ঠাকুরগাঁওয়ে বিজিবির গুলিতে নিহত ৩, আহত ১৭

প্রকাশিত: ৯:০১ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৯

ঠাকুরগাঁওয়ে বিজিবির গুলিতে নিহত ৩, আহত ১৭

ঠাকুরগাঁও : সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে চোরাই পথে আসা গরু আটক করাকে কেন্দ্র করে স্থানীয়দের সাথে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সংঘর্ষে কমপক্ষে তিনজন মারা গেছেন। আহত হয়েছে আরো ১৭ জন।

আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার গফুয়া ইউনিয়নের বহরমপুর গ্রামে এ ঘটনায় গরু জব্দ করা নিয়ে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেঅ

সংঘর্ষে নিহতরা হলেন গফুয়া ইউনিয়নের রুইয়া গ্রামে নজরুল ইসলামের ছেলে নবাব (৩০) ও জহিরুলের ছেলে সাদেক মিয়া (৪০) এবং বহরমপুর গ্রামের নূর ইসলামের ছেলে এসএসসি পরীক্ষার্থী জয়নাল।

ঘটনার পর এলাকাবাসী তিনজনের লাশ ঘিরে বিক্ষোভ করছে এবং ঘটনার জন্য দায়ী বিজিবি সদস্যদের শাস্তি দাবি করছেন।

হরিপুর থানার ওসি মো. আমিরুজ্জামান জানান, সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে যায়। সেখানে গুলিবিদ্ধ লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়। পুলিশ যাওয়ার পর বিজিবি সদস্যরা সেখান থেকে চলে যায়।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বহরমপুর গ্রামের এক ব্যক্তি সকালে গরু নিয়ে যাদুরানী বাজারের উদ্দেশে বের হন বিক্রি করার জন্য। ওই গরু পাচার করে আনা হয়েছে সন্দেহে বেতনা ক্যাম্পের বিজিবি সদস্যরা তা জব্দ করতে গেলে এলাকাবাসীর সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধে।

বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, বহরমপুর সীমান্ত এলাকা দিয়ে দিয়ে গরু চোরাকারবারীরা ভারত থেকে গরু আনে। ওই গরু উদ্ধারে বিজিবি সদস্যরা অভিযানে যায়। এসময় চোরাকারবারীরা বিজিবির ওপর অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। বিজিবি সদস্যরাও আত্মরক্ষার্থে গুলি চালায়।

বিজিবি কর্মকর্তারা বলছেন, ভারতীয় গরু আটক করায় সশস্ত্র চোরাকারবারিরা হামলা করলে তারা গুলি চালাতে বাধ্য হন।

ঠাকুরগাঁও ৫০ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তুহিন মো. মাসুদ সেলিম বলেন, ওগুলো ভারতীয় গরু। সংঘবদ্ধ চোরাকারবারিরা কোনো এক সময় সেগুলো নিয়ে এসেছিল। তারা বাজারে নিয়ে যাওয়ার সময় সীমান্তের দুই কিলোমিটার ভেতরে আমাদের টহল দল তাদের ধরে। গরুগুলো বিওপিতে নেওয়ার সময় দুই তিনশ লোক ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়।

তিনি বলেন, আমরা প্রথমে ঠেকানোর চেষ্টা করেছি। তাতে আমাদের অস্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, কয়েকজন আহত হয়েছে। আমরা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দিয়েও বোঝানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় আমরা গুলি করতে বাধ্য হই।

এদিকে গুলিতে হতাহতের খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক কে এম কামরুজ্জামান সেলিম দুপুরে বহরমপুর গ্রামে যান।

ঘটনাস্থলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, চোরাই গরু ঢুকেছে সন্দেহে বিজিবি অভিযান চালায়। এ সময় তারা বেশ কয়েকটি গরু জব্দ করে। তখন গ্রামবাসীর সঙ্গে বিজিবির সংঘর্ষ বাঁধে এবং গুলিতে হতাহতের ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় জেলা প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতিবেদন পেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।