দুর্গাপূজায় মেলা বসাতে নিষেধাজ্ঞা এসএমপির : আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে গণবিজ্ঞপ্তি

প্রকাশিত: ১১:৩৭ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৭, ২০১৮

দুর্গাপূজায় মেলা বসাতে নিষেধাজ্ঞা এসএমপির : আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে গণবিজ্ঞপ্তি

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজায় মণ্ডপ ঘিরে বা সড়কে মেলা বসানোর পাশাপাশি হাউজি, সার্কাস ও জুয়া খেলার আয়োজন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একই সঙ্গে সন্ধ্যার মধ্যে প্রতিমা বিসর্জনের সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া পূজা চলাকালে আতশবাজী এবং পটকা ফুটানোতেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

সিলেট মেট্রোপলিটন এলাকার সনাতন সম্প্রদায়ের দুর্গাপূজা উদ্যাপনের এবং সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের স্বার্থে সিলেট মহানগরী পুলিশ আইন-২০০৯ এর ধারা-১১১ এর প্রদত্ত ক্ষমতা বলে জারিকৃত গণ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। অত্র গণবিজ্ঞপ্তিটি শারদীয় দুর্গা পূজা শেষ না হওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।

এসএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মুহম্মদ আবদুল ওয়াহাব এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রেখে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য্যরে সাথে উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে শারদীয় দুর্গা পূজা অনুষ্ঠান উপভোগের স্বার্থে নগরবাসীর সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

আগামি ১৫/১০/২০১৮খ্রিঃ তারিখ হতে দেশব্যাপী হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুষ্ঠান সার্বজনীন শারদীয় দুর্গা পূজা উদ্যাপিত হবে। শারদীয় দুর্গা পূজা ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য্যরে সাথে উদযাপনের লক্ষে নিম্নে বর্ণিত নির্দেশনাসমূহ অনুসরণের জন্য সকলকে অনুরোধ করা যাচ্ছে।

১. পূজামন্ডপে দুস্কৃতকারী কর্তৃক প্রতিমা ভাংচুর/পূজার উপকরণাদি চুরি/নাশকতামূলক কর্মকান্ড রোধকল্পে প্রয়োজনীয় সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক মোতায়েন করতঃ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং এরূপ ঘটনা ঘটলে দ্রুততম সময়ে আইন-শৃংখলা বাহিনীর সহায়তা চাওয়া।
২. প্রতিটি পূজামন্ডপে পূজা উদযাপন কমিটি কর্তৃক পর্যাপ্ত আলো, স্ট্যান্ডবাই জেনারেটর/হ্যাজাক লাইট, নিরাপদ খাবার পানি ও স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট এর ব্যবস্থা রাখা।
৩. পূজা উদযাপন কমিটি কর্তৃক পূজা মন্ডপে শৃঙ্খলা রক্ষার্থে নারী ও পুরুষের জন্য পৃথক পৃথক প্রবেশ ও প্রস্থান পথের ব্যবস্থা করা।
৪. নারী দর্শনার্থীদের দেহ তল্লাশীর জন্য পর্যাপ্ত নারী স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা।
৫. গুরুত্বপূর্ণ পূজা মন্ডপ ও প্রতিমা বিসর্জনের স্থানে প্রয়োজনীয় সংখ্যক সিসি টিভি স্থাপন/ভিডিও রেকর্ডিং এর ব্যবস্থা করা।
৬. মন্ডপে Hand-held metal detector এর মাধ্যমে স্বেচ্ছাসেবক কর্তৃক তল্লাশীর ব্যবস্থা করা।
৭. পূজা উপলক্ষে কোন ধরণের মেলা, হাউজি, সার্কাস, জুয়া খেলার আয়োজন না করা।
৮. পূজা চলাকালীন সময়ে আতশবাজী এবং পটকা ফুটানো হতে বিরত থাকা।
৯. পূজা চলাকালীন সময়ে পূজা মন্ডপ এলাকায় এবং রাস্তায় যানজট নিরসনকল্পে প্রয়োজনীয় স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা।
১০. পূজা মন্ডপে অধিক রাত পর্যন্ত উচ্চস্বরে মাইক বা বাদ্যযন্ত্র না বাজানো।
১১. বিদ্যুৎ এবং পানি সরবরাহ নিশ্চিতকল্পে পূজা কমিটি কর্তৃক পূর্বেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে সমন্বয় করা।
১২. বিসর্জনের পূর্বে শোভাযাত্রার রুট নির্ধারণ করা এবং কোনভাবেই শোভাযাত্রার রুট পরিবর্তন না করা।
১৩. প্রতিমা নিয়ে শহর প্রদক্ষিণ না করে নির্ধারিত রুটে বিসর্জনের স্থানে পৌছাঁনো।
১৪. সন্ধ্যার পূর্বেই প্রতিমা বিসর্জন সম্পন্ন করা।
১৫. পূজা উদযাপন কমিটি কর্তৃক প্রতিমা বিসর্জনের স্থানে মাইক ও পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
১৬. যে সব স্থানে পূজা মন্ডপের প্রতিমা বিলম্বে বিসর্জন দেয়া হয় সেক্ষেত্রে স্থানীয়ভাবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
১৭. প্রতিমা বিসর্জনের পর লোকজন বিসর্জন স্থান হতে প্রস্থান না করা পর্যন্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
১৮. নিজ নিজ অধিক্ষেত্রের স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, পূজা কমিটি, জনগণ এবং কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রমের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে সম্পৃক্ত করা।
১৯. পূজা মন্ডপে ঋরৎব ঊীঃরহমঁরংযবৎ স্থাপন করা এবং প্রয়োজনে ফায়ার সার্ভিসের কন্ট্রোল রুমের (নম্বর ০১৭৩০-৩৩৬৬৪৪) সাথে যোগাযোগ করা।
২০. নিরাপত্তাকর্মী/স্বেচ্ছাসেবকদের আলাদা পোশাক বা দৃশ্যমান পরিচয়পত্র ও স্বেচ্ছাসেবক লিখিত আর্মড ব্যান্ড পরিহিত থাকা।
২১. দলগতভাবে মোটর সাইকেল চালিয়ে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি বা যান চলাচলের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করা ।
২২. পূজা মন্ডপের আশেপাশে কোন ফেরিওয়ালা, বাদাম, চানাচুর বিক্রেতা বা ছদ্মবেশী কোন হকার, অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টি হতে সতর্ক থাকা।
২৩. পূজা মন্ডপে ব্যাগ, থলে, পোটলা, সুটকেস, টিফিন ক্যারিয়ার বা এ জাতীয় কোন বস্তু বহনকে নিরুৎসাহিত করা।
২৪. পূজা শুরু হওয়ার পূর্বেই পূজা কমিটি কর্তৃক মাইক ও বাদ্যযন্ত্র ব্যবহারের ক্ষেত্রে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশুনা এবং অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুভূতির (আযান, নামাজ) প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে সকলকে উদ্বুদ্ধ করা।
২৫. শারদীয় দুর্গা পূজা আয়োজক কর্তৃপক্ষকে নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক/নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ করে অনুষ্ঠানস্থলের সার্বিক শৃঙ্খলা রক্ষা ও অনাকাক্সিক্ষত ব্যক্তি/বস্তু সম্পর্কে সজাগ দৃষ্টি রাখার অনুরোধ করা হল। প্রয়োজনে নিয়োজিত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা নিন।

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট