আমাদের নেত্রী তাদের বেশির ভাগ দাবি মেনে নিয়েছেন : কাদের

প্রকাশিত: ২:৫৫ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৭, ২০১৮

আমাদের নেত্রী তাদের বেশির ভাগ দাবি মেনে নিয়েছেন : কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সংলাপে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট যেসব দাবি করেছে তার বেশিরভাগ মানতে সম্মত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তবে তাদের কিছু দাবি সংবিধানপরিপন্থি। সেগুলো মেনে নেওয়া সম্ভব হবে না। মানলে ওয়ান ইলেভেনের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে।

বুধবার  গণভবনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের সঙ্গে সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, তারা কিছু বিষয়ে নিশ্চয়তা চান, মেয়াদপূর্তির পর সংসদ ভেঙে দিয়ে পরবর্তীর তিন মাসের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলেছেন। এছাড়া তারা লেবেল প্লেয়িং ফিল্ডের এবং সেনা মোতায়েনর কথা বলেছেন। আমাদের নেত্রী তাদের বেশির ভাগ দাবি মেনে দিয়েছেন।

আওয়ামী লীগের শেখ সেলিম বলেছেন, আরো আলোচণার কথা বলছেন। নির্বাচনের তফসিল পেছানোর কথা বলেছেন ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। তবে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এটা ইসির ব্যাপার।

এর আগে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৪ দলীয় জোট ও যুক্তফ্রন্টের নেতাদের মধ্যে দ্বিতীয় দফা সংলাপ শুরু হয়েছে। বুধবার বেলা ১১টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে এই সংলাপ শুরু হয়।

গণভবনের সূত্রগুলো বলছে, সংলাপের শুরুতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশের প্রশংসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এদিকে সমঝোতার লক্ষ্যে ঐক্যফ্রন্টের নেতা ড. কামাল হোসেন বেশ কয়েকটি প্রস্তাব দিয়েছন। এর মধ্যে রয়েছে- যে কোনো মূল্যে খালেদা জিয়ার মুক্তি, নির্বাচনীকালীন সরকারে ঐক্যফ্রন্ট থেকে স্বরাষ্ট্রসহ চারমন্ত্রী, তফসিল ঘোষণা পেছানো এবং গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তি ও হয়রানি বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।

সংলাপে অংশ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৪ দলীয় জোটের প্রতিনিধি দল। প্রতিনিধি দলে রয়েছেন- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ওয়ার্কাস পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক, আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মণি, আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম, দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবাহান গোলাপ।

অন্যদিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ১১ সদস্যের প্রতিনিধি দল সংলাপে অংশ নিয়েছেন। প্রতিনিধি দলে রয়েছেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডির সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু, দলের কার্যকরী সভাপতি এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, দলের উপদেষ্টা এস এম আকরাম, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতা সুলতান মোহাম্মদ মনসুর।

এর আগে সকাল পৌনে ১০টায় ড. কামাল হোসেনের বেইলি রোডের বাসা থেকে বের হন ড. কামাল হোসেনসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ১১ সদস্যের প্রতিনিধি দল। পরে সাড়ে ১০টায় তারা গণভবনে পৌঁছান।

প্রসঙ্গত, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের পর বৃহস্পতিবার (১ নভেম্বর) গণভবনে প্রথম দফায় সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। ঐক্যফ্রন্টের ২০ জনের প্রতিনিধি দল ৭ দফা দাবি নিয়ে সংলাপে অংশ নেয়। আর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা।

অন্যদিকে নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা ও আসামিদের সংখ্যার তালিকা প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে দিয়েছে বিএনপি।

বুধবার বেলা ১১টায় ঐক্যফ্রন্ট-প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে দ্বিতীয় দফা বৈঠকের আগে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এ তালিকা তুলে দেয়া হয়।

বিএনপির সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, নির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, আইনজীবী অ্যাড. জিয়াউদ্দিন মোল্লা, চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শামসুদ্দিন দিদার, শরিফুল ইসলাম লিটন, মির্জা ফখরুলের দেয়া তালিকা প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা আব্দুল হামিদের হাতে মামলার সংখ্যা ও আসামিদের তালিকা তুলে দেন।

তাইফুল ইসলাম টিপু বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাওয়াতে তালিকে দেয়া হয়েছে। আজকে অাপতত ১০৪৬টি মামলার তালিকা দেয়া হয়েছে। বাকিগুলো আবারও দেয়া হবে।