বড়লেখায় শ্রমিকদের আটকে দেয়া অ্যাম্বুলেন্সে প্রাণ গেল নবজাতকের

প্রকাশিত: ১০:০৯ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৮, ২০১৮

বড়লেখায় শ্রমিকদের আটকে দেয়া অ্যাম্বুলেন্সে প্রাণ গেল নবজাতকের

মৌলভীবাজারের বড়লেখায় পরিবহন শ্রমিকদের আটকে দেয়া অ্যাম্বুলেন্সেই প্রাণ হারিয়েছে সাত দিন বয়সী এক কন্যা শিশু। তার স্বজনরা অসুস্থ অবস্থায় তাকে নিয়ে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসছিলেন। পথিমধ্যে উপজেলার চান্দগ্রাম এলাকায় শ্রমিকদের বাধায় আটকে পড়া অ্যাম্বুলেন্সেই মারা যায় শিশুটি। রোববার বেলা আড়াইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।  মৃত শিশুটি বড়লেখা সদর ইউনিয়নের আজমির গ্রামের কুটন মিয়ার মেয়ে।

শিশুর স্বজনদের অভিযোগ থেকে জানা গেছে, বড়লেখা উপজেলার সদর ইউনিয়নের অজমির গ্রামের কুটন মিয়ার সাতদিনের শিশুকন্যাকে অসুস্থ অবস্থায় রবিবার (২৮ অক্টোবর) সকালের দিকে বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালের চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য শিশুটিকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। শিশুর অভিভাবকরা অ্যাম্বুলেন্সে করে সকাল ১০টার দিকে শিশুটিকে নিয়ে সিলেটের উদ্দেশ্যে রওনা হন। যাওয়ার পথে বড়লেখা উপজেলার পুরাতন বড়লেখা বাজার, দাসেরবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে অ্যাম্বুলেন্সটি পরিবহন শ্রমিকদের বাধার মুখে পড়ে।

অ্যাম্বুলেন্সটি চান্দগ্রাম নামক স্থানে গেলে পরিবহন শ্রমিকরা গাড়ি আটকে চালককে মারধর করেন। প্রায় দেড়ঘন্টা এখানে অ্যাম্বুলেন্সটি আটকা থাকে। দুপুর দেড়টার দিকে গাড়ি ছাড়া পেলে শিশুটিকে পাশের সিলেট জেলার বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন বলে জানিয়েছে শিশুটির পরিবার।

মৃত শিশুর চাচা আকবর আলী ওরফে ফুলু মিয়া বলেন, ‘আমার ভাতিজী মায়ের দুধ টানের না। এজন্য তাকে বড়লেখা হাসপাতালে নিয়ে যাই। ডাক্তাররা তাকে সিলেট ওসমানীতে রেফার করেন। সাথে সাথে অ্যাম্বুলেন্স ডেকে সিলেট রওনা দিই। প্রথমে দাসেরবাজারে গাড়ি আটকে চালককে মারধর করছে। পরে অনুরোধ করলে গাড়ি ছাড়ে। চান্দগ্রামে আবার গাড়ি আটকে গাড়ির চাবি নিয়ে যায়। ৫০০ টাকা দাবি করে। প্রায় দেড়ঘন্টা এখানে আটকে ছিলাম। এখানে মেয়েটা মারা গেছে। বিয়ানীবাজার হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। পরে বড়লেখা থানায় গিয়ে অভিযোগ দিয়েছি।

সিএনজি পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন বড়লেখা উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন রবিবার সন্ধ্যায় বলেন, ‘সিএনজি শ্রমিকরা যেখানে যেখানে ব্যারিকেড দিয়েছিল। সকালেই তা তুলে দিয়েছি। অ্যাম্বুলেন্স আটকানোর সাথে কোনো সিএনজি শ্রমিক জড়িত না।

এ বিষয়ে বড়লেখা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জসীম বলেন, ‘একটি শিশু মারা যাওয়ার কথা লোকজন বলাবলি করছে। সিলেটে যাওয়ার পথে রাস্তায় আটকা পড়ে মারা গেছে। এরকম কথা উঠেছে। তবে কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট