন। এর মধ্য দিয়েই আন্তর্জাতিক কল ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত প্রভাবশালী মহলের সঙ্গে প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমের মতবিরোধের শুরু। প্রভাবশালী মহলের পছন্দমত রেট নির্ধারণ না হওয়ার কারণে এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক কল রেট নির্ধারণের বিষয়টি ঝুলে আছে।
সূত্র আরো জানায়, একই সঙ্গে বিটিসিএলের এমওটিএন প্রকল্পে অস্বাভাবিক ব্যয় নির্ধারণের ব্যাপারে আপত্তি তুলে, ঢাকা-কুয়াকাটা ট্রান্সমিশন লিংক স্থাপনে বৈধ টেন্ডার বাতিল করা নিয়ে প্রশ্ন তুলে এবং মন্ত্রণালয় ও বিটিআরসিসহ রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিকম কোম্পানির কর্মকর্তাদের অপ্রয়োজনীয় বিদেশ যাত্রা নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নিয়েও অনেকের বিরাগভাজন হন তারানা হালিম।
EDITOR & PABLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
Executive Editor : M A Malek
UK Correspondent : Moheuddin Alamgir USA Correspondent : Abul Kashem Murshed
Office : Central Market (1st floor),
Bandar Bazar (Court Point),
Sylhet – 3100, Bangladesh.
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01711912127
Design and developed by M-W-D