২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১:৪২ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৪, ২০১৮
কুষ্টিয়ায় আদালত প্রাঙ্গনে মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলার ঘটনা আপিল বিভাগের নজরে এনেছে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতি।আপিল বিভাগ এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছে বলে জানিয়েছেন সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দ।
গত রবিবার কুষ্টিয়ায় মানহানির এক মামলায় জামিন নিতে গিয়ে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের হামলার শিকার হন আমার দেশের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।
রবিবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে কয়েকজন আইনজীবীর সহযোগিতায় মাহমুদুর রহমান গাড়ি থেকে বের হন। বিকেল পৌনে ৫টার দিকে আদালত প্রাঙ্গণ থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে মাহমুদুর রহমান ও তার সহযোগীরা যশোর হয়ে বিমানে ঢাকায় ফিরেন।
রাতে তাকে রাজধানীর গুলশানে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, উনার মাথায় আঘাত অত্যন্ত গুরুতর, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। তাকে আইসিইউতে (গভীর পর্যবেক্ষণে) রাখা হয়েছে।
জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিককে কটূক্তির অভিযোগে কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ইয়াসির আরাফাত তুষারের করা মামলায় জামিন নিতে কুষ্টিয়ার আদালতে গিয়েছিলেন মাহমুদুর।
রবিবার বেলা ১২টায় কুষ্টিয়ার মুখ্য বিচারিক হাকিম এম এম মোর্শেদের আদালতে জামিন পাওয়ার পর বের হওয়ার সময় বাইরে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা অবস্থান নিলে আদালত চত্বরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন তিনি। বেশ কয়েক ঘণ্টা আদালত ভবনে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন মাহমুদুর রহমান। ওই সময় তার সঙ্গে কুষ্টিয়া জেলা বিএনপি সভাপতি সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমীসহ কয়েকজন আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।
এক পর্যায়ে আদালতের এজলাসে আশ্রয় নেন মাহমুদুর রহমান। দীর্ঘ সময় একই পরিবেশ বিরাজ করায় তিনি আদালতকে বিষয়টি জানান এবং লিখিতভাবে পুলিশি নিরাপত্তার জন্য আবেদন করেন। দীর্ঘ ৪ ঘন্টা ১৫ মিনিট পর মাহমুদুর রহমান বের হয়ে একটি প্রাইভেটকার যোগে রওনা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হামলা শুরু হয়।
কয়েকজন আইনজীবীর সহায়তায় ওই গাড়ি থেকে পুনরায় আদালত ভবনে নিয়ে আসার আগেই রক্তাক্ত হয়েছে মাহমুদুর রহমানের শরীর। তখন আদালত প্রাঙ্গনের অবস্থা ছিল থমথমে।
হামলার পর মাহমুদুর রহমান বলেন, ৬৫ বছর বয়স আমার, আমি বাংলাদেশের জন্য জীবন দিবো, ওরা তো দিল্লির কুকুর, আমার দেশের জন্য আমি একা জীবন দিবো। পা চাঁটো গিয়া দিল্লির। আমার দেশের জন্য জীবন দিবো, ইসলামের জন্য জীবন দিবো
পরে বিকেলে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে পুলিশ পাহারায় আদালত চত্বর ছাড়তে দেখা যায়।
প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে যশোর বিমানবন্দরে থেকে বিমানযোগে ঢাকায় ফিরেন দৈনিক আমার দেশে পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।
এর আগে গাড়ি ভাঙচুরের সময় হামলাকারীরা ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিচ্ছিল। ওই সময় হামলাকারীরা বঙ্গবন্ধুকে কটূক্তি করার জন্য মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান ও গালিগালাজ করতে থাকে। ঘটনার সময় পুরো আদালত প্রাঙ্গণে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। হামলাকারীরা প্রথমে গাড়িটির সব কাঁচ ভেঙে ফেলে। পরে ভাঙা কাঁচের ভেতর দিয়ে লাঠি ও ইট পাটকেল দিয়ে আঘাত করে। ওই আঘাতে আহত হন মাহমুদুর রহমান।
হামলার পর পুলিশের উদ্দেশ্য মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘পুলিশ পাহারা দিয়ে আমার ওপর হামলা করালো। মরে যাব তবুও আমার সংগ্রাম চলবে।’
মাহমুদুরের সঙ্গে থাকা বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (একাংশ) মহাসচিব এম আব্দুল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, ‘অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে বেলা সাড়ে ৪টার দিকে তিনি বের হওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশের উপস্থিতিতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়ে তাকে রক্তাক্ত জখম করে। এসময় তার গাড়িও ভাংচুর করা হয়।’
সাংবাদিক নেতা এম আবদুল্লাহ আরো জানান, শুনানি শুরু হওয়ার আগ থেকেই ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা লাঠিসোটা নিয়ে আদালত ভবন ঘেরাও করে থাকে। এ সময় মাহমুদুর রহমান কয়েকবার আদালত ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পুলিশের সেল্টারে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীরা লাঠিসোটা নিয়ে আদালত প্রাঙ্গণ ঘেরাও করে রাখে। এ ব্যাপারে বার বার কুষ্টিয়ার এসপিসহ পুলিশ কর্মকর্তাদের সহযোগিতা চেয়েও ব্যর্থ হন সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।
আব্দুল্লাহ বলেন, আমরা এ পরিস্থিতি ম্যাজিস্ট্রেটকে জানালে, তিনি আমাদেরকে তার কক্ষে বসতে দিয়েছেন। আমরা দীর্ঘক্ষণ ম্যাজিস্ট্রেটের কক্ষে বসে ছিলাম। বেলা পৌনে ৫টার দিকে আদালত কক্ষ ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে যাওয়ার সময় ছাত্রলীগ অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়।
আদালত পুলিশের পরিদর্শক মনিরুজ্জামান বলেন, ‘বেলা সাড়ে ৪টার দিকে তিনি সেখান থেকে বের হয়ে গাড়িতে করে যাওয়ার সময় কে বা কারা গাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। এ সময় ভাঙা কাচ লেগে তিনি রক্তাক্ত জখম হন।’
আদালতের এপিপি সাজ্জাদ হোসেন সেনা জানান, মাহমুদুর এ মামলায় উচ্চ আদালত থেকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে ছিলেন। রবিবার স্থায়ী জামিনের জন্য নিম্ন আদালতে হাজির হয়ে জামিন নেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার নাতনি টিউলিপকে নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগে কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইয়াসিন আরাফাত তুষার কুষ্টিয়ায় মানহানির মামলা দায়ের করেন।
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
Office : Central Market (1st floor),
Bandar Bazar (Court Point),
Sylhet – 3100, Bangladesh.
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D