তিন অভিষিক্তকে নিয়ে ফিল্ডিংয়ে টাইগাররা

প্রকাশিত: ১০:৩৯ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ২০, ২০১৬

চট্টগ্রাম : বৃহস্পতিবার মাঠে গড়িয়েছে বাংলাদেশ-ইংল্যান্ডের প্রথম টেস্ট। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ইংল্যান্ডের অধিনায়ক অ্যালিস্টার কুক।

এই ম্যাচ দিয়ে ১৪ মাস পর ফের আবার সাদা পোষাকে খেলছে টাইগাররা। এর আগে ইংলিশদের বিপক্ষে আটটি টেস্ট খেলে সবগুলোতেই হেরেছে বাংলাদেশ।

এর আগে বাংলাদেশ-ইংল্যান্ড আটটি টেস্ট খেলেছে। সবক’টিতেই জিতেছে ইংলিশরা। তবে, ইংল্যান্ডের চেয়ে কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। নিজেদের চেনা পরিবেশে খেলবে টাইগাররা।

টাইগারদের হয়ে এই ম্যাচের মধ্য দিয়ে তিন ক্রিকেটারের সাদা পোশাকে অভিষেক ঘটলো। কামরুল ইসলাম রাব্বি, মেহেদি হাসান মিরাজ আর সাব্বির রহমানের মাথায় উঠেছে টেস্ট ক্যাপ। অপরদিকে, ইংলিশদের হয়ে অভিষেক হয় বাঁহাতি ব্যাটসম্যান বেন ডাকেটের।

বাংলাদেশ দল: মুশফিকুর রহিম, তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস, মুমিনুল হক, সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, তাইজুল ইসলাম, শফিউল, মেহেদী হাসান মিরাজ, কামরুল ইসলাম রাব্বি ও সাব্বির রহমান।

ইংল্যান্ড দল: বেন ডাকেট, অ্যালিস্টার কুক. জো রুট, গ্যারি ব্যালেন্স, মঈন আলী, বেন স্টোকস, জনি বেয়ারস্টো, ক্রিস উকস, আদিল রশীদ, গ্যারেথ বাটি, স্টুয়ার্ট ব্রড।

এ পর্যন্ত বাংলাদেশ ৯৩টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছে। ২০০০ সাল থেকে মাত্র ৭টি টেস্টে জিতেছে। ৭১টি টেস্টেই হেরেছে। ১৫টি টেস্টে ড্র করেছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও জিম্বাবুইয়ে ছাড়া টেস্ট খেলুড়ে কোন দলের বিপক্ষেই জিততে পারেনি বাংলাদেশ।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২০০৯ সালে দুটি ম্যাচ জিতেছে। আর ২০০৫ সালে বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসের প্রথম জয়টি জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে মিলেছে। এর সঙ্গে ২০১৩ সালে একবার, ২০১৪ সালে জিম্বাবুইয়েকে তিনবার হারিয়েছে। জিম্বাবুইয়েকে ৫ বারই হারিয়েছে।

সবচেয়ে বেশি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ, ১৬ বার। ১৪ বারই হেরেছে। ২ বার ড্র করেছে। এরপর জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে ১৪ বার খেলে ৫ বার জয়ের বিপরীতে ৬ বার হেরেছে ৩ বার ড্র করেছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১২ বার খেলে ২ বার জিতেছে। ৮ বার হেরেছে। আর ২টি ম্যাচ ড্র করেছে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১১বার মুখোমুখি হয়ে ৮ বার হেরেছে। ৩ বার ড্র করেছে। পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১০ বার করে টেস্ট ম্যাচ খেলেছে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৮ বারই হেরেছে। ২ বার ড্র করেছে।

পাকিস্তানের বিপক্ষে ৯ বার হারের বিপরীতে ১ বার ড্র করতে পেরেছে বাংলাদেশ। ভারতের বিপক্ষে ৮ বার খেলে ৬ বার হেরেছে। ২ বার ড্র করেছে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৮ বার খেলে ৮ বারই হেরেছে। আর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সবচেয়ে কম টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। ৪ বার খেলে, প্রতিবারই হার হয়। তবে ৫ ম্যাচের বেশি খেলে শতভাগ হার হয়েছে শুধু ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই। বৃষ্টির সুবাদে হোক, যেভাবেই হোক; ৫ ম্যাচের বেশি কোন দলের বিপক্ষে খেলে শতভাগ হার নেই বাংলাদেশের। শুধু ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আছে। সেই দলটিই এবার বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ।

বাংলাদেশ যে ১৫টি ম্যাচে ড্র করেছে, এরমধ্যে ৬টি ম্যাচে নিজেদের যোগ্যতাতেই ড্র করতে পেরেছে। বাকি ৯টি ম্যাচেই বৃষ্টি আশীর্বাদ হয়ে ধরা দিয়েছে। ২০০১ ও ২০০৪ সালে জিম্বাবুইয়ে, ২০০৭ ও ২০১৫ সালে ভারত, ২০০৮ ও ২০১৩ সালে নিউজিল্যান্ড, ২০১১ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ২০১৫ সালে দুইবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বৃষ্টির সুবাদে ড্র করে বাংলাদেশ। তবে বাকি ৬টি ম্যাচ যে ড্র হয়, সেটি ক্রিকেটারদের যোগ্যতা বলেই হয়।

টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের প্রায় ১৬ বছর হয়ে গেল। এই ১৬ বছরে বড় কোন শক্তিকে বাংলাদেশ যে টেস্টে হারাতে পারল না, সেটি হতাশাই জাগে।

ওয়ানডেতে বাংলাদেশ যেভাবে এগিয়েছে, টেস্টে তার ধারে কাছেও বলতে গেলে নেই। হঠাৎ হঠাৎ বিশেষ কোন মুহূর্ত তৈরি হয়। যা ইতিহাস রচনাও করে। কিন্তু তাতে জয় ধরা দেবে যে কবে, তা সময়ই বলবে। তবে ২০০৪ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ২০০৫ সালে জিম্বাবুইয়ে, ২০১৩ সালে শ্রীলঙ্কা ও নিউজিল্যান্ড, ২০১৪ সালে আবার শ্রীলঙ্কা ও ২০১৫ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে দাপট দেখিয়েই ড্র করে বাংলাদেশ। অবশ্য জয় আসবেই বা কি করে।

বছরে যে খুব কম টেস্ট খেলে বাংলাদেশ। এবারই যেমন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট খেলতে নামার আগে ১৪ মাস টেস্ট ক্রিকেটের বাইরে ছিল বাংলাদেশ। এভাবে হলে দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেটে কী উন্নতি করা সম্ভব? কোনভাবেই নয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে যে ২০০৯ সালে বাংলাদেশ দুটি টেস্ট জিতে সিরিজও নিজেদের মুঠোয় করে নেয়, সেটিতে বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের নৈপুণ্য কোনভাবেই খাটো করে দেখার উপায় নেই। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলটাও ‘বোর্ড-ক্রিকেটার’ ঝামেলায় অপেক্ষাকৃত দুর্বল দলই ছিল।

এবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে যখন বাংলাদেশ খেলতে নেমেছে, তখন সবারই জানা, ইংল্যান্ডের চেয়ে টেস্টে অনেক দুর্বল দল বাংলাদেশ। আর তাই হারের সম্ভাবনাই বেশি। তবে ক্রিকেটাররা ব্যক্তিগত নৈপুণ্য দেখাতে পারলে ড্র করা অসম্ভব কিছু নয়। পারবে বাংলাদেশ তা করে দেখাতে?