শহীদুল আলম ও আটক হওয়া সব শিক্ষার্থীকে মুক্তি দেয়ার দাবি নোবেলজয়ীদের

প্রকাশিত: ২:১২ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৯, ২০১৮

শহীদুল আলম ও আটক হওয়া সব শিক্ষার্থীকে মুক্তি দেয়ার দাবি নোবেলজয়ীদের

ডেসমন্ড টুটু এবং তাওয়াক্কুল কারমানসহ ১১ জন নোবেল বিজয়ী সেইসঙ্গে এবং বিশ্বের ১৭ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব আলোকচিত্রী ড. শহীদুল আলমের অবিলম্বে ও বিনা শর্তে মুক্তির দাবিতে একটি বিবৃতিতে সই করেছেন।

এছাড়া নিরাপদ সড়কে দাবিতে বিক্ষোভের জেরে যেসব শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে তাদেরও অবিলম্বে মুক্তি দেয়ার কথা জানান তারা। খবর বিবিসির।

এ সময় তারা বাংলাদেশের সরকারের প্রতি সকল নাগরিকের মানবাধিকার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান। প্রতিবাদ জানানো ১১ নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্তদের মধ্যে ১০ জনই শান্তিতে পদক পেয়েছেন।

এছাড়া বিশিষ্ট অপর ১৭ ব্যক্তিত্বের মধ্যে রয়েছেন নরওয়ের সাবেক প্রধানমন্ত্রী গ্রো হারলেম ব্রান্টল্যান্ড, অভিনেত্রী ও অ্যাকটিভিস্ট শাবানা আজমি, শ্যারন স্টোন, চলচ্চিত্র পরিচালক রিচার্ড কার্টিস।

ওই বিবৃতিতে জানানো হয়, ড. শহীদুল আলমকে বিতর্কিত আইসিটি অ্যাক্টের আওতায় যে পুলিশি রিমান্ডে নেয়া হয়েছে এর বিরুদ্ধে আমারা যৌথভাবে আওয়াজ তুলেছি।

‘আমরা বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই তারা যেন বেআইনি গ্রেপ্তারের অভিযোগ তদন্ত করে দেখে এবং ড. শহীদুল আলমকে অবিলম্বে এবং নিঃশর্তে মুক্তি দেয়’।

তারা সরকারের প্রতি বিক্ষোভের পর গ্রেপ্তার হওয়া সব শিক্ষার্থীকে মুক্তিরও দাবি জানায়। সম্প্রতি বাস চাপায় দুই স্কুল শিক্ষার্থীর নিহতের ঘটনায় প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় নেমে আসেন স্কুল শিক্ষার্থীরা।

এ নিয়ে বিশ্ব গণমাধ্যমে অনেক বিশ্বাসযোগ্য প্রতিবেদন প্রচারিত হয়েছে উল্লেখ করে ওই বিবৃতিতে বলা হয় যে, তরুণ আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশের উপস্থিতিতেই আক্রমণ চালিয়েছে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন।

সাংবাদিক ও ফটোগ্রাফার যারা এই বিক্ষোভের খবর প্রকাশে পেশাগত দায়িত্বে মাঠে নেমেছিলেন তাদের ওপর হামলার নিন্দা জানানো হয় ওই বিবৃতিতে। গণমাধ্যমের বরাতে বিবৃতি বলা হয়, স্কুল শিক্ষার্থীদের দাবির সমর্থনে কয়েকদিন পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে এলে, তাদেরকেও বিভিন্ন মামলার অধীনে গ্রেপ্তার করা হয়।

৫ই অগাস্ট সন্ধ্যায় আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাতিসম্পন্ন ফটোগ্রাফার ড. শহীদুল আলমকে তার বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যান আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

সেখানে শহীদুল আলমকে বাংলাদেশের জার্নালিস্টিক ফটোগ্রাফি আন্দোলনের নেতা সেইসঙ্গে একজন একাডেমিক ও মানবাধিকার কর্মী হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

গত সপ্তাহে তাকে ঢাকা অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের সামনে হাজির করা হয়, যেখানে গোয়েন্দা পুলিশ দশ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।

চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি(আইসিটি) আইনের ২০০৬ এর ৫৭ ধারার অধীন তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

যে আইনটি ব্যাপকভাবে ব্যাপকভাবে সমালোচিত, এমনকি সরকারও স্বীকার করেছে যে এটার সংস্কার প্রয়োজন বলে বিবৃতিতে উঠে আসে।

বিবৃতি বলা হয়, শহিদুল আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগ যে তিনি শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলার ছবি তুলেছেন এবং একটি আন্তর্জাতিক টেলিভিশন চ্যানেলে দেয়া সাক্ষাতকারে স্বাধীনভাবে তার মত প্রকাশ করেছেন।

তাকে আটকের ৭দিনের মাথায় মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের আদেশে ১২ই অগাস্ট শহীদুল আলমকে তার আইনজীবীর উপস্থিতি ছাড়াই কারাগারে পাঠানো হয়।

সে সময় গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয় যে, বেশ কয়েকজন ছাত্রকে পুলিশ হেফাজতে নির্যাতন করা হচ্ছে, রিমান্ডের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের হয়রানি ও ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে।

যেখানে কিনা তরুণ ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন যারা সহিংসতা চালিয়েছিল তারা মুক্তভাবে ঘোরাফেরা করছে বলে বিবৃতি অভিযোগ করা হয়েছে।