ঢাবি ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতিকে পেটালেন বর্তমান সভাপতি

প্রকাশিত: ১:৩৬ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১৮

ঢাবি ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতিকে পেটালেন বর্তমান সভাপতি

লিফটে ওঠা নিয়ে কথা কাটাকাটির জের ধরে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি রুহুল আমিনকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাসের বিরুদ্ধে।

গতকাল বুধবার রাত ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) নতুন ভবনে এ ঘটনা ঘটে। এতে রুহুল আমিন ছাড়াও দুইজন আহত হয়েছেন। তাদের ঢামেক হাসপাতালেই ভর্তি করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রুহুল আমিনের বড়ভাই ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুর রহিমের শাশুড়ি ঢাকা মেডিকেলে মারা গেলে মরদেহ নিতে আসেন রুহুল আমিন, আব্দুর রহিম, তার স্ত্রী ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রানা। সে সময় লিফটে চড়ছিলেন ঢাবি ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস ও তার বড় ভাই এবং ভাবি। তাদের সঙ্গে সঞ্জিতের কয়েকজন অনুসারীও লিফটে ঢোকেন।

তখন রুহুল আমিন লিফট থেকে সঞ্জিতের অনুসারীদের কয়েকজনকে নেমে তাদেরও ওঠার সুযোগ দেওয়ার অনুরোধ করেন। বিষয়টি নিয়ে সঞ্জিতের ভাইয়ের সঙ্গে রুহুলের কথা কাটাকাটি হয়।

কথা কাটাকাটির ঘটনার ৪০ মিনিট পর ঢাবি ছাত্রলীগের বিভিন্ন হলের শতাধিক নেতাকর্মী ঢামেকের নতুন ভবনের ৮ তলায় উঠে রুহুল আমিনকে বেধড়ক মারধর শুরু করেন। মারতে মারতে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা রুহুলকে ৮ তলা থেকে দ্বিতীয় তলায় নিয়ে আসেন। এ সময় হাসপাতালে আসা রোগী ও দর্শণার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।

একই সময় তারা ওই এলাকায় থাকা ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসা ও ঢাকা কলেজ শাখার ছাত্রলীগ কর্মী কাজী শাওন ও মমিনুর রহমান রকিকেও মারধর করেন। শাওন আলিয়া মাদ্রাসার ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ও মমিনুর ঢাকা কলেজের ২০১২-১৩ সেশনের ম্যানেজমেন্টের শিক্ষার্থী।

এ বিষয়ে কথা হলে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি রুহুল আমিন আমাদের সময়কে বলেন, ‘বড় ভাইয়ের সামনে ছোট ভাইকে মারধর কতটা হৃদয়বিদারক। তারা দুই ঘণ্টা যাবত আমার খালার মরদেহ আটকে রেখেছিল। এটা মেনে নেওয়া যায় না। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিতের ২০-২৫ জন অনুসারীরা আমাকে মারধর করেছে।’

রুহুল আমিন আরও বলেন, ‘সঞ্জিত নিজেই আমাকে মারতে মারতে ৮ তলা থেকে নিচে নিয়ে আসে। মারার পাশাপাশি আমাকে শিবির বলে অপবাদ দিতে থাকে। যতক্ষণ পর্যন্ত এর বিচার না হবে ততক্ষণ আমি খাব না, কেউ যদি আমাকে জোর করে তবে আমি আত্মহত্যা করব। এই কমিটির দ্বারা আমি যে অপমানের শিকার হয়েছি তা হাজার বার জন্ম নিলেও ভুলব না।’

এ বিষয়ে ঢাবির শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস বলেন, ‘রুহুল আমিন আমার ভাই ও ভাবিকে ধাক্কা দিয়েছিলেন। আমার ভাই পরিচয় দেওয়ার পরও গালি দেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কর্মীরা যায়। আমি তাদের নিয়ে ক্যাম্পাসে চলে আসি।’

ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘এটা অত্যন্ত দুখঃজনক। একজন সিনিয়র নেতা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ও একটা হলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তিনি। তার ওপর এ রকম হামলা অবশ্যই নিন্দনীয় ও ন্যাক্কারজনক। আমরা ওনাকে বলেছি লিখিত অভিযোগ দিতে। আমরা তদন্ত করে এটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো।