সিলেটী যাত্রীদের হয়রানি : আন্দোলনে নামার ঘোষণা আটাবের

প্রকাশিত: ৬:২২ অপরাহ্ণ, মার্চ ৭, ২০১৯

সিলেটী যাত্রীদের হয়রানি : আন্দোলনে নামার ঘোষণা আটাবের

৭ মার্চ ২০১৯, বৃহস্পতিবার : সিলেটী যাত্রীদের প্রতি বিমান কর্মকর্তাদের বৈষম্যমূলক আচরণ ও বিদ্যমান সমস্যাগুলোর সমাধান না হলে আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিয়েছেন অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল অ্যাজেন্ট অব বাংলাদেশ (আটাব) সিলেট জোনের নেতৃবৃন্দ।

বুধবার দুপুরে জিন্দাবাজারের গ্যালারিয়া মার্কেটস্থ আটাব অফিসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, সিলেট অঞ্চলের প্রায় ১৫ লাখ যুক্তরাজ্য প্রবাসীর সুবিধার জন্য সিলেট-লন্ডন-সিলেট সরাসরি ফ্লাইটের দাবী দীর্ঘদিন থেকে উপেক্ষিত। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ও বৈরি মনোভাবের কারণে তারা আন্তর্জাতিক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। তাছাড়া সিলেটের ওমরাহ ও হজ্জ যাত্রীদের জন্য কৃত্রিম আসন সংকট সৃষ্টি করে বিমানের কিছু স্বার্থান্ধ কর্মকর্তার সহযোগিতায় কিছু নির্দিষ্ট অ্যাজেন্সিকে বিশেষ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। শুধু তাই নয়, সিলেট/ঢাকা/চট্টগ্রামের জন্য কমন ভাড়া নির্ধারিত থাকলেও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সিলেটী যাত্রীদের জন্য অতিরিক্ত ভাড়া দেওয়ার জঘন্য সিস্টেম চালু রেখেছেন। যেমন, সপ্তাহে জেদ্দা থেকে সিলেটে ২টি ফ্লাইট চালু রাখা হলেও সেগুলোতে সিলেটী যাত্রীদের জন্য ওমরাহ ক্লাস ক্লোজ এবং ঢাকার যাত্রীদের জন্য অপেন রাখা হয়। আবার সিলেটী যাত্রীদের জন্য জেদ্দার কোন গ্রুপ টিকেট নাই।

কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকার যাত্রীদের জন্য তাও রয়েছে। লন্ডন-দুবাই-কাতার-ওমানসহ বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াতের জন্য সিলেটী যাত্রীরা আসন পাননা। অথচ প্রায়ই শূন্য আসন থাকার সংবাদ পাওয়া যায়। এমনকি আগামী দেড়/দুই মাস পর্যন্ত লন্ডন ফ্লাইটে কোন আসনই খালি নেই বলে জানিয়েছেন বিমান কর্তৃপক্ষ।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, এইসব কারণে ও কর্মকর্তাদের বিমাতাসুলভ আচরণের কারণে সিলেট অঞ্চলের ট্রাভেল অ্যাজেন্ট ও প্রবাসীরা হয়রানির স্বীকার হচ্ছেন। পাশাপাশি তারা প্রচুর আর্থিক ক্ষতিরও সম্মুখিন হচ্ছেন। সিলেট অঞ্চলের প্রবাসীদের সমস্যা সমাধানের জন্য তারা ৬ দফ দাবি উপস্থাপন করেছেন। এসব দাবি আগামী ১০ কর্মদিবসে বাস্তবায়ন না হলে তারা কঠোর আন্দোলনের হুমকিও দিয়েছেন। এমনকি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে তারা বয়কটের মতো কঠোর পদক্ষেপের বিষয়টিও বিবেচনা করছে।

দাবিগুলো হচ্ছে, সপ্তাহে ১টি সিলেট-জেদ্দা-সিলেট ফ্লাইটের ব্যবস্থা করা বা কমন ভাড়ার নির্দিষ্ট আসন বরাদ্দ, জেদ্দা-দুবাই-লন্ডনসহ বিভিন্ন গন্তব্যে কমন ভাড়া বহাল, সিলেট-জেদ্দা-সিলেট/সিলেট লন্ডন সিলেট/ সিলেট দুবাই সিলেটসহ সরাসরি সিলেট ফ্লাইটে কমন ভাড়ায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সিলেটী প্রবাসীদের জন্য আসন বরাদ্দ রাখা, সিলেটী যাত্রীদের সরাসরি সিলেট আসতে হলে বেশী ভাড়া দিতে হবে-বিমান ডিএমএস’র এই বক্তব্য প্রত্যাহার ও সিলেটী যাত্রীদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ পরিহার করতে হবে। জেদ্দা সিলেট দুইটি ফ্লাইটের যাত্রীদের জন্য সিলেটী যাত্রীদের জন্য ‘ইউ’ ক্লাসে প্রয়োজনীয় আসন বরাদ্দ রাখা, সিলেট বিমানবন্দরের রানওয়ের শক্তি বৃদ্ধির কাজ দ্রুতগতিতে সম্পন্ন করে বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্সসহ বিশ্বের বিভিন্ন এয়ার লাইন্সের সরাসরি ফ্লাইটের ব্যবস্থা করা ইত্যাদি।

সংবাদ সম্মেলনে তারা এসব সমস্যা সমাধানে ইতিপূর্বে সরকারের বিভিন্ন দফতরে দেওয়া তাদের তাদের আবেদনপত্র ও স্মারকলিপির কপিও উপস্থাপন করেন। সেগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত ২ ফেব্রুয়ারি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন, ১১ ফেব্রুয়ারি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রীর মো. মাহবুব আলী ১০ জানুয়ারি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সিলেট জেলা ব্যবস্থাপকের কাছে তারা আবেদন করেছেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ কুম্ভকর্ণের নিদ্রায়। এসব দাবি আদায়ে সিলেটের সাংবাদিক সমাজসহ সর্বস্থরের জনগনের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আটাব সিলেট অঞ্চলের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল জব্বার।

বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন হজ্জ এজেন্সিজ অব বাংলাদেশ (হাব) সিলেট শাখার সভাপতি খাজা মঈন উদ্দিন জালালাবাদী ও আটাব সিলেটের নির্বাহী সদস্য গিয়াস উদ্দিন।

সংবাদ সম্মেলনে উভয় সংকটের অন্যান্য নেতৃবৃন্দও উপস্থিত ছিলেন।

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট