অবশেষে বাদাঘাট পুলিশ ফাঁড়ি ছাড়লেন এসআই জালাল

প্রকাশিত: ১:২৯ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ২৯, ২০১৬

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর থানার বিতর্কিত এসআই একেএম জালাল উদ্দিন অবশেষে বাদাঘাট পুলিশ ফাঁড়ি ছাড়লেন। দীর্ঘ এক বছরেরও বেশী সময় ধরে বাদাঘাট পুলিশ ফাঁড়িতে থেকে ঘুষ-দূর্নীতির মাধ্যমে দু’হাতে লুটেপুঠে নিজের থলে ভারি করার হাড়ির খবর গণমাধ্যমে উঠে আসলে শুক্রবার সন্ধায় ফাঁড়ির দায়িত্ব অন্য এক এসআইকে বুঝিয়ে দিয়ে তিনি ফাঁড়ি ত্যাগ করেন।
নির্ভর যোগ্য সুত্র জানায়, জেলা পুলিশের দায়িত্বশীলরাই তাকে বাদাঘাট পুলিশ ফাঁড়ি ছেড়ে থানায় চলে যাওয়ার নির্দেশ প্রদান করেন। এ খবর চাউর হলে উপজেলার ভোক্তভোগী বাদাঘাট উত্তর ও বড়দল উত্তর ইউনিয়নসহ দুই ইউনিয়নের সাধারন মানুষের মধ্যে স্বস্থি ফিরে এসেছে। দিনভর ফাঁড়িতে থাকার জন্য বিশেষ এক ব্যক্তির অট্রালিকায় বসে নানা তদবীর করে ব্যর্থ হওয়ার পর অনেকটা লোকচক্ষুর নজর এড়িয়ে সন্ধায় বাদাঘাট পুলিশ ফাঁড়ি থেকে থানার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন।
এদিকে মামলার হের-ফের আর নয়-ছয়, বালি পাথর লুটের উপরী আয়, সেইভ ড্রেজার, বোমা মেশিনের অবৈধ আয়ে ফুলে উঠা এসআই জালালের অনেক বিতর্কিত কর্মকান্ড নিয়ে এলাকার ভোক্তভোগীরা মুখ খুলতে শুরু করেছেন। এসব ভুক্তভোগীদের দেয়া তথ্য মতে বিগত ১৫ থেকে ১৬ দিন পূর্বে লাউড়েরগড়ের এক কিশোরী ধর্ষিত হলে তদন্তের নামে অভিযুক্তদের নিকট থেকে মোটা অংকের উৎকোচ নিয়ে বিষয়টি আপোস করিয়ে দেয়ার জন্য সময় ক্ষেপন করে অভিযোগের আলামত নষ্ট করেন। বিন্নাকুলি এলাকায় গত কয়েক মাস পুর্বে নিরীহ এক ব্যক্তিকে মাদক ব্যবসায়ী সাজাতে গিয়ে ওই দরিদ্র ব্যক্তির নিকট থেকে ঘুষ হিসাবে দু’টি রাজহাঁস নিয়ে আসারও অভিযোগ পাওয়া গেছে। বড়দল উত্তর ইউনিয়নের গরু চোর চক্রের সদস্যের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী কথিত দুই গরু ব্যবসায়ী যারা ওই চোরদের নিকট থেকে অল্প মুল্যে গরু কিনে চড়া দামে বিক্রয় করত এমন দু’জনকে আইনের আওতায় না নিয়ে রফাদফা করেন ওই এসআই। বাদাঘাট বাজারের ফুটপাতে ব্যবসা করে এমন কয়েকজন ব্যবসায়ী জনচলাচলের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে ব্যবসা করার সুযোগ দিয়ে এক সোর্সের মাধ্যমে সাপ্তাহিক হারে টাকা নিতেন বলেও গুঞ্জন রয়েছে ওই এসআই’র বিরুদ্ধে। গত কয়েকদিন পুর্বে ঘাগটিয়ার বড়টেক এলাকায় অন্যায় ভাবে প্রভাব বিস্তার করতে গেলে এক থেকে দেড়’শ লোক এসআই জালালকে আটক করে মোটর সাইকেলের চাবি কেড়ে নিয়ে তাকে লাঞ্চিত করে। প্রতিদিন গাড়ী ভাড়া ৫শ ও চালকের বেতন প্রতিদিন ৫শ টাকা সহ গড়ে প্রতিদিন ১৪ থেকে ১৫’শ টাকা ব্যয় করে তিনি গাড়ী চালক পোষতেন। প্রশ্ন একটাই এসআই জালালের বেতন ই বা কত ছিল, আর কীভাবে তিনি এত টাকা ব্যয় করে গাড়ীর ভাড়া, তেল খরচ ও চালকের বেতন দিয়ে মোটর সাইকেল চড়তেন। ফাড়ি এলাকায় কিছু নতুন ধনাঢ্য ব্যক্তিরা ছিলেন ওই এসআইর নিকট ভাতৃতুল্য। সব সময় তাদের ইশারায় ফরমায়েশি তামিল করতে গিয়ে ওই সব ভাইদের নিকট থেকে ঈদ বখশিস এমনকি থানা কিংবা ফাঁড়িতে উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষ আসলে তাদের নাম করে খরচের টাকাও হাতিয়েছেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে।
এদিকে এলাকার সাধারন জনগণ তার চলে যাওয়াতে কিছুটা স্বস্থি ফেললেও তার ঘুষ, দুর্নীতি, অপকর্ম ও তার দ্বারা তদন্তকৃত সব কয়টি মামলা থেকে কীভাবে বাদী পক্ষ ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন সে ব্যাপারেও পুলিশের উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের নিকট সরেজমিনে তদন্ত দাবি করেছেন ভুক্তভোগীরা।

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট