বিএনপির নারী এমপি হচ্ছেন কে?

প্রকাশিত: ৬:২০ অপরাহ্ণ, মে ১৭, ২০১৯

বিএনপির নারী এমপি হচ্ছেন কে?

বহুল আলোচিত বিতর্কিত একাদশ সংসদ নির্বাচনের ফলাফল বয়কটের পরেও সংসদে যোগ দেওয়ায় এখন একজন নারী প্রতিনিধি মনোনয়ন করতে পারবেন বিএনপি। সেই প্রতিনিধি নির্বাচন নিয়ে দলের নারী নেত্রীদের পাশাপাশি হাই কমান্ডও সক্রিয় নিজের পছন্দের প্রার্থীকে এমপি করতে। এ নিয়ে লন্ডনে অবস্থানকরা তারেক রহমানের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করে চলেছেন তারা।

তবে শেষ পর্যন্ত কে হবেন বিএনপির ভাগ্যবান নারী এমপি বিষয়টি নির্ধারণ করবেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও মহাসচিবের মত নিয়ে তিনি যে সিদ্ধান্ত দেবেন সেটিই চূড়ান্ত।

জানা গেছে, তফসিল ঘোষণার সপ্তাহ পার হলেও এখন পর্যন্ত প্রার্থী চূড়ান্ত করতে পারেনি দলটি। একটি মাত্র সংরক্ষিত আসনে প্রার্থী হতে বিএনপির নেত্রীদের মধ্যে প্রকাশ্যে কোনো তৎপরতা না থাকলেও পর্দার অন্তরালে চলছে নানামুখী দৌড়ঝাঁপ। বিএনপি নেত্রীদের মধ্যে অনেকেই গোপনে গোপনে লবিং-তদবির করছেন।

জানতে চাইলে সদ্য সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেওয়া বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব হারুন অর রশীদ বলেন, সংরক্ষিত নারী আসনে কাকে মনোনয়ন দেয়া হবে তা এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। দল এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।

বিএনপির নারী নেত্রীদের মধ্যে সংরক্ষিত নারী আসনে দলীয় টিকিট পাওয়ার ক্ষেত্রে যারা আলোচনায় আছেন, তাদের মধ্যে রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের পুত্রবধূ ও প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান সিঁথি, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, সহ-আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক নারী সংসদ সদস্য নিলুফার চৌধুরী মনি, নিপুণ রায় চৌধুরী, বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক ব্যারিস্টার ফাহিমা মুন্নী, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক হেলেন জেরিন খান এবং সাবেক সংসদ সদস্য আশিফা আশরাফী পাপিয়া।

একাদশ নির্বাচনের আগে আলোচনা ছিল বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ও চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান কোনো একটি আসন থেকে নির্বাচন করবেন। তাকে ঘিরেই বিএনপির ভবিষ্যৎ রাজনীতি পরিচালিত হবে। কিন্তু সেটি আর হয়ে ওঠেনি। পাসপোর্ট জটিলতায় দেশে আসতে পারেননি ডা. জোবাইদা। এখন জিয়াউর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান সিঁথি সংরক্ষিত নারী আসনে এমপি হোক এটি চাচ্ছেন দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের কেউ কেউ।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সিঁথি শেষ পর্যন্ত বিএনপির টিকিটে সংসদে গেলে অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না। কারণ বিএনপির হাইকমান্ডকে পরিবর্তিত রাজনৈতিক বাস্তবতায় এখন অনেক বিকল্প মাথায় নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। যেমনটি হয়েছে দলের ৫ এমপির শপথগ্রহণের সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময়।

জানা গেছে, সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি হতে আগ্রহীরা বিএনপির হাইকমান্ডের কাছে সাংগঠনিক যোগ্যতা, রাজনৈতিক পটভূমি, পরিবারের অবদান ও নিজের ত্যাগের বিষয়টি তুলে ধরে মনোনয়ন দাবি করছেন। রাজনৈতিক দক্ষতা ও যোগ্যতাকে মূল্যায়ন করা হলে মনোনয়ন পাবেন, এমন প্রত্যাশা করছেন বেশ কয়েকজন নারী নেত্রী। দলের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষায় আছেন তারা।

গত সোমবার ২০-দলীয় জোটের বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শরিক নেতাদের জানান, সংরক্ষিত নারী আসনে একজনকে মনোনয়ন দেয়া হবে। তবে নির্দিষ্ট কারও নাম জানাননি তিনি।

এদিকে সংরক্ষিত আসনে মনোনয়ন পেতে দলের অনেকেই নীতিনির্ধারকদের বাসায় গিয়ে তদবির শুরু করেছেন বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, সংরক্ষিত আসনের নারী এমপি নিয়ে দলীয় ফোরামে এখনও কোনো আলোচনা হয়নি। তাই এ বিষয়ে কিছু বলা যাবে না।

বিএনপির একটি সূত্র বলছে, বুধবার সকালে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ব্যাংকক গেছেন। ওখান থেকে তিনি লন্ডন যাবেন। সেখানে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে সংরক্ষিত নারী আসন ও বগুড়া-৬ আসন প্রার্থী চূড়ান্ত করবেন।

দল কাকে মনোনয়ন দিচ্ছে জানতে চাইলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এ বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। সময়মতো সবই জানা যাবে।

প্রসঙ্গত গত বুধবার নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বিএনপির একটি নারী আসনের জন্য তফসিল ঘোষণা করেন। তফসিল অনুযায়ী, ২০ মের মধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ২১ মে, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৮ মে এবং ভোট ১৬ জুন।