‘গায়েবি’ মামলায় আগাম জামিন নিতে সুপ্রিমকোর্টে হাজারো মানুষ

প্রকাশিত: ৮:৫১ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৬, ২০১৮

‘গায়েবি’ মামলায় আগাম জামিন নিতে সুপ্রিমকোর্টে হাজারো মানুষ

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার বিএনপি কর্মী দিনমজুর আজগর আলী (৪৫)। একটি ইটভাটায় কাজ করেন তিনি। গত ১০ অক্টোবর পুলিশ বাদী হয়ে আজগর আলীসহ ৪৫ জনকে আসামি করে শ্যামনগর থানায় একটি মামলা করে। তিনি জানেন না, কী কারণে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। পরে জানলেন মামলাটি ছিল বিশেষ ক্ষমতা আইনে নাশকতার একটি মামলা। এরপর আগাম জামিনের জন্য হাইকোর্টের বারান্দায় গত দু’দিন ধরে ঘুরছেন।

অবশেষে সোমবার এ মামলায় তিনিসহ ৩৫ জন আসামি হাইকোর্ট থেকে ৮ সপ্তাহের আগাম জামিন পান।

সোমবার সারা দেশ থেকে সহস্রাধিক বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মী ‘গায়েবি’ মামলায় জামিন নিতে হাইকোর্টে আসেন। এদিন প্রায় দুই শতাধিক নেতাকর্মীর জামিন দেন হাইকোর্টের বিভিন্ন বেঞ্চ।

পিরোজপুর সদর উপজেলার বিএনপি নেতা সাইফুল ইসলাম কিসমত, জামায়াতের তোফাজ্জল হোসেন, জহির উদ্দিন, শেখ আব্দুর রাজ্জাক, আব্দুল ওয়াদুদ খান হাইকোর্টে আসেন জামিন নিতে। তাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, গত ১ অক্টোবর পুলিশ বাদী হয়ে বিএনপি-জামায়াতের ৩৬ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে পিরোজপুর সদর থানায় নাশকতার অভিযোগ এনে একটি গায়েবি মামলা করে। মামলায় যে ঘটনার কথা বলা হয়েছে সে ধরনের কোনো ঘটনা সেদিন ঘটেনি। হাইকোর্টের একটি বেঞ্চে সোমবার জামিন আবেদন করলে আদালত তাদের সবাইকে এক মাসের আগাম জামিন দেন।

অ্যাডভোকেট মাসুদ রানা বলেন, রাজধানীর শ্যামপুর, যাত্রাবাড়ী, পল্লবী থানার দায়ের করা পৃথক ৬টি মামলায় সোমবার অন্তত ২০ জনের জামিন হয়েছে। পুলিশ রিপোর্ট দেয়া পর্যন্ত তাদের জামিন মঞ্জুর করেন আদালত।

সিলেট থেকে আসা আছদ্দর মিয়া জানান, আমি সাধারণ বিএনপি কর্মী। নাশকতার মামলায় আমাকে পাঁচ নম্বর আসামি করা হয়েছে। ঘটনার দিন আমি ছিলাম আমার এক আত্মীয়ের বাড়িতে। অথচ আমাকে মিথ্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে।

বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য লায়লা বেগম সাংবাদিকদের জানান, গত সেপ্টেম্বরে শুধু পল্টন থানাতেই একে একে ৫টি মামলায় পুলিশ তাকে আসামি করেছে।

তার দাবি, মামলায় পুলিশের ওপর হামলার মতো যেসব ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে তার কোনটিই বাস্তবে ঘটেনি এবং তার নিজেরও উপস্থিত থাকার প্রশ্নই ওঠে না। প্রথমে মামলা ছিল একটা। পরে হলো আরও ৪টা। সবগুলো পল্টন থানায় এবং মামলাগুলো দায়ের হলো সেপ্টেম্বর মাসে অল্প কয়েক দিনের ব্যবধানে। মামলার অভিযোগগুলোও একই রকম।

এছাড়া দেশেরসিলেট, ভোলা, খুলনা, বাগেরহাট’সহ বিভিন্ন জেলার শত শত লোক জামিনের জন্য হাইকোর্টে ভিড় করেন।