হাসিনা-মোদি চুক্তিতে বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষা হয়নি : বিএনপি

প্রকাশিত: ১১:৪৯ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১২, ২০১৯

হাসিনা-মোদি চুক্তিতে বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষা হয়নি : বিএনপি

ক্ষমতায় টিকে থাকতে সরকার ভারতের সাথে জাতীয় স্বার্থ বিরোধী চুক্তি করেছে বলে অভিযোগ করে এর বিরুদ্ধে গণঐক্য গড়ে তোলার আহবান জানিয়েছে বিএনপি। জনসমাবেশে বিএনপির নেতৃবৃন্দ বলেন, ফেনী নদীর পানি সরবারহ, চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্র বন্দর ব্যবহার, বঙ্গোপসাগরের উপকূল পর্যবেক্ষণে যৌথ রাডার স্থাপন, আমদানিকৃত এলজিপি রফতানি করা- এই চারটি চুক্তি বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থ বিরোধী বলে আমরা মনে করি। এই চারটি চুক্তির একটিও বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থে নয়, জাতীয় স্বার্থে নয়। গতকাল শনিবার বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জনসমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন। দেশবিরোধী চুক্তি বাতিল ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদে দুইদিনের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই জন সমাবেশের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর বিএনপি। আজ রবিবার সারাদেশে জেলা সদরে একই কর্মসূচি পালিন করবে বিএনপি। কার্যালয়ের সামনে ফুটপাতে বসে এই সমাবেশ শুরু হয় বেলা দেড়টায়, শেষ হয় সাড়ে চারটায়। সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও আবরার ফাহাদের ছবির পাশাপাশি ‘দেশবিরোধী’ চুক্তি বাতিলের দাবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ডও দেখা গেছে নেতা-কর্মীদের হাতে হাতে। কাকরাইলের নাইটেঙ্গল রেস্তোরাঁ থেকে শুরু করে ফকিরের পুল মোড় পর্যন্ত দীর্ঘ সড়কে হাজার হাজার নেতা-কর্মীর উপস্থিতিতে বিকাল চারটায় সমাবেশ জনসমুদ্রে রূপ নেয়। নয়াপল্টনের সড়কের ওপর এই সমাবেশে হলেও সড়কের একপাশে একটি গাড়ি চলাচলের ব্যবস্থা রাখা হয়। এই চলাচল সচল রাখতে জনস্রোতকে সরিয়ে যানচলাচলের ব্যবস্থা করতে মির্জা আব্বাসকেও নিজে দাঁড়িয়ে থেকে ব্যবস্থা নিতে দেখা গেছে।
খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ভারতের সঙ্গে চারটি চুক্তি বাংলাদেশের স্বার্থ বিরোধী ও জনস্বার্থ বিরোধী। নতজানু পররাষ্ট্রনীতি এবং ভারত তোষণের নীতি হিসেবে আপনারা এ সকল চুক্তি করে এসেছেন। উদ্দেশ্য একটাই গায়ের জোরে ক্ষমতায় থাকার জন্যে দেশের গণতন্ত্রকে আপনারা হত্যা করেছেন, ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন ২৯ তারিখে ভোট ডাকাতি করেছেন, এই ডাকাতির সরকার আজকে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য আমাদের স্বার্থ বিকিয়ে দিচ্ছেন।  তিনি বলেন, এদেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের অধিকার আছে এসব চুক্তির প্রতিবাদ করার। আমরা বলতে চাই, আমরা এই প্রতিবাদ আর সমাবেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকব না। এদেশের জনগণ এক সাগর রক্তের বিনিময়ে যে দেশ স্বাধীন করেছিলো, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ক্ষুণœ হতে পারে, সম্প্রসারণবাদ, আধিপত্যবাদ বাংলাদেশকে গ্রাস করতে পারে। এমন অবস্থায় বাংলাদেশের মানুষ বসে থাকবে না।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আমরা পত্রিকায় দেখেছি, ভারত ইতিমধ্যে ৩৬টি পাম্প বসিয়েছে ৭২ কিউসেক পানি জোর করে নিয়ে যাচ্ছে! আর আপনি ১.৮২ কিউসেক পানির চুক্তি করে এসেছেন। এই কারণে ফেনী নদীর পাশে আমাদের যে কৃষি কাজ হয়, সেটা ব্যাহত হবে। আর ভারতের সঙ্গে এসব চুক্তির কারণে আমাদের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা হুমকির সম্মুখীন হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন সামান্য পানি- কিন্তু এর ফলে ফেনী নদীর পাশের লোকজনের কৃষি কাজ ব্যাহত হবে। মুহুরী প্রজেক্ট ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আপনি বলছেন জাতীয় স্বার্থ ব্যাহত করেননি। সাবরুম শহরে তাহলে এতদিন তারা পানি পান করছিল না? এটা ধোঁয়াশা সৃষ্টি করে প্রতারণা করে ভারতকে সুবিধা দেয়ার জন্যই করেছেন।
বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা সমুদ্রবন্দরে ক্ষতিগ্রস্ত হন। ভারতের পণ্য বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দরে খালাস হলে আমাদের ব্যবসায়ীরা আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। যৌথ পর্যবেক্ষণের নামে বিদেশি রাডার স্থাপন হলে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিঘিœত হবে, হুমকির মুখে পড়বে। আর এলপিজি আমদানি করে তা রফতানি করবেন। ৪টি চুক্তি ভারতের স্বার্থে করা হয়েছে। এটা দেশের জাতীয় স্বার্থবিরোধী চুক্তি।
সরকারের ভারতপ্রীতি নীতির কঠোর সমালোচনা করে খন্দকার মোশাররফ বলেন,  ২০০১ সালে আজকের প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, গ্যাস ভারতকে না দেয়ার কারণে আমি ক্ষমতায় আসতে পারি নাই। আজকে জনগণের মধ্যে প্রশ্ন এসেছে, আপনি আপনার দেশের আমদানি করা এলপিজি দিয়ে তাহলে কী সেই ২০০১ সালে সেই যে আপনি গ্যাস দেন নাই সেটার খেসারত দিচ্ছেন কিনা। আপনারা দেখেছেন, এই চুক্তি কত বড় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিরোধী চুক্তি এবং আমাদের দেশে আধিপত্য প্রতিষ্ঠার এক চুক্তি- এর প্রতিবাদ বুয়েটের মেধাবী ছাত্র সেটার প্রতিবাদ করে একটা স্ট্যাটাস দিয়েছিলো। আজ তার জন্য আজকে তাকে প্রাণ দিতে হয়েছে। আমি বলতে চাই, আবরারের এই স্ট্যাটাস এদেশের জনগণের মনের কথা, এদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার পক্ষের কথা, আবরারের একথা এদেশে আধিপাত্যবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর কথা। আপনারা শুধু আবরারকে হত্যা করেন নাই, তাকে হত্যা করে আপনারা বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থকে হত্যা করেছেন, আপনারা এদেশে আধিপত্যবাদকে বিস্তার করার জন্য আবরারকে হত্যা করেছেন। আজকে সারা বাংলাদেশের মানুষ, ছাত্র সমাজ ফুঁসে উঠেছে এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে। আজকে যারা ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য জাতীয় স্বার্থ বিসর্জন করে চুক্তি করেন, আজকে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতন্ত্রকে যারা হত্যা করেন, এদেশে যারা চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ, ক্যাসিনোবাজ, সন্ত্রাস-নৈরাজ্য সৃষ্টি করে যারা ক্ষমতায় থাকতে চান। আমরা বিশ্বাস করি এই আবরার রক্ত দিয়ে আপনাদের পতনের যে আন্দোলনের সূত্রপাত করে গেছে, বীজ বপন করে গেছে। বাংলাদেশের জনগণ, দেশপ্রেমিক, ছাত্রসমাজ তারা ঐক্যবদ্ধ হবে, তার রক্ত বৃথা যেতে দেবে না। ইনশাল্লাহ এই সরকার বেশিদিন টিকতে পারবে না। গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে কারাবন্দি বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির প্রয়োজন উল্লেখ করে তিনি বলেন, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা ও দেশনেত্রীর মুক্তির জন্য এদেশে আগামী দিনে যে সমস্ত কর্মসূচি আসবে আপনারা সাহসের সাথে আজকের মতো সফল করার জন্য সকলে ঐক্যবদ্ধ থাকবেন। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে এদেশের জনগণকে আমরা ঐক্যবদ্ধ করতে পারবো এবং ইস্পাত কঠিন গণঐক্য ছাড়া এই ফ্যাসিবাদের পতন হবে না। ইনশাল্লাহ সেই ফ্যাসিবাদের পতন হবেই।
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, এই সরকার দুর্নীতিতে ডুবে গেছে। তারা এমন ফাঁদে পড়েছে, সেই ফাঁদ থেকে তাদের কোনো নিষ্কৃৃতি নাই, এই ফাঁদ থেকে তারা উঠে আসতে পারবে না। আমি মনে করি, এই সরকারের পতন এখন সময়ের ব্যাপার। এই দেশের মানুষ কখনো এই ধরনের সরকারকে বরদাশত করতে পারে না। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন,  আজকের খবরের কাগজে দেখলাম, এমন কোনো হল নাই, ডরমেটরি নাই বাংলাদেশে তাদের টর্চার সেল নাই। আজকে এই আবরারের হত্যাকান্ড সারা দেশের মানুষকে অবাক করেছে, মর্মাহত করেছে। একজন আবরার হত্যা করে কোনো লাভ হবে না, তার মতো শত শত আবরারের জন্ম দেবে। ভারতের সাথে সম্পাদিত চুক্তিরও সমালোচনা করেন সাবেক আইনমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে, তিনি বাংলাদেশের কোনো স্বার্থ বিক্রি করেন নাই। কিন্তু দেশের মানুষ বোকা নয়, তারা জানে আপনি বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে বিক্রি করে এসেছেন ভারতে গিয়ে। এর পরিবর্তে আপনি বাংলাদেশের মানুষের জন্য কিছুই আনতে পারেন নাই। এই ব্যর্থতা এই সরকারের জন্য কালিমা হয়ে থাকবে ইতিহাসে। আজকে আন্দোলনের সময় এসেছে, আপনারা প্রস্তুতি গ্রহণ করেন। এই সরকারকে আর ক্ষমতায় থাকতে দেয়া যেতে পারে না। জোর করে ক্ষমতায় থাকতে চাইলে জনগণ বিএনপি ও বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন সৃষ্টি করে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবে। নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আন্দোলনের সময় এসেছে। সেই সময় এসে গেছে। আপনারা প্রস্তুতি গ্রহণ করুন। আর ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে মাধ্যমে এদেশের মানুষ আইনের শাসন, স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র ফিরে পাবে।
বিএনপি স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, দুই দেশের মধ্যে বিনিময় চুক্তি হবে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী একতরফা দান করে দিয়ে আসলেন। আমি অত্যন্ত গর্বিত আমার দেশের প্রধানমন্ত্রী দান করতে জানেন। আবার অত্যন্ত লজ্জিত আমি দেখলাম ভারতের বিমানবন্দরে লাল কার্পেট নাই, এক প্রতিমন্ত্রী তাকে (শেখ হাসিনা) অভ্যর্থনা জানাচ্ছেন। আমি লজ্জা পেয়েছি, জাতি লজ্জা পেয়েছে, দেশ লজ্জা পেয়েছে। সেখানে শেখ হাসিনা ওয়াজেদ আপনি দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে গেছেন, সেখানে আমাদের ইজ্জতে লেগেছে, আমাদের মানহানি হয়েছে। আমি মনে করি এই ধরনের নতজানু পররাষ্ট্রনীতি যদি সরকারের থাকে সেই সরকার কোনো দিন আদায় করতে পারবে না, দেয়া ছাড়া। আপনি যা করতে যাচ্ছেন- চেষ্টা করতে পারেন। আমি মনে করি, আবরারের মতো লক্ষ-কোটি আবরার জন্ম নেবে, আপনার অপকর্ম বাংলাদেশে সফল হতে দেবে না।
পল্টনে রাস্তায় রাস্তায় ব্যারিকেড, সমাবেশমুখী বিএনপির অর্ধশত নেতাকর্মী আটক : পুলিশি অনুমতি উপেক্ষা করে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করছে বিএনপি। সমাবেশে নেতাকর্মীদের ঢল নেমেছে। বিশাল বিশাল মিছিলে তারা সমাবেশে যোগ দিচ্ছেন। এদিকে নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেছেন, পুলিশ নয়াল্টনমুখি সবগুলো রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়েছে। ছোট ছোট মিছিলগুলোকে সেদিকে ঢুকতে দিচ্ছে না। তবে বড় বড় মিছিলগুলো পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে সমাবেশে যোগ দিচ্ছে। বিশেষ করে নয়াপল্টনমুখি গলির রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত সমাবেশে যোগ দিতে যাওয়া বিএনপির ৫০ নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। রাজধানীর পল্টন এলাকা থেকে গতকাল শনিবার দুপুরে তাদের আটক করে নিয়ে গেছে রমনা ও পল্টন থানা পুলিশ। দলের নেতাকর্মীদের আটকের বিষয়টি জানিয়েছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর বিএনপির (দক্ষিণ) সভাপতি হাবিব-উন-নবী খান সোহেল। আটককৃতদের অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি। ভারতের সঙ্গে ‘দেশবিরোধী চুক্তি’ বাতিল ও বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশমুখী মিছিল থেকে তাদের আটক করা হয়। পূর্বঘোষিত হলেও সমাবেশের জন্য পুলিশের অনুমতি পায়নি বিএনপি। কিন্তু গতকাল শনিবার দুপুর থেকে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ শুরু করে দলটি। সকাল থেকে সমাবেশে যোগ দিতে নয়াপল্টনে জড়ো হতে থাকেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। এর আগে সকাল থেকেই নয়াপল্টনে কঠোর অবস্থান নেয় পুলিশ। দুপুর ১২টার দিকে দুই দফায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। শুরুতেই সমাবেশস্থল ঘিরে ব্যারিকেড দিলেও পরে নেতাকর্মীদের চাপে কিছুটা সরে গেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তবে সমাবেশের আশপাশেও অবস্থান করছেন বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বিপুল সংখ্যক র‌্যাব ও পুলিশের পাশাপাশি মোতায়েন করা হয়েছে সাঁজোয়া যান এবং জলকামানবাহী গাড়ি। নয়াপল্টনের আশপাশেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সরব উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। সকালেই সমাবেশের অনুমতি চাইতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কার্যালয়ে গিয়েছিলেন বিএনপির প্রতিনিধি দল। গতকাল শনিবার সকালে বিএনপির প্রতিনিধি দলটি ডিএমপি কার্যালয়ে যান। কিন্তু প্রতিনিধি দল জানিয়েছে তাদের সমাবেশের অনুমতি দেয়া হয়নি। পুলিশের অনুমিত ছাড়াই সমাবেশ করছে বিএনপি।

হঠাৎ নয়াপল্টনে সমাবেশস্থলে অন্য রুটের বাস : মতিঝিল-দৈনিক বাংলা হয়ে পল্টন মোড় হয়ে যেসব বাস চলাচল করতো সেসব বাসকে হঠাৎ বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে। কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করছে বিএনপি। পুলিশি অনুমতি ছাড়াই গতকাল শনিবার (১২ অক্টোবর) সমাবেশ শুরু হলে এক পাশ দিয়ে গাড়ি চলাচলের জন্য সড়কে ফাঁকা রাখে বিএনপির নেতাকর্মীরা। যেখান দিয়ে কিছু গাড়ি চলাচল করতে শুরু করে। কিন্তু সমাবেশের এক পর্যায়ে হঠাৎ রাস্তা পরিবর্তন করে বিএনপির সমাবেশের মধ্যে দিয়ে মতিঝিল-দৈনিক বাংলা-পল্টন মোড় হয়ে শাহবাগমুখি বাস বিকল্প অটো সার্ভিস, গাবতলী মিনি সার্ভিস (৮ নম্বর), বিহঙ্গ পরিবহন, রাইদা পরিবহন নিউ ভিশন। এসব বাস যাত্রাবাড়ি থেকে মতিঝিল হয়ে প্রেসক্লাবের সামনে দিয়ে মিরপুর পর্যন্ত চলাচল করতো। গাবতলী মিনি ৮ নং বাস প্রেসক্লাবে রোড হয়ে গাবতলী যেতো এবং রাইদা চলাচল করতো হানিফ ফ্লাইওভার দিয়ে কমলাপুর রামপুরা হয়ে কিন্তু এসব বাস বিএনপির সমাবেশেল মধ্য দিয়ে চলাচল করে। গাড়ির চালকেরা বলেন, পুলিশে এই রোড়ে ঢুকিয়ে দিয়েছে। তবে বিএনপির নেতাকর্মীদের ধারণা জনসমাবেশে বাধা ও বিঘœ সৃষ্টি করতে পুলিশ এই কৌশল নিয়েছে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশারের সঞ্চালনায় জনসমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভুঁইয়া, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিম, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নিরব, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু, সিনিয়র সহ-সভাপতি মোরতাজুল করিম বাদরু, মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূইয়া জুয়েল, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খান, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক হাসান জাফির তুহিন, ছাত্রদলের সভাপতি  ফজলুর রহমান খোকন, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল, ঢাকা মহানগর বিএনপি উত্তরের সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ হাসান, সিনিয়র সহ-সভাপতি মুন্সি বজলুল বাসিত আঞ্জু। এছাড়াও বিএনপির সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, সহ-যুব বিষয়ক সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আ ক ম মোজ্জামেল হক, সালাহ উদ্দিন ভূইয়া শিশির, ওমর ফারুক শাফিন, অ্যাডভোকেট নিপুন রায় চৌধুরী, আমিনুল ইসলাম, রাজিব আহসান, আকরামুল হাসান, বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং সদস্য শামসুদ্দিন দিদার, ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি ডা. দেওয়ান সারাহ উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক আবু আশফাক, গাজীপুর জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সবুজ, জাতীয়তাবাদী যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পদক নূরুল ইসলাম নয়ন, সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন হাসান, স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, যুবদল ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক সফিকুল ইসলাম মিল্টন, সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা কামাল রিয়াদ, যুবদল দক্ষিণের সভাপতি রফিকুল আলম মজনু, সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাওলা শাহীন, স্বেচ্ছাসেবক দল ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি ফখরুল ইসলাম রবিন, সাধারণ সম্পাদক গাজী রেজওয়ানুল হোসেন রিয়াজ, ঢাকা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দল দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক মোঃ নজরুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহ-সভাপতি নবী উল্লাহ নবী, সাংগঠনিক সম্পাদক তানভীর আহমেদ রবিন, সাবেক ছাত্র নেতা আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী, দক্ষিণ খান থানা বিএনপির সভাপতি মো. মাহাবুদ্দিন সাগর,  ডেমরা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. হাজি আবুল হাশেম, গুলশান বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. দীন ইসলাম, ভাষানটেক বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শামীম ইসলাম খোকন, ১৩ নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা মো. বাবুল সর্দার, কৃষক দলের সদস্য এম জাহাঙ্গীর আলম, কৃষক দল নেতা আব্দুল্লাহ আল নাঈম, ২০ দলীয় জোটের পক্ষে লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জাতীয় দলের এহসানুল হুদাসহ হাজার হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।