২৩শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৯:০৫ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৬
অয়েছ খছরু : বিয়ের পরও সুহাদাকে ভুলতে পারেনি দর্জি দোকানি ইমরান। রাতের আঁধারে চলে যেতো সুহাদার বাড়ি। সুহাদাও তার ডাকে সাড়া দিতো। আর ইমরান-সুহাদার পরকীয়ায় খবরটি চাউর হয়েছিল এলাকায়। এ নিয়ে রীতিমত বিব্রত ছিল সুহাদার প্রবাসী স্বামী বদরুল ইসলামের পরিবারও। এ কারণে দর্জি দোকানি ইমরানকে বারবার সুহাদার পরিবারের পক্ষ থেকে বারণ করা হয়েছিল। এমনকি খুনের ঘটনার প্রায় দুই মাস আগে এ নিয়ে কানাইঘাট বাজারে দর্জি ইমরানের সঙ্গে হাতাহাতি হয়েছিল সুহাদার ভাই ইমরানের। আর এ নিয়ে হয়েছে সালিশ বৈঠক। এরপরও সুহাদার প্রেমে মশগুল ছিল ইমরান। সিলেটের কানাইঘাটে পরকীয়ার জেরে দর্জি দোকানি ইমরান খুন হওয়ার পর এসব কাহিনী এখন লোকমুখে। গত শনিবার ইমরানের লাশ উদ্ধারের পর তাদের দীর্ঘ ৫ বছরের নানা কাহিনী লোকমুখে রটছে। অন্যদিকে লোমহর্ষক ওই খুনের ঘটনায় চলছে তোলপাড়। সুহাদা আদালতেই জানিয়েছেন, ইমরানকে গলা ও লিঙ্গ কর্তনের পর হত্যা করা হয়। এরপর তার হাত-পা ভেঙে লাশ বস্তাভর্তি করে গুম করা হয় পুকুরের তলদেশে। আর খুনের পুরো ঘটনাটি ঘটেছে সুহাদার চোখের সামনেই। খুনের সময় সুহাদা ইমরানকে প্রাণে না মারতে বারবার অনুরোধ জানিয়েছিল। কিন্তু তার কথা শোনেনি ভাই ইমরান, দেবর মাসুম ও প্রতিবেশী জাহাঙ্গীর। পুলিশসহ এলাকা সূত্রে জানা গেছে, সুহাদার সঙ্গে দর্জি দোকানি ইমরানের পরকীয়া সম্পর্ক প্রায় ৬ বছর ধরে। সুহাদা স্কুলে পড়ার সময় থেকেই দর্জি দোকানি ইমরানের প্রেমে পড়ে। তাদের গভীর প্রেমের বিষয়টি তখন জানতে পারেন সুহাদার ভাইসহ পরিবারের লোকজন। এ নিয়ে বিয়ের আগেই সুহাদা ও ইমরানের পরিবারের মধ্যে দ্বন্দ্ব বাধে। এ কারণে অনেকটা তড়িঘড়ি সুহাদাকে বিয়ে দিয়েছিল তার পরিবার। দুর্গাপুর দক্ষিণ নয়াগ্রামের সৌদি প্রবাসী বদরুল ইসলামের সঙ্গে যখন বিয়ের কথাবার্তা চলছিল, তখনও দর্জি দোকানি ইমরানের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক বিয়ের প্রস্তাব দেয়া হয়। তবে ওই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে পরিবার। সুহাদা ইমরানকে মনেপ্রাণে ভালোবাসলেও পরিবারের চাপে অন্যত্র মুখে বিয়ে করে। আর বিয়ের পর চলে যায় স্বামীর বাড়ি দুর্গাপুরে। ওদিকে স্বামী বিয়ের পর প্রবাসে চলে গেলে ফের সুহাদার সঙ্গে ইমরানের পরকীয়া শুরু হয়। ওই পরকীয়ার টানে বারবারই স্বামীর ঘরে থাকা সুহাদার কাছে ছুটে যেত ইমরান। সুহাদাও দিতো সাড়া। সুহাদার স্বামীর পরিবারের কাছে পূর্বের প্রেমের বিষয়টি গোপন থাকলেও পরকীয়ার বিষয়টি ধীরে ধীরে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এ নিয়ে সুহাদার পরিবারের সঙ্গে নতুন করে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছিল স্বামী বদরুলের পরিবারের। বিষয়টির সুরাহা করতে বদরুলের পরিবার থেকে সুহাদার পরিবারকে চাপ প্রয়োগ করা হয়। তবে, পুলিশের ধারণা খুনের ঘটনাটি পরিকল্পিত। আর এই পরিকল্পনাকারী তিনজনের মধ্যে জাহাঙ্গীর ও মাসুম গ্রেপ্তার হয়েছে। এর মধ্যে সুহাদার পরিবারের ঘনিষ্ঠজন জাহাঙ্গীর। গত ১৯ তারিখ সুহাদার ভাই ইমরান প্রতিবেশী জাহাঙ্গীরকে নিয়ে পরিকল্পনা করেই দর্জি দোকানি ইমরানকে নিয়ে সুহাদার স্বামীর বাড়িতে যায়। যাওয়ার আগে তারা সন্ধ্যায় কানাইঘাট থেকে মিষ্টি কিনে নেয়। খুনের আগে ইমরানকে ঠাণ্ডা পানীয় এবং মিষ্টির সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দুর্বল করা হয়। পরে সুহাদার ভাই ইমরান, জাহাঙ্গীর, দেবর মাসুম খুন করে ইমরানকে। এরপর লাশ তারা পুকুরের তলদেশে গুম করে রাখে। গত শনিবার লাশ উদ্ধারের আগেই পুলিশ সুহাদা, প্রতিবেশী জাহাঙ্গীর ও দেবর মাসুমকে আটক করে। গ্রেপ্তারের পরপরই পুলিশের কাছে সব দোষ স্বীকার করে সুহাদা জবানবন্দি দেয়। তার জবানবন্দির সূত্র ধরেই লাশ উদ্বার করা হয়। তবে সুহাদা মুখ খুললেও প্রতিবেশী জাহাঙ্গীর ও দেবর মাসুম এখনও মুখ খোলেনি। পুলিশ ওদের রিমান্ড জানিয়েছিল সিলেটের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে। গতকাল সিলেটের কানাইঘাট থানার এসআই ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জুনেদ আহমদ জানিয়েছেন, আদালত মাসুম ও জাহাঙ্গীরের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। আজ তাদের রিমান্ডে নেয়া হবে। তাদের কাছ থেকে বক্তব্য পাওয়া গেলে খুন পরিকল্পিত কিনা বা কিভাবে হয়েছে সে ব্যাপারে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যেতে পারে বলে জানান তিনি।
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
Office : Central Market (1st floor),
Bandar Bazar (Court Point),
Sylhet – 3100, Bangladesh.
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D