দেশের সব অর্জনই সাধারণ মানুষের : প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ২:০২ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১, ২০১৮

দেশের সব অর্জনই সাধারণ মানুষের : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের সব অর্জনই সাধারণ মানুষের, সব ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে আরো এগিয়ে যেতে হবে। সোমবার সকালে জাতিসংঘ সফর শেষে গণভবনে দলীয় নেতাকর্মীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় সফরে অনেক সম্মান পেয়েছেন বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেছেন, ‌‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে বলেই আজ আত্মমর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত দেশ। তবে ষড়যন্ত্র এখনও শেষ হয়নি, এটা মাথায় রেখেই চলতে হবে। আত্মতুষ্টিতে থাকা যাবে না, আত্মতুষ্টি মানেই পতন।’

রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দানে মানবিক ও দায়িত্বশীল নীতির জন্য ‘ইন্টারন্যাশনাল অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড’ ও ‘২০১৮ স্পেশাল ডিস্টিংকশন অ্যাওয়ার্ড ফর আউটস্ট্যান্ডিক অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড’ পাওয়ায় তাকে এ সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

এসব অর্জন জনগণের প্রতি উৎসর্গ করেন শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার যত অর্জন তা বাংলাদেশের জনগণের দান, সুযোগ দিয়েছে বলেই এত সাফল্য। বিশ্বনেতাদের দেওয়া এ সম্মান বাংলাদেশের সম্মান, পুরস্কার বাংলাদেশের মানুষদের উৎসর্গ করলাম।’

দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, প্রতিপক্ষকে সব সময় শক্তিশালী মনে করেই চলতে হবে। দলের সাফল্য সব জায়গায় তুলে ধরতে হবে।

এবারের সফর ফলপ্রসূ হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বঙ্গবন্ধুর খুনিকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে সে দেশের সরকার আন্তরিক।

এ সময় ভোটের অধিকার কেবল আওয়ামী লীগই প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে বলেও মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।

এর আগে প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটটি সোমবার সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম জানান, ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের একটি বিমানে নিউইয়র্ক থেকে স্থানীয় সময় রবিবার সকাল সোয়া ৭টার দিকে লন্ডনের হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছেন প্রধানমন্ত্রী। যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার নাজমুল কাওনাইন বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানান। তিনি এখানে কয়েক ঘণ্টা যাত্রাবিরতির পর সন্ধ্যায় দেশের উদ্দেশে লন্ডন ত্যাগ করেন।

বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের বিমানটি স্থানীয় সময় শনিবার রাত ৮টা ২০ মিনিটে যুক্তরাষ্ট্রের জনএফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লন্ডনের উদ্দেশে রওনা দেয়। যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন এবং জাতিসংঘে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানান।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৩তম অধিবেশনে যোগদানের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২১ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন।

গত ২৭ সেপ্টেম্বর তিনি জাতিসংঘ সদরদফতরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৩তম অধিবেশনে বাংলায় ভাষণ দেন এবং জাতিসংঘ মহাসচিব এন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে বৈঠক করেন।

প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের পাশাপাশি নেদারল্যান্ডসের রানী ম্যাক্সিমা, এস্তোনিয়ার প্রেসিডেন্ট ক্রেস্টি কালজুলেইদ এবং যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেইও-এর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। শেখ হাসিনা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেয়া সংবর্ধনা সভায়ও যোগদেন।

প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা সঙ্কট, সাইবার নিরাপত্তা, শান্তিরক্ষা কার্যক্রম, নারীর ক্ষমতায়ন, নারী শিক্ষা এবং বৈশ্বিক মাদকদ্রব্য সমস্যা নিয়ে কয়েকটি উচ্চপর্যায়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এ ছাড়া তিনি ইউএস চেম্বার অব কমার্স আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজ ও গোলটেবিল বৈঠকে যোগদেন।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন চলাকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা ইন্টার প্রেস সার্ভিস (আইপিএস) প্রদত্ত সম্মানজনক ‘ইন্টারন্যাশনাল এ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করেন। মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তচ্যুত ১০ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা নাগরিককে আশ্রয়দানের মাধ্যমে মানবিকতার উদাহরণ সৃষ্টি করায় তাকে এই পদকে ভূষিত করা হয়।

পাশাপাশি, দূরদৃষ্টির মাধ্যমে রোহিঙ্গা সঙ্কট মোকাবেলার জন্য গ্লোবাল হোপ কোয়ালিশন-এর পরিচালনা পর্ষদ তাকে ‘২০১৮ স্পেশাল রিকগনাইজেশন ফর আউটস্ট্যান্ডিং লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড-এ ভূষিত করে।

শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী বাংলাদেশিদের আয়োজিত সংবর্ধনায় যোগ দেন।