তারেক রহমানের ৫৪তম জন্মদিন আজ, সারাদেশে কর্মসূচি

প্রকাশিত: ১২:১২ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ২০, ২০১৮

তারেক রহমানের ৫৪তম জন্মদিন আজ, সারাদেশে কর্মসূচি

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৪তম জন্মদিন আজ। ১৯৬৫ সালের এই দিনে জন্ম গ্রহণ করেন।

সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান বীরউত্তম ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জেষ্ঠ্যপুত্র তারেক রহমান বড়। তার ছোট ভাই আরাফাত রহমান কোকো নির্বাসনে থাকাকালীন ২০১৫ সালে হৃদরোগে মৃত্যু হয়।

তারেক রহমান ১৯৮১ সালে এসএসসি পরীক্ষা দেন গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি স্কুল থেকে। ১৯৮৪ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমে আইন বিভাগে ও পরে লোক প্রশাসন বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন। বর্তমানে তারেক রহমান লন্ডনের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনশাস্ত্রে (ব্যারিস্টারি) অধ্যয়নরত।

ওয়ান ইলেভেনে ২০০৭ সালের ৭ মার্চ গভীর রাতে ঢাকা সেনানিবাসের শহীদ মইনুল রোডের বাসভবন থেকে গ্রেপ্তার করে যৌথবাহিনী। গ্রেপ্তার হলে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হোন। দিনের পর দিন রিমান্ডে প্রায় পঙ্গ অবস্থা তার। পরে ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান তারেক রহমান। স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমান ও একমাত্র মেয়ে জাইমা রহমানকে নিয়ে বর্তমানে তিনি সেখানেই অবস্থান করছেন।

মাত্র ২২ বছর বয়সে ১৯৮৮ সালে তারেক রহমান বগুড়া জেলার গাবতলী থানা বিএনপির সদস্য হন। আনুষ্ঠানিকভাবে সংগঠনে যোগ দেয়ার আগেই তারেক রহমান রাজনীতিতে অত্যন্ত সক্রিয় ছিলেন। ১৯৯১ সালের নির্বাচনকে ঘিরে বিএনপির রাজনীতিতে প্রায় নেপথ্যে থেকে সক্রিয় হয়ে উঠেছিলেন তারেক রহমান। তারই রাজনৈতিক দূরদর্শিতা, অনবদ্য পরিকল্পনা ও প্রজ্ঞার কারণে বিএনপির নেতৃত্বে চারদলীয় জোট বিপুল ভোটে বিজয়ী হয় ২০০১ সালের নির্বাচনে।

দীর্ঘদিন দলের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ কাজে নেপথ্যচারীর ভূমিকা পালন করলেও অবশেষে ২০০২ সালে তিনি বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিবের দায়িত্ব পান। ২০০৯ সালের ৮ ডিসেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত বিএনপির পঞ্চম জাতীয় কাউন্সিলে তারেক রহমান সংগঠনের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০১৬ সালের ৬ষ্ঠ কাউন্সিলে তারেক রহমান সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে সাজানো মামলায় কারাগারে প্রেরণ করলে তিনি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন।

এদিকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বাণী দিয়েছেন।

বাণীতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, দেশের উৎপাদন-উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির স্বাপ্নিক জনাব তারেক রহমানের ৫৩তম জন্মবার্ষিকীতে তার প্রতি আমার প্রাণঢালা শুভেচ্ছা। তৃণমূল পর্যায়ে তরুন সমাজকে জাতীয়তাবাদী রাজনীতিতে উদ্বুদ্ধ করে উন্নয়ন ও উৎপাদনের মধ্যে যুক্ত করলে দেশ অগ্রগতির পথে এগিয়ে যাবে-এই চিন্তার ধারক-বাহক ব্যবহারিক প্রয়োগের মাধ্যমে তারেক রহমান সারাদেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ছুটে বেড়িয়েছেন। দেশের জনগোষ্ঠীর তৃণমূলে দীর্ঘদিনের অচলায়তন কাটিয়ে প্রাণসঞ্চার করেছিলেন তারেক রহমান। তৃণমূলে অনগ্রসর জনগোষ্ঠীকে স্বাবলম্বী করার জন্য তাঁর হাঁস মুরগী-ছাগল বিতরণ ও প্রতিবন্ধী মানুষদের কম্পিউটার বিতরণের কর্মসূচি ছিল যুগান্তকারী-যা আজও দেশবাসী ভুলে যায়নি। সমাজে পিছিয়ে পড়া মানুষকে আর্থিকভাবে স্বচ্ছল করতে পারলে তারা শিক্ষার প্রতি আগ্রহ ও জাতীয় উন্নয়নে অংশীদার হতে পারবে-এই বিশ্বাসেই তিনি উক্ত কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে দেশের সকল জনপদে ঘুরে বেড়িয়েছেন।

দেশাত্ববোধে জারিত হওয়া অপার সম্ভাবনাময় সেদিনের তারুণ্যদীপ্ত নেতার অভ্যূদয় দেশী-বিদেশী চক্রান্তকারীরা কখনোই মেনে নিতে পারেনি। তাই ১/১১-তে মঈনউদ্দিন-ফখরুদ্দিনের সরকার জনাব তারেক রহমানকে নি:শেষ করার জন্য মামলা, শারিরীক নির্যাতন ও ক্রমাগত কুৎসা রটনার ধারা বর্ষণ চালায়। কিন্তু তারপরও তাঁকে নীরব ও বিচলিত করা যায়নি, দুর্বল করা যায়নি তাঁর অটুট মনোবলকে। যাদের আন্দোলনের ফসল ছিল ১/১১ সরকার তারা ক্ষমতায় এসেই তারেক রহমানের বিরুদ্ধে নানামূখী চক্রান্তে আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে যায়। তাঁর নামে অসংখ্য মামলা দায়ের করে একের পর এক সাজা দিয়ে যাচ্ছে বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে। তবুও তারা তারেক রহমানকে দুর্বল করতে পারেনি। এখনও দু:শাসনের হুমকি প্রতিদিনই তাঁর ওপর বর্ষিত হচ্ছে, তারেক রহমানকে চক্রান্তজালে আটকাতে চলছে নিরন্তর বহুমূখী ষড়যন্ত্র। ক্ষমতা জবরদখলকারীরা অবিরাম কটুক্তি ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিয়ে গেলেও তারেক রহমানকে তাঁর বিশ্বাস ও আদর্শ থেকে বিন্দুমাত্র টলাতে পারেনি।

আওয়ামী লীগ সরকারের নির্যাতন, নিপীড়ন দূঃশাসনে দেশ আজ ধ্বংসের সর্বশেষ প্রান্তে উপনীত হয়েছে। দেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতা আজ হুমকির মূখে। বহুদলীয় গণতন্ত্রের শেষ চিহ্নটুকু মুছে ফেলে আবারও একদলীয় শাসনের নিষ্পেষণে সারাজাতিকে বন্দী করা হয়েছে। এই দু:সময়ে জনাব তারেক রহমানের নি:শংক মনোবল ও দৃঢ় নেতৃত্ব দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে উজ্জীবিত করছে। আমি তাঁর আশু সুস্থতা, সুখী ও দীর্ঘজীবন কামনা করছি।

এছাড়া সারাদেশে তারেক রহমানের জন্মদিন পালন করছে বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ড্যাবসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। দিবসটি উপলক্ষে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের কর্মসূচি ঘোষণা করছে বিএনপি। তার জন্মস্থান বগুড়া বিএনপির উদ্যোগেও ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।