বরিশালে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল সভাপতির বিরুদ্ধে ঝাড়ু মিছিল

প্রকাশিত: ২:৫২ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ২১, ২০১৮

বরিশালে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল সভাপতির বিরুদ্ধে ঝাড়ু মিছিল
ছাত্রদলের ঘোষিত কমিটি নিয়ে নিজ দলে দ্বন্দ্ব প্রকট আকার ধারণ করেছে। রবিবার রাতে ঐ কমিটি ঘোষণার পর বরিশাল জেলা ও মহানগর বিএনপির কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা। সোমবার দলীয় কার্যালয়ের সামনে পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা ও তাদের অনুসারীরা বিক্ষোভ মিছিল করেন। এক পর্যায়ে তারা কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিব আহসানের ছবি সংবলিত পোস্টার টানিয়ে তাতে ঝাড়ু পেটা ও ঝাড়ু মিছিল করেন।
সকালে বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করা জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুর রহমান মুন্না, অপর যুগ্ম আহবায়ক সাইফুল ইসলাম সুজন জানান, ২০১১ সালে ছাত্রদলের কমিটি গঠন হওয়ার পর সেই কমিটিতে আমি যুগ্ম আহ্বায়ক পদে ছিলাম। তখন থেকেই ছাত্রদলকে একত্রিত রাখতে নানা আন্দোলন সংগ্রামে অংশগ্রহণ করি এবং দলের জন্য কাজ করছি। রবিবার রাতে একটি পকেট কমিটি গঠন করা হয়েছে। যেটা মেনে নেয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। জেলা ও মহানগর ছাত্রদলে অযোগ্য লোকজনদের নিয়ে কমিটি গঠিত হয়েছে। যারা কোনো দলীয় কর্মকাণ্ডের জন্য কোনো মামলার শিকার হয়নি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, মহানগর ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম জনি, অহিদুল ইসলাম রুবেলসহ ছাত্রদল নেতাকর্মীরা। অপরদিকে বিকালেও বিক্ষোভ করেছেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। সদ্য ঘোষিত জেলা ছাত্রদলের কমিটিতে সাংগঠনিক সম্পাদক পদ পাওয়া সোহেল রাঢ়ী তার পদ প্রত্যাখানের কথা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, নেতা মজিবর রহমান সরওয়ার (বিএনপি’র কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও বরিশাল মহানগর সভাপতি) স্বৈরাচারী এরশাদের রূপ ধারণ করেছেন। ফলে মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে রাজপথে নেমে প্রতিবাদ করছেন। পাশাপাশি বিএনপির কার্যালয় তালাবদ্ধ করে দিয়েছেন। মাঠপর্যায়ের ত্যাগী নেতাকর্মীরা নবগঠিত পকেট কমিটি বাতিল করে তৃণমূল পর্যায়ের মতামতের ভিত্তিতে নতুন কমিটি গঠন করার আহ্বান করেছেন।
কমিটিতে পদবঞ্চিত জেলা ছাত্রদলের নেতা সাইফুল ইসলাম সুজন ও মহানগরের যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াসির আরাফাত মিন্টু বলেন, কমিটি কিভাবে কাদের দিয়ে দেয়া হয়েছে সে বিষয়ে কিছুই বুঝতে পারছি না। দলের হয়ে যারা রাজপথে থেকে মামলা-হামলার শিকার হয়েছেন তারা কমিটিতে নেই। কামরুল নামের একজনকে জেলা কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক পদ দেয়া হয়েছে, সে কোথা থেকে আসলো তা কেউ বলতে পারছে না। তার বাড়ি কাজীরচরে অর্থাৎ রাজীব আহসানের বাড়ির পাশে এটুকুই শুধু জানি।
এদিকে জানা গেছে, মহানগর ছাত্রদলের কমিটি নিয়ে তেমন কোনো ধুম্রজাল সৃষ্টি না হলেও বেশি আলোচিত হচ্ছে জেলা ছাত্রদলের কমিটি। জেলা কমিটিতে যাদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে তাদের ছাত্রত্ব নেই। ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের দাবি, এরা দুইজন আদু ভাই নামে পরিচিত বরিশালে।
প্রসঙ্গতঃ দীর্ঘ ৭ বছর পর বরিশাল জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের কমিটি গঠন করা হয়েছে। রবিবার রাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি রাজীব আহসান এবং সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। বরিশাল মহানগর ছাত্রদলের কমিটিতে সভাপতি হয়েছেন রেজাউল করিম রনি, সিনিয়র সহ-সভাপতি তরিকুল ইসলাম তরিক, সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন হুমায়ন কবির ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন মাহামুদ হাসান তানজিল।
এছাড়া সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছে এনামুল হাসান তসলিমকে। অপরদিকে বরিশাল জেলা ছাত্রদলের কমিটিতে সভাপতি হয়েছেন মাহফুজুল আলম মিঠু, সিনিয়র সহ-সভাপতি হয়েছেন তারেক আল ইমরান, সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন কামরুল হাসান ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন তৌফিকুল ইসলাম ইমরান। এছাড়া সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছে সোহেল রাঢ়ীকে।