আফরিন জয়ের পর এবার মানবিজে অভিযানের অঙ্গীকার এরদোগানের

প্রকাশিত: ৬:৪৯ অপরাহ্ণ, মার্চ ২০, ২০১৮

আফরিন জয়ের পর এবার মানবিজে অভিযানের অঙ্গীকার এরদোগানের

আঙ্কারা : সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় আফরিন অঞ্চলে তুরস্ক তার চলমান অভিযান আরো পূর্ব দিকে অর্থাৎ মানবিজের দিকে সম্প্রসারিত করার অঙ্গীকার করেছে। ওই এলাকাটিতেই ঘাঁটি গেড়ে অবস্থান করছে যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্যরা।

মঙ্গলবার দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান অভিযান সম্প্রসারিত করার তুর্কি এই পরিকল্পনার ঘোষণা দেন।

কার্যত কোনো ধরনের বাধা ছাড়াই তুরস্কের নেতৃত্বাধীন বাহিনী উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সিরিয়ায় আফরিন শহরে প্রবেশ করার এক দিন পরেই এই ঘোষণা এলো।

তুর্কি নেতা বলেন, ‘মানবিজ, আঈন আল-আরব, তাল আবায়েদ, রাশ আল-আয়ন এবং কামিশলি সহ এই করিডোরটি সম্পূর্ণরূপে সন্ত্রাসীমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আমরা আমাদের অভিযান অব্যাহত রাখব।’

ইরাকের উত্তরাঞ্চলে পিকেকে যোদ্ধাদের উপস্থিতির কথা উল্লেখ করে এরদোগান তার ভাষণে বলেন, বাগদাদ যদি তাদের অঞ্চলটিকে সন্ত্রাসীমুক্ত না করে, সেই ক্ষেত্রে তুরস্ক সেখানেও কুর্দি যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালাবে।

সিরিয়ায় ফ্রি সিরিয়ান আর্মির (এফএসএ) বিদ্রোহীদের সঙ্গে নিয়ে তুর্কি বাহিনীর সদস্যরা গত জানুয়ারি থেকে তুরস্কের সীমান্ত অঞ্চল সিরিয়ার আফরিনে যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত কুর্দি পিপলস প্রোটেকশন ইউনিট (ওয়াইপিজি) যোদ্ধাদের হটিয়ে দিতে সামরিক অভিযান শুরু করে। অঞ্চলটিকে তুরস্ক একটি ‘সন্ত্রাসী করিডোর’ হিসেবে আখ্যায়িত করে থাকে।

কুর্দি নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলটির আরো পূর্ব দিকে তুরস্কের সামরিক অভিযান সম্প্রসারণের ফলে ন্যাটোর জোটের মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্যবাহিনীর সঙ্গে তুর্কি বাহিনীর মুখোমুখি হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। ওয়াইপিজি-আধিপত্য বাহিনীর পাশাপাশি এখানে যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্য বাহিনীরও ঘাঁটি রয়েছে।

সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেট ইরাক এবং লেভান্ট (আইএসআইএল) বিরুদ্ধে ওয়াশিংটনের প্রধান সহযোগির ভূমিকা পালন করছে ওয়াইপিজি। তাদের এই অংশীদারিত্ব তুরস্ককে উদ্বিগ্ন করেছে।

মার্কিন সমালোচনা
পেন্টাগনের মুখপাত্র মার্কিন সেনা কর্নেল রব ম্যানিং সোমবার একটি প্রেস ব্রিফিংয়ে আফরিনে তুরস্কের অপারেশনের সমালোচনা করেছে।

তিনি বলেন, ‘আইএসআইএলকে পরাজিত করার প্রচেষ্টায় আফরিনের যুদ্ধের প্রভাব নিয়ে আমরা খুবই চিন্তিত।’

এদিকে, তুর্কি প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র ইব্রাহিম কালিন আল জাজিরাকে বলেন, মানবিজ নিয়ে আঙ্কারা ও ওয়াশিংটন একটি সাধারণ ঐকমত্যে পৌঁছেছে এবং চুক্তিটি বাস্তবায়নের জন্য তুরস্ক এখন ন্যাটোর এই সহযোগী দেশটির কাছ থেকে সাড়া পাবার অপেক্ষায় আছে।

তুরস্ক মনে করে যে ওয়াইপিজি কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) একটি বর্ধিত অংশ। তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে পিকেকে তুরস্কের দক্ষিণপূর্বাঞ্চলীয় কুর্দিশ অঞ্চলে ভয়াবহ বিদ্রোহ সৃষ্টি করে চলেছে।

গত জানুয়ারি থেকে সিরিয়ার বিদ্রোহী দল কুর্দি মিলিশিয়াদের বিরুদ্ধে ‘অলিভ ব্রাঞ্চ’ নামে অভিযান শুরু করেছে তুরস্ক সেনাবাহিনী। সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় আফরিন থেকে কুর্দিস পিপলস প্রটেকশন ইউনিটকে (ওয়াইপিজি) বিতাড়িত করতে স্থল ও আকাশ পথে অভিযান শুরু করে তুর্কি বাহিনী।

সূত্র: আল জাজিরা